পটনা: নয় নয় করে খসড়া তালিকা থেকে ৬৫ লক্ষের নাম বাদ গিয়েছে। বিহারে ভোটার তালিকায় বিশেষ সংশোধন ঘিরে বিতর্ক তুঙ্গে। সেই আবহেই মারাত্মক অভিযোগ তুললেন বিহার বিধানসভার বিরোধী দলনেতা, লালুপ্রসাদ যাদবের ছেলে তেজস্বী যাদব। জানালেন, EPIC নম্বর দিয়ে ভোটার তালিকায় নিজের নাম খুঁজে পাচ্ছেন না তিনি। তাঁর নাম বাদ দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন তেজস্বী। নির্বাচন কমিশন যদিও সেই দাবি মানতে নারাজ। (Bihar Voter List Revision)

ভোটার তালিকায় বিশেষ সংশোধনের পর কোথাও তাঁর নাম নেই বলে জানিয়েছেন তেজস্বী। সাংবাদিক বৈঠকে হাতেনাতে তার প্রমাণও পেশ করেন তিনি। নির্বাচন কমিশনের অ্যাপে গিয়ে EPIC নম্বর দিয়ে নিজের ভোটার পরিচয়পত্র খোঁজেন। কিন্তু ওই EPIC নম্বরের কেউ নেই বলে মেসেজ ভেসে ওঠে ফোনের স্ক্রিনে। সাংবাদিকদের সামনেই বিষয়টি সম্পন্ন হয়। (Tejashwi Yadav)

সাংবাদিক বৈঠকে তেজস্বী বলেন, "নির্বাচন কমিশনের অ্যাপে আমার নাম নেই। এখনও পর্যন্ত অন্তত আমার নাম নেই এখানে। আমি নির্বাচন লড়ব কী করে? EPIC নম্বর দিলাম, কিন্তু নাম নেই। নিজের EPIC নম্বর RAB2916120-ও বলে দেন তেজস্বী। Captcha দিয়েও যে নাম দেখাচ্ছে না, No Records Found দেখাচ্ছে, তা সকলের সামনে তুলে ধরেন তিনি।" তেজস্বী জানান, সাংবাদিক বৈঠক করার সময় পর্যন্ত তাঁর নাম অন্তত তালিকায় নেই।

তেজস্বীর বক্তব্য, "প্রথম দিন থেকে SIR নিয়ে কোনো স্বচ্ছতা রাখা হয়নি। সর্বদল বৈঠক ছাড়া, কারও সঙ্গে কোনও আলোচনা না করে বিহারে SIR-এর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। নথি থেকে প্রক্রিয়া, SIR-এর সময় নিয়ে বহু প্রশ্ন রয়েছে। আমাদের প্রতিনিধিরা দিল্লিতে কমিশনের সঙ্গে দেখাও করেন। অনুযোগ অভিযোগ জানানো হলেও, তা মানা হয়নি। এমনকি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশও অমান্য করছে নির্বাচন কমিশন।"

 

কমিশনকে নিশানা করে তেজস্বী বলেন, "গোড়া থেকে বলে আসছিলাম, এতে বিপুল সংখ্য়ক গরিব মানুষের নাম বাদ পড়বে। কিন্তু কমিশন দাবি করে, কারও নাম বাদ যাবে না। বলা হয়েছিল, পুরনো ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়া ব্যক্তির নাম, নাম বাদ পড়ার কারণ, সব রাজনৈতিক দলগুলিকে দেওয়া হবে। কাল আমাদের বিরোধী জোটের প্রতিনিধিরা কমিশনের কাছে গিয়েছিল। কিন্তু কমিশন বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছে না। একেবারে স্বৈরাচারী আচরণ। ভাবটা এমন যে, যা ইচ্ছে করুন। মাথার উপর যে দুই গুজরাতি বসে রয়েছেন, তাঁরাই বিহারের ভোটার নির্ধারণ করবেন। ওঁরা যাঁদের নাম বলবেন, তাঁদের নামই যাবে। আমরা এমনই আচরণ পেলাম কমিশনের কাছ থেকে।"

যদিও তেজস্বীর সাংবাদিক বৈঠকের পরই খসড়া ভোটার তালিকার একটি ছবি প্রকাশ করে কমিশন, যাতে তেজস্বীর নাম ও ছবি দেখা যায়। কিন্তু সাংবাদিক বৈঠকে তেজস্বী যে EPIC নম্বর দিয়েছিলেন, তার সঙ্গে কমিশনের প্রকাশিত EPIC নম্বর মেলেনি। তেজস্বীর দাবি, প্রকাশ্য দিবালোকে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হচ্ছে। ছিনিয়ে নেওয়া হচ্ছে মানুষের ভোটাধিকার। নির্বাচন কমিশন বিজেপি-র শাখা হিসেবে কাজ করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।