নয়াদিল্লি : বিলকিস বানো মামলায় ১১ অপরাধীর আবেদন খারিজ করল সুপ্রিম কোর্ট। আত্মসমর্পণের আগে তারা আরও সময় চেয়েছিল। যে আবেদন আজ বাতিল করে দেয় শীর্ষ আদালত। তাদের জেলেই ফিরে যেতে হবে। বিচারপতি বিভি নাগরত্না নেতৃত্বধীন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, এই আবেদনের কোনও ভিত্তি নেই। রবিবারের মধ্যে জেল কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট করতে হবে দোষীদের।


সময়ের আগে মুক্তি পেয়ে বাড়ি ফিরলেও, বিলকিস বানোর ধর্ষকদের জেলে ফিরতে নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। তার পর ১১ দিন পেরিয়ে গেলেও, এখনও জেলমুখো হতে দেখা যায়নি ১১ জনের মধ্যে কাউকেই। বরং এখনই জেলে ফিরতে অসুবিধে বলে জানিয়ে, একাধিক অজুহাত তুলে ধরে তারা। পরিবারের সদস্যের অসুস্থতার কথা জানিয়ে কেউ, কেউ আবার পারিবারিক অনুষ্ঠানের দোহাই দিয়ে।


‘ভাল আচরণে’র জন্য বছর দু'য়েক আগে স্বাধীনতা দিবসে বিলকিসের ধর্ষকদের সময়ের আগেই মুক্তি দিয়েছিল গুজরাত সরকার। গলায় মালা পরিয়ে, মিষ্টিমুখ করিয়ে তাদের স্বাগত জানায় হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। সেই নিয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হলে, এ বছর ৮ জানুয়ারি গুজরাত সরকারের সিদ্ধান্ত বাতিল করে সুপ্রিম কোর্ট। দুই সপ্তাহের মধ্যে বিলকিসের ধর্ষকদের জেলে ফিরতে নির্দেশ দেওয়া হয়। (Bilkis Bano Convicts)


তবে এখনও পর্যন্ত বিলকিসের ধর্ষকদের একজনও থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেছে বলে খবর নেই। বরং অধিকাংশের বাড়িতে গিয়ে দেখা গিয়েছে, তালা ঝুলছে। পরিবারের কেউ তাদের হালহাকিকত জানাতে পারেননি। সেই আবহেই ১১ জনের মধ্যে সাত জন শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয় বৃহস্পতিবার। আত্মসমর্পণের জন্য অতিরিক্ত সময় চেয়ে আবেদন জানায় তারা।


২০০২ সালের গোধরায় সবরমতী এক্সপ্রেসে অগ্নিকাণ্ডের পর গুজরাত জুড়ে অশান্তি ছড়িয়ে পড়ে। সেই সময় পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন বিলকিস। কোলের সন্তান এবং পরিবারের মোট ১৫ সদস্যের সঙ্গে গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। ৩ মার্চ ধূ ধূ জমি ঘিরে গজিয়ে ওঠা ঝোপের মধ্যে আশ্রয় নিয়েছিলেন। সেই সময় কাস্তে, তলোয়ার, লাঠি নিয়ে ২০-৩০ জনের দল তাঁদের উপর চড়াও হয়। গণধর্ষণের শিকার হন বিলকিস। বিলকিসের চোখের সামনে পরিবারের সাত সদস্যকে নৃশংস ভাবে খুন করা হয়। খুন করা হয় বিলকিসের শিশু সন্তানকেও। কোনও রকমে প্রাণ বাঁচিয়ে পালান ছ’জন।


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।