শান্তিনিকেতন: ভোটের আগে সরকারি প্রকল্পের প্রচারে তৃণমূল প্রভাবিত শিক্ষক সংগঠন। শান্তিনিকেতনে প্রচারে গিয়ে প্রশ্নের মুখে শিক্ষকরা। শিক্ষকদের নিয়ে রাজনীতি তৃণমূলের, খোঁচা বিজেপির। বিরোধীদের অপপ্রচারের জবাব দিতে প্রচার, পাল্টা জবাব তৃণমূলের।

একুশের বিধানসভা ভোটের আগে, ‘দুয়ারে দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে এই কর্মসূচি। তার আগে বীরভূমে কর্মসূচির প্রচার করতে দেখা গেল তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠনকে। তবে, শান্তিনিকেতনের পিয়ারসন পল্লিতে মানুষের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে কার্যত বিড়ম্বনার মুখে পড়েন বীরভূম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি। সরকারি পরিষেবা নিয়ে স্থানীয়দের একাংশের প্রশ্নের মুখে পড়েন তৃণমূল প্রভাবিত শিক্ষক সংগঠনের সদস্যরা।

শান্তিনিকেতনের বাসিন্দা আদরী কর্মকার বলছেন, ‘যারা প্রকৃত গরিব, তারা কিছু পায় না। সরকারি কোনও পরিষেবা পাইনি। আমাদের এখানে জলও নেই।’

যদিও, সরকারি পরিষেবা নিয়ে এলাকাবাসীর অভিযোগ মানতে নারাজ তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠন। বীরভূম প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি প্রলয় নায়েক বলেছেন, ‘রাজ্যের যে ৬৭টি প্রকল্প কারা পাচ্ছে, কারা পাননি তার খোঁজ নিতে বেরিয়েছি। যাঁরা অভিযোগ করছেন, দেখা যাবে তাঁদের বাড়িতে কোনও সরকারি প্রকল্পের সুবিধা মিলেছে।’

শিক্ষকদের সরকারি কর্মসূচির প্রচারে নামানো নিয়ে সুর চড়িয়েছে বিজেপি। বিজেপির সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয় বলেছেন, ‘শিক্ষকরা তো এ রাজ্যে খুশি নয় যে, বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রশংসা করবেন। কারণ ওঁরা সবচেয়ে কম বেতন পান।‘

সরকারি কর্মসূচির প্রচার নিয়ে শিক্ষকদের একাংশকে নিশানা করছে বাম-কংগ্রেস। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, ‘কোনও শিক্ষক ব্যক্তিগতভাবে রাজনীতি করতেই পারেন। কিন্তু সরকারের থেকে মাইনে পান পড়ানোর জন্য। অনুরোধ করব মন দিয়ে পড়ান। কিন্তু না পড়িয়ে প্রচার করতে গেলে মানুষ কিন্তু এরপর ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখাবে।’

কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘এটা শিক্ষকদের কাজ নাকি? স্কুল-কলেজে পড়ানো ওদের কাজ। সরকার মাইনে দেয় বলে প্রচার করতে বলে নাকি!’ তবে বীরভূমে যে শিক্ষকরা এদিন দুয়ারে দুয়ারে সরকার কর্মসূচির প্রচারে নেমেছিলেন, তাঁরা এর মধ্যে অন্যায়ের কিছু দেখছেন না। বীরভূমের তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠনের সভাপতি প্রলয় নায়েক বলেছেন, ‘আমাদের কাজ মানুষকে শিক্ষা দেওয়া। সেই হিসেবে তৃণমূলের হয়েই বোঝাচ্ছি। বিরোধীরা ঠাণ্ডা ঘরে বসে এসব বলছে।’

সরকারি প্রকল্পের সাফল্য-প্রচার অভিযানের নেতৃত্বে যিনি, সেই জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতির একটি পোস্ট ঘিরে গত বছর বিস্তর জলঘোলা হয়। অনুব্রত মণ্ডলের পায়ের নীচে বসে থাকতে দেখা যায় প্রলয় নায়েককে। তাঁকেই প্রচারের সামনের সারিতে রাখা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক।