কলকাতা: ২২ জানুয়ারি দল থেকে বহিষ্কৃত হয়েছিলেন। এর কয়েকদিনের মধ্যেই গেরুয়া শিবিরে সামিল হচ্ছেন হাওড়ার বালির বিধায়ক বৈশালী ডালমিয়া। এমনটাই খবর সূত্রের।   রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার দিন তৃণমূল তাঁকে বহিষ্কার করেছিল। এবার তিনি বিজেপিতে যোগ দিতে চলেছেন বলেই সূত্রের খবর। বৈশালী বলেছেন, আমি তৃণমূল ছাড়িনি। তৃণমূলই আমায় ছেড়েছে।

বৈশালী আরও বলেছেন, বিজেপি যোগদান নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত তিনি এখনও নেননি। নিলে অবশ্যই জানাবেন। তিনি বলেছেন,  পরিষেবা দিতে না পারলে কেন সরকারে থাকব? তৃণমূলে সৎ নেতাদের মূল্য নেই।  ভোটে দাঁড়ালে বালি থেকেই দাঁড়াব।

পাল্টা তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেছেন, বৈশালীর কোনও রাজনৈতিক মূল্য নেই। তৃণমূলের কটাক্ষ, তাদের দলে থেকেই কোনও কাজ করেননি বৈশালী। অন্য দলে গিয়ে কী করবেন!

হাওড়ার দুই তৃণমূল বিধায়ক লক্ষ্মীরতন শুক্লা ও রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় মন্ত্রীত্ব ছাড়ার পর একাধিকবার তৃণমূলেরই একাংশের বিরুদ্ধে সরব হন জগমোহন ডালমিয়ার মেয়ে বৈশালী। তিনি বলেছিলেন, দল উইপোকায় ভরে গিয়েছে।

এরপরই বালির বিধায়ককে দল থেকে বহিষ্কার করে তৃণমূল।এই প্রেক্ষাপটেই বৈশালীর বিজেপিতে যোগদানের জল্পনা জোরাল হয়েছে।

যদিও, বৈশালী বিজেপিতে গেলে তৃণমূলের কোনও ক্ষতিই হবে না, বলে দাবি করছে রাজ্যের শাসক দল।

১৯ ডিসেম্বর মেদিনীপুরে অমিত শাহ-র সভায় শুভেন্দু অধিকারী-সহ ১০ জন বিধায়ক বিজেপিতে যোগ দেন। তাঁদের মধ্যে শুভেন্দু-সহ ৬ জনই ছিলেন তৃণমূলের। এই প্রেক্ষাপটে শনিবার ফের বাংলায় আসছেন অমিত শাহ। রবিবার সভা করবেন হাওড়ায়। আর এই সভা ঘিরেই তৃণমূলে ফের ভাঙনের জল্পনা শুরু হয়েছে।

বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি মুকুল রায়ের দাবি, ৩১ জানুয়ারি অমিতের সভায় হাওড়ার বহু প্রথিতযশা  নেতা যোগ দেবেন।শুভেন্দু অধিকারীও দাবি করেছেন,   ডুমুরজলার সভাতে অনেকে যোগ দেবেন

এই নেতাদের মধ্যে বৈশালীও থাকতে পারেন বলে সূত্রের খবর।

রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইস্তফার প্রতিক্রিয়ায় বৈশালী বলেছিলেন যে, "রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিত্ব ত্যাগে আমাদের অনেকটাই ক্ষতি হয়ে গেল। সেটা শুধু দলের ক্ষতি নয়, সাধারণ মানুষের জন্যও ক্ষতি হল। এইরকম একজন দায়িত্ববান মন্ত্রী যে দল ছাড়লেন সেটা বিরাট চিন্তা ও দুঃখের বিষয়। সত্যি কাজ করা অসুবিধা হচ্ছে। প্রত্যেকে যেমন দলকে ভালবাসে তেমন নিজের আত্মমর্যাদাও রয়েছে। যাঁদের আত্মমর্যাদা রয়েছে তাঁরা কোনও সময় অপমান নিতে পারেন না।" রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইস্তফা প্রসঙ্গে তৃণমূল বৈশালী ডালমিয়া নাম না করে মন্ত্রী অরূপ রায়কে আক্রমণ করেন। তিনি বলেন, 'সবার প্রতি তাচ্ছিল্য ভাব প্রকাশ করেন উনি। মন্ত্রিত্ব একটা আলঙ্কারিক পোস্ট। জনগণ সেটা দেয়নি। কিন্তু জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমরা সবাই সমান।' এরপরই শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে বৈশালীকে বহিষ্কার করে তৃণমূল।