বিশ্বনাথ (অসম) : 'সব ধর্ম, জাত ও ভাষাভাষীর মানুষকে একে অপরের বিরুদ্ধে উস্কে দিয়ে সমাজে ঘৃণা ছড়িয়ে দিচ্ছে বিজেপি ও আরএসএস। যাতে মানুষের নজর ঘুরিয়ে দেওয়া যায়।' অসমের রাজগড়ের সভা থেকে এমনই তোপ দাগলেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গাঁধী।


এদিন সভা থেকে বেকারত্ব ইস্যু থেকে শুরু করে চাষিদের শস্যের সঠিক দাম না পাওয়ার মতো বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন রাহুল। তিনি বলেন, "আমরা 'ভারত জোড়ো যাত্রায়' লক্ষ লক্ষ মানুষের সঙ্গে দেখা করেছি। যুবকরা বেকারত্ব সমস্যা তুলে ধরেছেন, কৃষকরা বলেছেন তাঁরা ফসলের ন্যায্য মূল্য পান না। তাই আপনাদের কথা আবার একবার শুনতে আমরা 'ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা' শুরু করেছি। এখানে ছাত্র-ছাত্রীরা লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে স্কুল-কলেজ যাচ্ছেন। কিন্তু, পরে তাঁরা জানতে পারছেন, অসমে চাকরি পাওয়া যাবে না। কৃষকরা ফসলের সঠিক দাম পান না। নোটবন্দি ও জিএসটি-র জেরে ছোট দোকানদাররা শেষ হয়ে গেছেন। গোটা দেশের সরকারটা চলছে কিছু নির্দিষ্ট শিল্পপতির জন্য।"  


ফের একবার একহাত নেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মাকে। রাহুল বলেন, "ভারতের সবথেকে দুর্নীতিগ্রস্ত মুখ্যমন্ত্রী কে ? অসম তথা গোটা দেশের মানুষ উত্তরটা জানেন, হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। যাঁরা আমাদের হুমকি দিচ্ছেন তাঁদের জেনে রাখা দরকার, এটা রাহুল গাঁধীর যাত্রা নয়। এটা অসমের মানুষের যাত্রা। রাহুল গাঁধী ও অসমের মানুষ মুখ্যমন্ত্রীকে ভয় পান না। ওরা যা চায় তা করতে পারে।" 


অরুণাচল প্রদেশে এক রাত কাটানোর পর রবিবার অসমে প্রবেশ করে যাত্রা। বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার দুপুর পর্যন্ত চলে অসমের প্রথম দফার যাত্রা। পরে তা চলে যায় অরুণাচল প্রদেশে। যাত্রা চলাকালীন মহাত্মা গাঁধীর মূর্তিতে ফুল নিবেদন করে শ্রদ্ধা জানান কংগ্রেস সাংসদ। স্বাধীনতা সংগ্রামী শহিদ কনকলতা ও মুকুন্দ কাকতিকেও শ্রদ্ধার্ঘ্য জানান। রবিবার অসমের বিশ্বনাথ জেলায় রাহুলের ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রাকে কিছুক্ষণের জন্য থামিয়ে রাখে পুলিশ। যদিও পুলিশ ও কংগ্রেস কর্মীদের মধ্যে আলোচনার পর, যাত্রা পুনরায় শুরু হয়।


এদিকে অসমে ন্য়ায় যাত্রার মাঝেই রাহুলের বাস ঘিরে বিক্ষোভ দেখানো হয়। কংগ্রেস নেতাদের গাড়িতে হামলার অভিযোগ ওঠে বিজেপির বিরুদ্ধে। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে, বাস থামিয়ে বিক্ষোভকারীদের দিকে এগিয়ে যান রাহুল। অসমের কালিয়াবরের সভায় যোগ দিতে যাওয়ার পথে এই ঘটনা ঘটে বলে কংগ্রেসের অভিযোগ। এক্স হ্যান্ডলে একাধিক ভিডিও পোস্ট করে তারা অভিযোগ তুলেছে, যাত্রার মাঝপথে রাহুলের বাস ঘিরে বিক্ষোভ দেখানোই শুধু নয়, রাজ্যসভার সাংসদ জয়রাম রমেশের গাড়িতে হামলা চালায় বিজেপির কর্মীরা। মারধর করা হয় অসম প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ভূপেন বরাকেও!


কংগ্রেসের দাবি, অসমের মুখ্য়মন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি নিয়ে সরব হওয়ার জন্যই এদিন পরিকল্পিত হামলা চলে। এরপর সন্ধেয় অসমের নগাঁও জেলার আমবাকান এলাকায় ফের রাহুল গাঁধীকে লক্ষ্য করে 'গো ব্যাক' স্লোগান তোলেন বিজেপি কর্মীরা।