কলকাতা: নভেম্বরের শুরুতে রাজ্যে এসেছিলেন অমিত শাহ। আরক এখন মাস-শেষ প্রায়। এখনও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সেই সফর ঘিরেই সরগরম বাংলার রাজনীতির আঙিনা। একের পর এক বিষয় নিয়ে রাজ্যের শাসকদল আক্রমণ শাণাচ্ছে গেরুয়া শিবিরের বিরুদ্ধে।
বাঁকুড়া সফরে গিয়ে মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, আদিবাসী পরিবারের তৈরি খাবার নয়, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সেদিন ফাইভ স্টার হোটেল থেকে ভাত এনে দলিতের বাড়িতে খেয়েছেন! শাহের বাঁকুড়া সফরকে লোকদেখানো, ফটো অপ বলেও কটাক্ষ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
এখানেই শেষ নয়, ফোকাসে আবার সেই বিভীষণ হাঁসদার পরিবার। অমিত শাহর মধ্যাহ্নভোজের পর থেকেই রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছে চতুর্ডিহি গ্রামের গরিব পরিবারটি। কে  দায়িত্ব নিল তাঁর মেয়ের চিকিৎসার? তাই নিয়েই অব্যাহত তরজা।


বিভীষণ হাঁসদার মেয়ে রচনা ডায়াবিটিসে আক্রান্ত। নিয়মিত ইনসুলিন দিতে হয় ক্লাস টুয়েলভের ছাত্রীকে। গরিব ঘরের মেয়েটার চিকিৎসার দায়িত্ব কে নেবে, তা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনীতি! অমিত শাহ চলে যাওয়ার দু’দিনের মধ্যেই বিভীষণ হাঁসদার বাড়িতে পৌঁছে যায় তৃণমূলের লোকজন। চাল-ডাল-টাকা দিয়ে সাহায্য করা হয় তাঁদের। পরের দিনই সেখানে পৌঁছে যান বাঁকুড়ার বিজেপি সাংসদ সুভাষ সরকার। সেদিনই বিভীষণ হাঁসদার মেয়ের চিকিৎসার খরচ চালানোর আশ্বাস দেওয়া হয় বিজেপির পক্ষ থেকে। এবার মুখ্যমন্ত্রী জানালেন স্কুল ছাত্রীর চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছে রাজ্য সরকার। প্রথমে বিজেপি, তারপর মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাস। কিন্তু আদতে কীভাবে চিকিৎসা চলছে রচনার?

সেটা জানতে গিয়ে ধরা পড়ল একেবারে অন্যচিত্র। কার্যত হাঁসদা পরিবার এত রাজনৈতিক চাপানউতোরের মাঝে আছে সেই তিমিরেই। বিভীষণের দাবি, 'বাঁকুড়া মেডিক্যালে চিকিৎসা করাচ্ছি। স্বাস্থ্য দফতর থেকে ওষুধপত্র, ইঞ্জেকশন দিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু আমরা নিজেরা... ইনঞ্জেকশন দিতে পারি না, তাই ওগুলি কাজে লাগেনি। আমি পেনের মাধ্যমে ইনসুলিন দিই।'

তাহলে যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাঁর বাড়িতে অন্নগ্রহণ করলেন, তাঁর দল কী করল? 'ডাক্তারবাবু (সুভাষ সরকার) তো বলে গিয়েছিলেন এইমসে নিয়ে যাবেন, কিন্তু এখনও পর্যন্ত কিছু হয়নি', আক্ষেপ বিভীষণের।

বিজেপির অবশ্য এখনও দাবি তারা প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবে। বিজেপি সাংসদ সুভাষ সরকার জানান, 'মুখ্যমন্ত্রী জানেনই না ওঁর মেয়ের কী রোগ। আমরা তো এইমসে নিয়ে যাবই। '