হেমতাবাদ: রহস্যজনকভাবে মারা গেলেন উত্তর দিনাজপুরের হেমতাবাদের বিজেপি বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায়। বাড়ি থেকে এক কিলোমিটার দূরে এক বন্ধ দোকানের বারান্দা থেকে উদ্ধার হয়েছে তাঁর ঝুলন্ত দেহ। পরিবার অভিযোগ করেছে, তাঁকে খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফিরহাদ হাকিম অবশ্য খাড়া করেছেন অবসাদের তত্ত্ব।


দেবেন্দ্রনাথ রায়ের পরিবারের দাবি, গতকাল রাত ১টা নাগাদ কয়েকজন মোটর বাইক আরোহী তাঁকে বালিয়ার বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যান। আজ সকালে বালিয়া মোড়ে একটি বন্ধ দোকানঘরের বারান্দা থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। স্থানীয়দের দাবি, রাত দশটা পর্যন্ত দেবেন্দ্রনাথবাবু স্থানীয় চায়ের দোকানে ছিলেন। তারপর রাত একটা নাগাদ একটি মোটর বাইক তাঁর বাড়ির দিকে যায়। এ ব্যাপারে সিবিআই তদন্ত চেয়েছেন তাঁরা।

‘পকেট থেকে উদ্ধার সুইসাইড নোট। সুইসাইড নোটে বেশ কিছু নামের উল্লেখ’। প্রাথমিক তদন্তে আত্মহত্যা বলে অনুমান: পুলিশ সুপার। আত্মহত্যা হলে হাত বাঁধা কেন? প্রশ্ন বিধায়কের স্ত্রীর। ঘটনার সিবিআই তদন্তের দাবি বিজেপির। সিআইডিকে বিধায়ক মৃত্যুর তদন্তভার দিল রাজ্য। কাল ১২ ঘণ্টা উত্তরবঙ্গ বন্ধের ডাক বিজেপির। ১৫ জুলাই থানায় বিক্ষোভ কর্মসূচি, ঘোষণা দিলীপ ঘোষের। বিধায়ক খুনের অভিযোগে কলকাতায় মিছিল বিজেপির। মিছিল শেষে রাজ্যপালের দ্বারস্থ বিজেপির প্রতিনিধি দল।



প্রদেশ বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষও অভিযোগ করেছেন, দেবেন্দ্রনাথকে খুন করা হয়েছে। পরিচিত লোকেদের ডাকে তিনি বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। তা না হলে রাত একটায় কেউ বাড়ি থেকে বার হয় কি? আত্মহত্যা করলেই হাতই বা বাঁধা কেন প্রশ্ন দিলীপের। তাঁর দাবি, স্থানীয় এক যুব তৃণমূল নেতার হাত রয়েছে এতে।

বিজেপি সভাপতি জগৎ প্রকাশ নাড্ডাও দাবি করেছেন, হেমতাবাদের বিধায়ককে নৃশংসভাবে খুন করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে মমতা সরকার গুন্ডারাজ চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।



দেবেন্দ্রনাথ রায়ের মৃত্যুর ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্ত চেয়ে টুইট করেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। তিনি লিখেছেন, মুখ্যমন্ত্রীকে বলছি, রাজ্যে রাজনৈতিক হিংসা ও ষড়যন্ত্র কমার কোনও লক্ষণ নেই। উত্তর দিনাজপুর জেলার হেমতাবাদের বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায়ের মৃত্যুর ঘটনায় রেশ কিছু গুরুত্বপূণ বিষয় ও খুনের অভিযোগ উঠেছে। সত্য প্রকাশ এবং রাজনৈতিক হিংসা থামাতে নিরপেক্ষ তদন্ত প্রয়োজন।



খুনের আশঙ্কা উড়িয়ে দেননি স্থানীয় তৃণমূল নেতা কানহাইয়ালাল আগরওয়ালও। কেন তিনি অত রাতে বাড়ি থেকে বার হলেন তার তদন্তের দাবি করেছেন তিনি। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে ডগ স্কোয়াড।

২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনে হেমতাবাদ কেন্দ্র থেকে সিপিএমের হয়ে জয়ী হন দেবেন্দ্রনাথবাবু। ২০১৯-এ তিনি যোগ দেন বিজেপিতে। কীভাবে মৃত্যু, খতিয়ে দেখছে রায়গঞ্জ থানার পুলিশ।