সমীরন পাল,উত্তর ২৪ পরগনা:  ভোট মিটতেই বন্ধ হল ভাটপাড়ার রিলায়েন্স জুটমিল। কর্মহীন প্রায় সাড়ে ৪ হাজার শ্রমিক। মিলের গেটে সাসপেনশন অফ ওয়ার্কের নোটিসকে কেন্দ্র করে ধুন্ধুমার। মিলের আশপাশে শ্রমিক ইউনিয়নের অফিস ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেন উত্তেজিত শ্রমিকরা। এরপর মিল খোলার দাবিতে ঘোষপাড়া রোড অবরোধ করেন তাঁরা। বেশ কিছুক্ষণ অবরুদ্ধ থাকে রাস্তা। পরে অবরোধ উঠে যায়। 


শ্রমিকদের দাবি, ভোটের পর আজ থেকে রিলায়েন্স জুটমিল খোলার কথা ছিল। শ্রমিকরা কাজে গিয়ে দেখেন গেটে সাসপেনশন অফ ওয়ার্কের নোটিস ঝুলছে। এরপরই উত্তেজনা ছড়ায়। ঘটনাস্থলে দমকলের একটি ইঞ্জিন। মিল কর্তৃপক্ষের প্রতিক্রিয়া এখনও মেলেনি।


উল্লেখ্য, বিগত কয়েকদিনে বেশ কয়েকটি জুট মিল বন্ধ হওয়ার খবর মিলেছে। এর আগে একটি প্রতিবেদনে জানা গিয়েছিল যে,  করোনার থাবা রাজ্যের চট শিল্পেও প্রভাব ফেলতে চলেছে। সেইসঙ্গে কাঁচা মালের যোগানে ঘাটতি জনিত পরিস্থিতিতে কিছু ইউনিট বন্ধ করে দিতে হতে পারে বলে আশঙ্কায় রয়েছেন চলকল মালিকরা। এরমধ্যে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ধাক্কা তাঁদের উদ্বেগ আরও বাড়াতে পারে বলে জানিয়েছে একটি শিল্প সংগঠন।


বজবজ জুটমিল ইতিমধ্যেই সাসপেনশন অফ ওয়ার্কের নোটিশ ঘোষণা করেছে। কাঁচামালের যোগানে টানের কারণ জনিত সমস্যার কারণেই এই নোটিশ  কর্তৃপক্ষ দিয়েছে বলে তারা জানিয়েছে।


ইন্ডিয়ান জুট মিল অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান রাঘব গুপ্তা সংবাদসংস্থাকে বলেছেন, সামগ্রিকভাবে ৫-৭ লক্ষ বেল পাটের ঘাটতি রয়েছে এবং দাম প্রতি কুইন্টালে আট হাজার টাকার বেশি। এই পরিস্থিতিতে ভোট-পরবর্তী সময়ে উৎপাদনে ছাঁটাই ও বিভিন্ন মিল ঝাঁপ পড়ার আশঙ্কা ভালোমতোই রয়েছে।


নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিল্প সংগঠনের এক প্রাক্তন চেয়ারম্যান বলেছেন, কাঁচামালের দাম প্রচুর বেড়ে গিয়েছে। এই দামের সঙ্গে সাজুয্য রেখে উৎপাদন চালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে অক্ষমতা ও সেইসঙ্গে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা আচমকা বৃদ্ধি সমগ্র পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে পারে। ফলে রাজ্যে ৬০ টি জুটমিলের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ বন্ধ হয়ে যেতে পারে।


তিনি বলেছেন, পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে। কাঁচা মাল যোগানের বন্দোবস্ত করতে সরকার কড়া পদক্ষেপ না নিলে বহু ইউনিটেই ক্লোজার নোটিশ ঝুলতে পারে।