বিহার: তুমুল ঝড় বৃষ্টি, সঙ্গে বজ্রপাত। তিন দিনে ৮০ মৃত্যু দেখল বিহার। মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে খবর। বিহারের নালন্দা জেলাতেই অন্তত ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয়। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ সাম্প্রতিক প্রাক-বর্ষা আবহাওয়াকেই দায়ী করেছে এই ঘটনায়। এও জানান হয়েছে যে বিহারে গত পাঁচ বছরে প্রাকৃতিক দুর্যোগে গড়ে ২৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার বিহারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের মন্ত্রী বিজয় কুমার মণ্ডল সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত বজ্রপাতের ঘটনায় মোট হতাহতের সংখ্যা ৮০ জনে দাঁড়িয়েছে। বিহারের সরকার নিহতদের পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করছে। বজ্রপাতে মৃতদের পরিবারকে ৪ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্য দেওয়ার কথা জানিয়েছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার।
এর মধ্যে নালন্দায় ২৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ঝড়ের তীব্রতায় একটি পুরনো গাছ এবং মন্দিরের দেয়াল ভেঙে পড়ে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। এর প্রভাব ছিল ভয়ঙ্কর । প্রাণহানির পাশাপাশি, ঝড়ের ফলে রবি ফসল এবং ক্ষেতে পেঁয়াজ চাষের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। নালন্দা জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক ঝড়ের তীব্রতা এবং মানুষের নিরাপদ আশ্রয় নেওয়ার সীমিত সুযোগের উপর জোর দিয়ে বলেন, "মানুষ গাছের আড়ালে লুকিয়ে ছিল কিন্তু গাছ উপড়ে পড়েছিল এবং যখন তারা একটি মন্দিরের ভেতরে আশ্রয় নিয়েছিল, তখন এর দেয়াল ভেঙে পড়েছিল। এর তীব্রতা কল্পনা করুন"।
চার বছরের মধ্যে দ্বিতীয়বার এমন চরম আবহাওয়া দেখা গেল। যার জেরে একদিনে এত বেশি সংখ্যক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। এর আগে ২০২০ সালের জুন মাসে, পূর্ব বিহারে একদিনে মারাত্মক বজ্রপাতের ঘটনায় ৯০ জনেরও বেশি মানুষ, যাদের বেশিরভাগই দরিদ্র কৃষক ছিলেন। সেই সময় বর্ষার বৃষ্টি দেখে উৎসাহিত হয়ে গ্রামবাসীরা তাদের জমিতে কাজ করার সময় পরপর বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে, যার ফলে পুরো এলাকায় বিপর্যয় নেমে আসে, এমনটাই জানান হয়েছে।
নালন্দা, মধুবনী, পূর্ব এবং পশ্চিম চম্পারণসহ বিভিন্ন জেলায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয়ের তরফে জানান হয়েছে, খারাপ আবহাওয়ার সময় রাজ্যবাসী সতর্কতা মেনে চলা উচিত। বিশেষ করে স্থানীয় আবহাওয়া দফতর যে সতর্কবার্তা দেয় তা যাতে সবাই মেনে চলা সেই কথাও জানিয়েছেন। বিশেষ করে বজ্রপাতের সময় বাড়িতে কিংবা নিরাপদে যাতে বিহারের মানুষ যাতে থাকেন সেই কথাও জানিয়েছেন সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী।