পটনা : এককথায়, তারুণ্যের উত্থান। তরুণ নেতা হিসাবে বিহারের রাজনীতিতে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করলেন লোক জনশক্তি পার্টির (রাম বিলাস) প্রধান চিরাগ পাসওয়ান। এখনও পর্যন্ত ২০২৫ বিধানসভা নির্বাচনের গণনা অনুযায়ী, বিপুল জনাদেশ পেয়ে ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন করতে চলেছে নীতীশ কুমার-নেতৃত্বাধীন NDA। নীতীশ-মোদি জুটি কার্যত বাজিমাত করতে চলেছে। তা সত্ত্বেও, এবারের ভোট বিহারের রাজনীতিতে চিরাগ পাসওয়ানের নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার ভোটও হতে চলেছে। এমনই বলছে রাজনৈতিক ওয়াকিবহাল মহল।
জনতা দল ইউনাইটেড-বিজেপির মতো হেভিওয়েট সম্বলিত NDA-তে থেকে দর কষাকষি করে ২৯টি আসন লড়াইয়ের জন্য ছিনিয়ে আনেন চিরাগ। এই ২৯টির মধ্যে ২১টিতেই এগিয়ে LJP প্রার্থীরা। স্ট্রাইক রেট এককথায় ৭২ শতাংশ। গত বছর লোকসভা নির্বাচনেও ভাল ফল করেছিল চিরাগ-নেতৃত্বাধীন LJP। ৫টি আসনে লড়াই করে ৫টিতেই জিতেছিল।
২০২০ সালে JDU সুপ্রিমো নীতীশ কুমারের সঙ্গে মতপার্থক্যের জেরে একা লড়েছিল LJP। সেবার ১৩০টির বেশি আসনে প্রার্থী দিয়ে মাত্র ১টিতে জিতেছিল। যদিও LJP বেশ কিছু আসনে জেডিইউ-র ভাল সংখ্যক ভোট কাটাকাটি করতে সক্ষম হয়েছিল এবং স্পয়লারের ভূমিকা পালন করে। অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক তখন মনে করেছিলেন যে, চিরাগের কাছে তাঁর বাবা রাম বিলাস পাসোয়ানের উত্তরাধিকার এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার মতো ক্যারিশ্মা এবং রাজনৈতিক বিচক্ষণতা নেই। রাম বিলাসকে বিহারের রাজনীতিতে এক বিরাট নেতা হিসেবে দেখা হত। ২০২১ সালে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। ভাগ হয়ে যায় LJP। পৃথক হয়ে যান চিরাগের কাকা পশুপতি কুমার পরস। সেই জায়গা থেকে ঘুরে দাঁড়ানো চিরাগের।
৪৩ বছর বয়সেই যুব নেতা হিসাবে নিজের দৌড় অনেকটাই এগিয়ে নিলেন চিরাগ। নিজেকে 'যুব বিহারি' বলতে ভালবাসেন। দলিতদের জন্য লড়াই করার যে ব্রত নিয়ে তাঁর দল বরাবর লড়াই করেছে, সেই শিকড় নড়তে দেননি তিনি। চিরাগ ও তাঁর দল ২০২৪ সালে যে কঠোর পরিশ্রম করেছিল, তার ফসল ঘরে উঠেছিল লোকসভা ভোটে। ৫টি আসনে লড়াই করে ৫টিতেই জিতেছিল। সেবার ১০০ শতাংশ স্ট্রাইক রেট রেখেছিলেন চিরাগ। এই সাফল্যের পরও, এনডিএ-র মূল দল বিজেপি ও জেডিইউ LJP-কে ২০টির বেশি আসন দিতে চায়নি বিধানসভা ভোটে। সেই সময় প্রশান্ত কিশোরের জন সূরয পার্টির সঙ্গে সমঝোতা করতে উদ্যোগী হন চিরাগ। শেষমেশ অবশ্য বিহারের শাসক-জোট তাকে ২৯টি আসন ছাড়ে।