পঞ্জাব: কংগ্রেস ছেড়ে বেরিয়ে এসেছেন আগেই।বিধানসভা নির্বাচনের (Punjab Assembly Election 2022) আগে এ বার আনুষ্ঠানিক ভাবে বিজেপি-র (BJP) হাত ধরলেন পঞ্জাবের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিংহ (Amrinder Singh)। কৃষি আইন নিয়ে গেরুয়া শিবিরের সঙ্গে সমঝোতা চলছে বলে আগেই জানিয়েছিলেন তিনি। কৃষি আইন প্রত্যাহারের দু’সপ্তাহ পর, শুক্রবার তাতে সিলমোহর দিলেন অমরিন্দর। জানিয়ে দিলেন, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে পঞ্জাবে বিজেপি-র সঙ্গে জোট গড়ে লড়বে তাঁর দল পঞ্জাব লোক কংগ্রেস (Punjab Lok Congress)।
শুক্রবার পঞ্জাব বিজেপি-র দায়িত্বপ্রাপ্ত তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গজেন্দ্র সিংহ শেখাওয়াতের (Gajendra Sing Shekhawat) সঙ্গে দেখা করেন অমরিন্দর। তার পর টুইটারে লেখেন, ‘কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা পঞ্জাব বিজেপি-র দায়িত্বপ্রাপ্ত গজেন্দ্র সিংহ শেখাওয়াতের সঙ্গে সাক্ষাৎ হল। পঞ্জাব বিধানসভা নির্বাচনের রণকৌশল নিয়ে আলোচনা হল।‘
কৃষি আইন ঘিরে পঞ্জাবে এমনিতেই কোণঠাসা বিজেপি।তাদের হাত ধরার সিদ্ধান্তে তাই প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে অমরিন্দর এবং তাঁর দলকে। কিন্তু অমরিন্দরের কথায়, “আমরা প্রস্তুত। নির্বাচন আমরাই জিততে চলেছি। এলাকাভিত্তিতে আসন সমঝোতা হবে। নির্বাচন জেতাকেই প্রাধান্য দেওয়া হবে সে ক্ষেত্রে। নির্বাচনে জয় নিয়ে ১০১ শতাংশ নিশ্চিত আমরা।”
আগামী বছর পঞ্জাবে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে গত ছ’মাস ধরে কম রাজনৈতিক ওঠাপড়া হয়নি সেখানে। তাতে দুই বিপরীত মেরুতে ছিলেন অমরিন্দর এবং প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি নভজ্যোত সিংহ সিধু (Navjot Singh Sidhu)। বিজেপি ছেড়ে কংগ্রেসে (Congress) যোগ দেওয়া সিধুকে নিয়েশুরু থেকেই অসন্তুষ্ট ছিলেন অমরিন্দর। অমরিন্দ্রের প্রতি অসন্তোষ নিয়ে রোখঢাক করেননি সিধুও।
তা নিয়ে টানাপড়েনের মধ্যে পঞ্জাবের কংগ্রেস বিধায়কদের সিংহভাগই অমরিন্দরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। এমন টানাপড়েনের মধ্যে কংগ্রেস হাইকম্যান্ডের তরফে অমরিন্দরকে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিতে বলা হয়।এই ‘অপমান’ সহ্য করতে না পেরে, কংগ্রেস থেকেও বেরিয়ে যান অমরিন্দর, নিজের আলাদা দল গঠন করেন। আর তখনই বিজেপি-র সঙ্গে সম্ভাব্য সমঝোতার ইঙ্গিত দেন তিনি।
অমরিন্দরের সিদ্ধান্তে যদিও আশ্চর্য নন রাজ্যে কংগ্রেস নেতারা। কৃষি আইন নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে কংগ্রেস যখন প্রতিবাদ চালিয়ে যাচ্ছে, সেই সময় দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ ভাল ভাবে নেননি দলীয় নেতৃত্ব। এমনকি সংস্কারের নামে জালিয়ানওয়ালাবাগের খোলনলচে পাল্টে দিলেও, কেন্দ্রের বিরুদ্ধে একটিও শব্দ খরচ করেননি অমরিন্দর। বরং কেন্দ্রের প্রশংসাই করেন।
তবে বিজেপি-র সঙ্গে হাত মিলিয়ে আসন্ন নির্বাচনে অমরিন্দর আদৌ সুবিধা করতে পারবেন কি না, তা নিয়ে সন্দিহান অনেকেই। কারণ সম্পূর্ণ নতুন একটি দলকে নিয়ে নির্বাচনে নাম লেখাতে চলেছেন অমরিন্দর। তাই রাজনৈতিক ভাবে বিজেপি-ই জোটের হর্তাকর্তা হবে বলে মনে করছেন অনেকেই। সে ক্ষেত্রে বিজেপিই বেশি সংখ্যক আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চলেছে বলে শোনা যাচ্ছে।