নয়াদিল্লি : 'এক দেশ, এক ভোট' পেশের মতো গুরুত্বপূর্ণ সময়ে লোকসভা উপস্থিত ছিলেন না দলের বেশ কয়েকজন সদস্য। তাঁদের এবার নোটিস ধরানোর পরিকল্পনা করছে বিজেপি। কেন্দ্রের আনা এই বিল নিয়ে আজ ভোটাভুটির সময় হাজির ছিলেন না ২০-র বেশি বিজেপি সাংসদ, এনডিটিভি-কে এমনই জানিয়েছে সূত্র। যার জেরে এদিন বিলের পক্ষে ভোট পড়ে ২৬৯ সাংসদের, অন্যদিকে এর বিরোধিতায় ১৯৮ জন ভোট দেন। অথচ, এর আগে হুইপ জারি করে এদিন কক্ষে উপস্থিত থাকার জন্য সাংসদদের নির্দেশ দিয়েছিল বিজেপি। প্রসঙ্গত, সাংবিধানিক সংশোধনী পাস করানোর জন্য দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রয়োজন শাসক জোটের। যদিও সাংসদদের অনুপস্থিতি সংবিধান পরিবর্তনের উদ্দেশ্যে আনা দু'টি বিলের অগ্রগতিতে বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। মূল বিরোধী দল কংগ্রেসের অবশ্য দাবি, এবিষয়ে সরকারের কাছে পর্যাপ্ত সমর্থন নেই। বিলের বিরোধিতা করে তারা। তাদের দাবি, সংসদ এ ধরনের আইনসভা পাস করার যোগ্য নয়।
এদিকে বৃহত্তর আলোচনার জন্য 'এক দেশ এক ভোট' বিল যৌথ সংসদীয় কমিটির কাছে পাঠাতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। কারণ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি স্বয়ং তা বলেছেন। লোকসভায় একথা জানান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বিরোধীদের আপত্তির আবহেই এদিন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী অর্জুন রাম মেঘওয়াল ‘এক দেশ, এক ভোট’ বিল পেশ করেন। দু'টি বিল পেশ করা হয়। একটি হল, সংবিধান (১২৯তম সংশোধনী) বিল ২০২৪ ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল আইন (সংশোধনী) বিল ২০২৪। পর পর নির্বাচনের ব্যবস্থার জন্য এই উদ্যোগ। বিলের পক্ষে ভোট পড়ে ২৬৯টি এবং বিপক্ষে ১৯৮টি। এরপর লোকসভায় অমিত শাহ বলেন, "কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার কাছে যখন এক দেশ এক ভোট বিল এসেছিল, প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেছিলেন এটি সংসদের যৌথ কমিটির কাছে উল্লেখ করা উচিত। এনিয়ে প্রত্যেক স্তরে বিস্তারিত আলোচনা হওয়া উচিত।"
এদিন এই বিল সংসদে পেশ হতেই বিরোধীদের তরফে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়। বিরোধী শিবির থেকে এর বিরোধিতায় নেতৃত্ব দেন NCP-র সুপ্রিয়া শূলে, কংগ্রেসের মণীশ তিওয়ারি, তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, সমাজবাদী পার্টির ধর্মেন্দ্র যাদব ও DMK-র টিআর বালু। কংগ্রেস সাংসদ মণীশ তিওয়ারির বক্তব্য, "এই বিল সংবিধানের মৌলিক কাঠামোকেই চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে।" অন্যদিকে, অখিলেশ যাদবের তরফে এই বিলের বিরোধিতা করেন সপা সাংসদ ধর্মেন্দ্র যাদব। বিজেপি সরকার একনায়কতন্ত্র চালাচ্ছে বলে অভিযোগ তোলেন তিনি। তিনি বলেন, "এই বিল ভারতে বৈচিত্র্য এবং যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোকেই শেষ করে দেবে।"