কলকাতা : বেশ কিছুদিন ধরেই বার্ড ফ্লুর সঙ্গে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র্রের বিভিন্ন এলাকা। এবার বার্ড ফ্লু আতঙ্ক ভারতেই। আশঙ্কাই সত্যি করে দক্ষিণের এক রাজ্য থেকে আরেক রাজ্যে ছড়াচ্ছে বার্ড ফ্লু।  অন্ধ্রপ্রদেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে এবার মহারাষ্ট্রে ছড়িয়ে পড়ল আতঙ্ক। সেখানে ৬টি জেলার পৃথক পৃথক জায়গায় পোলট্রিতে বার্ড ফ্লু সংক্রমণের খবর মিলেছে। সূত্রের খবর, হালফিলে নয়, গত কয়েকমাস ধরেই তলায় তলায় ছড়াচ্ছে ফ্লু। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের শুরু থেকে মহারাষ্ট্রে বার্ড ফ্লু (এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা) আক্রান্ত ৭টি এলাকায় ৭ হাজারেরও বেশি হাঁস-মুরগি মেরে ফেলা হয়েছে।  ২,২৩০টি ডিম নষ্ট করা হয়েছে। 

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদন অনুসারে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অসংগঠিত খামারগুলিতেই বার্ড ফ্লু হানা দিয়েছে বেশি।   বাড়ির উঠোনের হাঁস-মুরগির পোষার চল আছে মহারাষ্ট্রে। সেই খামারগুলিতে বেশি সংক্রমণ দেখা গিয়েছে। বিভিন্ন প্রতিবেদনে দাবি,  হাঁস-মুরগি ছাড়াও, বাঘ, চিতাবাঘ, শকুন এবং কাকের মধ্যেও বার্ড ফ্লুতে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

অন্ধ্রপ্রদেশে আরও জাঁকিয়ে বসছে বার্ড ফ্লু । পূর্ব গোদাবরী জেলায় লক্ষাধিক মুরগির মৃত্যু হয়েছে বার্ড ফ্লুতেই। নিশ্চিত করেছে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হাই সিকিওরিটি অ্যানিম্যাল ডিজিসেস্।  যে এলাকা থেকে বার্ড ফ্লু সংক্রমণ ছড়িয়েছে, সেখান থেকে প্রথম এক কিলোমিটার ব্যাসার্ধের এলাকাকে রেড জোন ঘোষণা করা হয়েছে। রেড জোনে ডিম ও মাংস খাওয়া নিষিদ্ধ করেছে অন্ধ্রপ্রদেশ সরকার। সেখানে ৬৫টি মেডিক্যাল টিম তৈরি করা হয়েছে। সংক্রমণের উৎসস্থল থেকে এক কিলোমিটারের মধ্যে সব পোলট্রি ফার্ম ভেঙে ফেলা হচ্ছে। চলছে কালিং ও মাটিতে পুঁতে ফেলার কাজ। সংক্রমণের উৎসস্থল থেকে প্রথম এক কিলোমিটারের পর ১০ কিলোমিটার এলাকায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। সেখানে গতিবিধিতে রাশ টানা না হলেও, ডিম ও চিকেন খাওয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পরিযায়ী পাখিদের থেকেই সংক্রমণ ছড়িয়েছে বলে আশঙ্কা অন্ধ্রপ্রদেশ সরকারের। ৩ জেলার ৪টি এলাকাকে বায়ো সিকিওরিটি জোনের মধ্যে ফেলা হয়েছে। 

বাংলায় অন্যান্য রাজ্য থেকে ডিম আমদানি হয়। মাংসও আসে। তাহলে কি এরাজ্যের মানুষরা সঙ্কটে ? তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, অযথা আতঙ্ক করে লাভ নেই। প্রথমত একজন মানুষের থেকে আরেকজনের মধ্যে বার়্ ফ্লু সংক্রমণ ছড়ায় না। আর মাংস বা ডিম, ভাল করে রান্না করে খেলে চিন্তা নেই। তবে যাঁরা মাংসের দোকানে কাজ করেন, কাঁচা মাংস নাড়াচাড়া করেন, তাঁদের বিপদ। সংক্রমিত এলাকা থেকে ডিম বা মুরগি যাঁরা আনছেন, যাঁরা কাটছেন, যাঁরা বিক্রি করছেন , তাঁরা কিন্তু  সংক্রমিত হতে পারেন।  জানালেন চিকিৎসক প্রভাসপ্রসূন গিরি, চিকিৎসক সুমন পোদ্দার।