নান্টু পাল, বীরভূম: নয় নয় করে পার হয়ে গিয়েছে এক সপ্তাহ। ঢের আগেই নিভে গিয়েছে দাউদাউ (Rampurhat Fire) করে জ্বলতে থাকা আগুন। কিন্তু জতুগৃহের উত্তাপ এখনও ভালই বোধ হচ্ছে সর্বত্র। রাজনৈতিক কচকচানি, সিবিআই-পুলিশের আনাগোনায়, এখনও গমগম করছে গোটা এলাকা। তার মধ্যেই আতঙ্ক গ্রাস করেছে সকলকে। ঘরছাড়ারা এখনও গ্রামে ফেরার সাহস পাচ্ছেন না। আবার গ্রামে যাঁরা রয়েছেন, বাড়ির বাইরে পা রাখার সাহস জুটিয়ে উঠতে পারছেন না তাঁরাও।


এখনও গ্রামছাড়া বহু মানুষ


বীরভূমের (Birbhum Violence) রামপুরহাটের বগটুইয়ের ওই ঘটনার আঁচ বিধানসভা থেকে দিল্লির সংসদেও পৌঁছে গিয়েছে। কিন্তু আতঙ্কে এখনও গ্রামে ফিরতে পারেননি বহু মানুষ। তাই পূর্বপাড়া গ্রামে পা রাখলেও চোখে পড়ে, সারি সারি বাড়িতে তালা ঝুলছে। তাড়াহুড়ো করে কোনও রকমে বেরিয়ে পড়তে গিয়ে যে মাথা কাজ করেনি, তা বোঝা যাচ্ছে, জানলার দিকে তাকালেই।


আরও পড়ুন: Anubrata Mondal: গরুপাচার মামলায় ফের অস্বস্তিতে অনুব্রত, খারিজ হয়ে গেল রক্ষাকবচের আবেদন। Bangla News


কারণ প্রাণের ভয়ে ঘরছাড়া বহু মানুষ, দরজায় একটি তালা ঝুলিয়ে দিলে, নেভাতে ভুলে গিয়েছেন ঘরের আলো।তাই এ মাথা থেকে ও মাথা, গ্রামের একটি বড় অংশ শুনশান হয়ে গেলেও, অন্ধকার ফুঁডে় কিছু বাড়ির জানলা দিয়ে বেরিয়ে আসছে আলোর আভা। আদালত সিবিআই-এর হাতে তদন্তভার তুলে দিলেও, গ্রামে এখনও মোতায়েন রয়েছে পুলিশবাহিনী। জায়গায় জায়গায় বসানো হয়েছে পুলিশ পিকেট। মোড়ে মোড়ে বসানো হয়েছে সিসিটিভি।


রাতে ঘরে থাকছেন না বহু গ্রামবাসী


কিন্তু এত কিছুর পরেও গ্রামে ফিরতে ভরসা পাচ্ছেন না বহু মানুষ। সেই রাতে জতুগৃহের (Bogtui Arson) দৃশ্য এখনও চোখের সামনে ভেসে উঠছে তাঁদের। তাই ভিটেমাটির মায়া টানলেও, আবেগ সামলে নিচ্ছেন তাঁরা। রাজ্য সরকার আশ্বস্ত করলেও, বাড়ি ফেরার সাহস পাচ্ছেন না কেউ। তাঁদের আশঙ্কা, থানা-পুলিশ যাই হোক না কেন, গ্রামে ফিরলে ফের যে অশান্তি বাঁধবে না, তার সুনিশ্চিত করবে কে?


আবার ভিটেমাটি ছেড়ে পালিয়ে গিয়ে একাংশ যদিও বা নিরাপদ বোধ করছেন, গ্রামে এখনও রয়ে গিয়েছেন যাঁরা, আতঙ্কে প্রহর গুনছেন তাঁরা। আগামী দিনে আদৌ গ্রামে থাকা চলবে কিনা, তা নিয়ে শুরু হয়েছে কানাঘুষো। প্রয়োজনীয় কাজ মেটাতে কেউ কেউ দিনের বেলায় যাও বা বাড়ির বাইরে পা রাখছেন, সন্ধ্যা নামার আগে খিল তুলে দিচ্ছেন দরজায়। অনেকে আবার সন্ধ্যা নামার আগেই তল্পিতল্পা নিয়ে অন্যত্র পাড়ি দিচ্ছেন। রাতটুকু অন্যত্র কাটিয়ে ফিরে আসছেন সকালে। তাই প্রশ্ন উঠছে, পুলিশ পিকেটিং থাকা সত্ত্বেও যদি এই অবস্থা হয়, আগামী দিনে বগটুইবাসীকে আদৌ নিরাপদ বোধ করানো যাবে তো!