নয়াদিল্লি: শরীরে মারকারি ইঞ্জেকশন ঢুকিয়ে মেরে ফেলার চেষ্টা করেছিলেন স্বামী ! মৃত্যুর আগে শিউরে ওঠা বয়ান গৃহবধূর। প্রায় ৯ মাস আগে ধরে জীবন যুদ্ধের পর অবশেষে সেই পারদের বিষক্রিয়ায় মৃত্যু হল বেঙ্গালুরুর বিদ্যার।
'বিষ কিডনি সহ একাধিক অঙ্গে প্রবেশ করেছে..'
তিনি পুলিশকে অভিযোগ জানিয়েছিলেন যে, স্বামী এবং তাঁর শ্বশুর তাঁকে হত্যা করার জন্য তাঁর শরীরে ওই পারদ ইঞ্জেকশন ঢুকিয়েছেন। পারদের বিষক্রিয়া হাসপাতালের চিকিৎসকরা সনাক্ত করেছেন। কারণ তাঁর শরীরে যে নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাব টেস্টে পাঠানো হয়েছিল, তা আদতেই পারদ।চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ওই বিষ কিডনি সহ একাধিক অঙ্গে প্রবেশ করেছে। অস্ত্রোপচারেও শেষ রক্ষা হয়নি। হাসপাতালে গিয়েও গত ৯ মাসের যাবতীয় লড়াই শেষ হল এই নভেম্বরে।
পাগল বলেও কটুক্তি করত, ঘরে আটকে রাখত !
মৃত্যুর আগে দেওয়া ওই গৃহবধূর বয়ান অনুযায়ী, স্বামী বাসবরাজ এবং শ্বশুর দিনের পর দিন তার উপর নির্যাতন চালিয়েছেন। চূড়ান্ত অপমান ও অবহেলা সহ্য করতে হয়েছে তাঁকে। এখানেই শেষ নয়, স্বামী তাঁকে পাগল বলেও কটুক্তি করত। ঘরে আটকে রাখত ! আত্মীয়দের সঙ্গেও দেখা করতে দিত না। বিদ্যা ও বাসবরাজের একটি চার বছরের সন্তানও রয়েছে।
সেদিন ছিল শিবরাত্রি, তিনি ঘুমোতে গিয়েছিলেন, ঘুম ভাঙে তীব্র ব্যথা নিয়ে..
বিদ্যা জানিয়েছেন, ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, সেদিন ছিল শিবরাত্রি। অন্যান্য দিনের মতোই রাতে তিনি ঘুমোতে গিয়েছিলেন। কিন্তু ঘুম ভাঙে তীব্র ব্যথা নিয়ে। যা শরীরে কেবল কোনও ইঞ্জেকশন ফোঁটালেই হয়। এরপর দ্রুতই স্বাস্থ্যের অবনতি হতে শুরু হয়। ৭ মার্চ তিনি সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে ।যান। সেখান থেকে বিদ্যাকে অক্সফোর্ড হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। পুলিশকে দেওয়া বিদ্যার বয়ান অনুযায়ী, সেখানে স্পষ্ট অভিযোগ জানানো হয়েছে এই যে, তার স্বামী এবং শ্বশুর খুন করার জন্যই বিদ্যার শরীরে ওই পারদ ইঞ্জেকশন প্রবেশ করিয়েছিলেন।
৯ মাসের লড়াই শেষ
যদিও শেষপর্যন্ত বিদ্যাকে দীর্ঘ সময় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রেখেও শেষ রক্ষা হয়নি। ততদিনে দীর্ঘ ৯ মাসের লড়াই ফুরিয়ে এসেছে। তীব্র যন্ত্রণা নিয়েই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছেন বেঙ্গালুরুর ওই গৃহবধূ। ইতিমধ্যেই এই ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। কেন এমন নৃশংস ঘটনা ঘটল, তা নিয়ে পুরোপুরিভাবে তদন্ত শুরু করেছে।