শক্তিগড়: কয়লা মাফিয়া রাজু ঝার খুনের নেপথ্য়ে কয়লাই, এমনটাই মনে করছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, টেন্ডার জমা দিয়ে বরাত পাওয়ার পরও কয়লা তুলতে লেভি দিতে হত। এই লেভিই কয়লা মাফিয়ার কাছে পরিচিত ছিল গুন্ডা ট্য়াক্স নামে। সম্প্রতি এই লেভির সর্বময়কর্তা হয়ে উঠেছিলেন রাজু ঝা, খবর পুলিশ সূত্রে। রাজুর আমলে টন পিছু কয়লা তোলায় লেভির রেট ১৫০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছিল ৬০০ টাকা। পুলিশের অনুমান, রাজুর বিরুদ্ধে গোষ্ঠী তৈরি হয়েছিল। খুনের নেপথ্য়ে সেটাই অন্যতম কারণ, দাবি পুলিশের। পুলিশের অনুমান, আসানসোল-দুর্গাপুরেই ছড়িয়ে এই হত্য়ারহস্য়ের জাল। 


এখনও অধরা আততায়ীরা: রাজু ঝা খুনের পর চারদিন পার। এখনও অধরা আততায়ীরা। তবে, তদন্তে কিছুটা দিশা দেখিয়ে দ্বিতীয়বার ফরেন্সিক পরীক্ষার পর উদ্ধার আততায়ীদের ব্যালেনো গাড়ির আসল ইঞ্জিন ও চেসিস নম্বর। পুলিশ সূত্রে দাবি, ব্যালেনো গাড়িটি ভিনরাজ্যের। শনিবার, সন্ধে ৬টা ২০ নাগাদ রাজু ঝা-র গাড়ি পানাগড় টোলপ্লাজা পেরনোর পরেই এই নীল ব্যালেনো গাড়িও টোলপ্লাজা পেরোয়। এই সময়ের এক্স ক্লুসিভ ছবি এসেছে এবিপি আনন্দের হাতে। গাড়ির মধ্যেই ছিল আততায়ীরা, খবর পুলিশ সূত্রে। 


শনি থেকে মঙ্গল, কয়লা মাফিয়া রাজু ঝা খুনের পর চারদিন কেটে গেলেও এখনও আততায়ীরা অধরা। খুনের মোটিভও এখনও স্পষ্ট নয় তদন্তকারীদের কাছে। এরইমধ্যে শক্তিগড়ে হত্যাস্থল ঘুরে দেখলেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা। আততায়ীদের ব্যালেনো গাড়িটিকেও এদিন পরীক্ষা করেন তাঁরা। 


কয়লা মাফিয়া রাজু ওরফে রাজেশ ঝা খুনের পর ৪ দিন পার হয়েছে। কিন্তু এখনও অন্ধকারে পুলিশ। মেলেনি আততায়ীদের নাগাল। কী কারণে খুন হলেন কয়লা মাফিয়া, তা এখনও স্পষ্ট নয়। এর মধ্যেই মঙ্গলবার, শক্তিগড়ে হত্যাস্থল ঘুরে দেখলেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা। ঘটনাস্থল ঘুরে দেখার পর, শক্তিগড় থানায় যান তাঁরা। এখানেই রাখা রয়েছে, আততাতীদের ব্যালেনো গাড়িটি। সেটিকে পরীক্ষা করে দেখা হয়।


সূত্রের দাবি, রাজু খুনের আততায়ীদের পরিকল্পনা এতটাই নিখুঁত ছিল যে, ব্যালেনো গাড়িটির ইঞ্জিন এবং চেসিস নম্বর নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, গাড়িতে যে ৫টি নম্বর প্লেট উদ্ধার হয়েছে তার মধ্যে ৪টির রেজিস্ট্রেশন অন্য কোনও ব্যালেনো গাড়ির নামে। তাহলে, রাজু-খুনে আততায়ী যে ব্যালেনো গাড়ি ব্যবহার করেছিল, তার আসল মালিক কে? আসল নম্বরই বা কী? তা খুঁজে বের করতে, এদিন গাড়িটি পরীক্ষা করা হয়।


মতামত নেওয়া হয়েছে গাড়ির প্রস্তুতকারী সংস্থার কর্মী এবং অটোমোবাইল এক্সপার্টদের। সূত্রের দাবি, আসল নাম খুঁজে পেলে, ব্যাক ক্যালকুলেশনের মাধ্য়মে আততায়ীদের খুঁজে রহস্য ভেদের চেষ্টা করা হবে। এর পাশাপাশি আততায়ী ও মাস্টারমাইন্ডের খোঁজ পেতে মোবাইল সার্ভিস প্রোভাইডারের কাছে রাজু ঝার মোবাইল ফোনের কল রেকর্ড চেয়ে পাঠানো হয়েছে।


আততায়ীদের খোঁজে ভিনরাজ্যেরও গেছিল পুলিশ। কিন্তু, তাঁদের ফিরতে হয়েছে খালি হাতে। এর মধ্যেই এদিন দিঘার কর্মিসভা থেকে বিজেপিকে নিশানা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই চাপানউতোরের মধ্যেই তদন্তকারীদের অনুমান,কয়লা মাফিয়া খুনে অত্যতম কারণ লুকিয়ে রয়েছে কয়লা খনির কালো অন্ধকারের মধ্যেই।


দিল্লি থেকে চুরি যাওয়া গাড়ি ব্যবহার করে খুন শক্তিগড়ে: পাটুলির বাসিন্দার বিক্রি করা গাড়ির নম্বর ব্যবহার করা হয় দিল্লি থেকে চুরি যাওয়া গাড়িতে। শক্তিগড়ে কয়লা মাফিয়া রাজু ঝা খুনে আরও ঘণীভূত রহস্য। দ্বিতীয়বার ফরেন্সিক পরীক্ষার পর উদ্ধার হয় আততায়ীদের ব্যালেনো গাড়ির আসল ইঞ্জিন ও চেসিস নম্বর। সেই সূত্র ধরে পুলিশ জানতে পেরেছে, গাড়ির আসল মালিক হরিয়ানা গুরগাঁওয়ের বাসিন্দা। গত জানুয়ারি মাসে, ওই ব্যক্তি, থানায় অভিযোগ করেন দিল্লি জনকপুরী থেকে তাঁর গাড়িটি চুরি হয়ে যায়। সেই তদন্তে নামে 
দিল্লি পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চ।