পটনা: বিহারের এবারের বিধানসভা নির্বাচনই তাঁর শেষ ভোট বলে জানিয়ে দিলেন নীতীশ কুমার। বিহার বিধানসভার তৃতীয় দফার ভোটগ্রহণের প্রচারের শেষদিন ছিল বৃহস্পতিবার। এক নির্বাচনী জনসভায় যার শেষ ভাল, তার সব ভাল বলেও মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জনসভায় হাজির লোকজনের উদ্দেশে বলেন, জেনে নিন, আজ ভোটপ্রচারের শেষদিন। পরশুই ভোটগ্রহণ। আর এটা আমারও শেষ নির্বাচন। শেষটা যদি ভাল হয়, তবে সব ভাল।
ভাষণে সংখ্যালঘু ভোটারদের কাছে পৌঁছনোর প্রয়াস হিসাবে মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের মনে করিয়ে দেন, তাঁর সরকার মাদ্রাসা শিক্ষকদের বেতন বাড়িয়েছে। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) নিয়ে সংখ্যালঘুদের আশ্বস্ত করতে চান নীতীশ। বলেন, তিনি ভালবাসা, প্রেম, ভ্রাতৃত্ববোধ ছড়ানোর চেষ্টা করেছেন। সিএএ-বিরোধী বিক্ষোভে একসময় উত্তাল হয়ে ওঠা এলাকার মানুষকে ভরসা দিয়ে তিনি কারও দেশ থেকে কাউকে বের করে দেওয়ার ক্ষমতা নেই বলেও মন্তব্য করেন।
৭ নভেম্বর এই দফায় ভোটগ্রহণ হবে ৭৮টি আসনে। কেন্দ্রগুলির বেশিরভাগই মুসলিম অধ্যুষিত সীমাঞ্চল ও উত্তরপূর্ব বিহারে। কিষাণগঞ্জের জনসভায় নীতীশের বক্তব্যকে খুবই তাত্পর্য্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। সম্প্রতি কাটিহারে ভোটপ্রচারে এসে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ‘অনুপ্রবেশকারীদের ঘাড়ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়ার’ যে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, নীতীশের বক্তব্যে তা খন্ডন করা হয়েছে বলে অভিমত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের।
আদিত্যনাথ বলেছিলেন, কোনও অনুপ্রবেশকারী ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢোকার চেষ্টা করলেই সরকার তাকে দেশের বাইরে বের করে দেবে। কংগ্রেস-আরজেডি বিহারে ক্ষমতায় এলে রাজ্যে শাহিনবাগের মতো অশান্তি ছড়াবে বলেও অভিমত জানান তিনি। কিন্তু নীতীশ নাম না করে আদিত্যনাথের বক্তব্যকে ‘ফালতু কথা’ বলে উড়িয়ে দেন। বলেন, এমন কথা কে বলছে? কিছু লোক প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে। কে কাকে দেশ থেকে বের করবে? কারও কাউকে বের করে দেওয়ার অধিকারই নেই। কারণ ভারত প্রত্যেকের। আমরা সবসময় ঐক্য়, সম্প্রীতের বাতাবরণ তৈরি করেছি, সবাইকে একজোট রাখার চেষ্টা করেছি। কিন্তু এসব লোকের বিভাজন ছড়ানো ছাড়া আর কোনও কাজ নেই।
সকলে শান্তি, সম্প্রীতিতে থাকলেই সমাজ এগিয়ে চলে।