কলকাতা: টাকার বিনিময়ে সংসদে আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন বলে অভিযোগ। সংসদের নীতি কমিটিতে সেই নিয়ে সওয়াল-জবাব চলছেই। তার মধ্যেই তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে (Mahua Moitra) ফের আক্রমণ বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবের- (Nishikant Dubey)। এবার মহুয়ার দুবাই ভ্রমণের তথ্য সামনে আনলেন নিশিকান্ত। শুধু তাই নয়, মঙ্গলবার নীতি কমিটির সামনে হাজিরা না দেওয়া নিয়ে কটাক্ষও করলেন। (Cash for Queries)


ব্যবসায়ী দর্শন হীরানন্দানির কাছ থেকে পাওয়া ঘুষ এবং উপহারের বিনিময়ে মহুয়া সংসদে আদানি গোষ্ঠী এবং গৌতম আদানির বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলেছিলেন বলে অভিযোগ করেছেন নিশিকান্ত। অভিযোগের ভিত্তিতে ইতিমধ্যেই সংসদের নীতি কমিটির সামনে হাজিরা দিয়েছেন নিশিকান্ত এবং মহুয়ার প্রাক্তন জয় অনন্দ দেহাদ্রাই। তাঁদের বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। কিন্তু পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচির জন্য মহুয়া অন্য দিনে হাজিরা দিতে চেয়েছেন। ২ নভেম্বর তলব করা হয়েছে তাঁকে।


সেই নিয়ে রবিবার নতুন করে মহুয়াকে আক্রমণ করেন নিশিকান্ত। সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি লেখেন, 'নীতি কমিটির কাছে যাওয়ার সময় নেই, কিন্তু সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় আছে। আমি তো এ নিয়ে আজ পর্যন্ত কোনও সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দিইনি। এটাই সংসদের গরিমা। অভিযুক্ত সাংসদের বন্ধু হীরানন্দানিই তাংর বিদেশযাত্রা, থাকা, দামি জিনিস কেনা এবং ভ্রমণের খরচ (নগদ) জোগানোর কথা জানিয়েছেন'।



মহুয়ার ভ্রমণের রেকর্ডও সোশ্যাল মিডিয়ায় তুলে ধরেছেন নিশিকান্ত। তাঁর কথায়, 'ওঁর (মহুয়ার) দুবাইয়ের হোটেলের বিল, যা ২০১৮ সালে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার সদস্য থাকাকালীন মিটিয়েছিলেন হীরানন্দানি'। সংসদীয় লগইন আইডি এবং পাসওয়র্ড দেওয়া নিয়েও মহুয়াকে একহাত নেন নিশিকান্ত। তাঁর বক্তব্য, 'মহুয়াজির কিছু সাক্ষাৎকার দেখলাম এবং পড়লাম। যে আইটি স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য উনি, তার বিধিনয়মই পড়ে নিতে পারতেন। কারণ ২০০০ সালের তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৪৩ নম্বর নিয়ম অনুযায়ী, কম্পিউটার, ডেটা, অথবা পাসওয়র্ড নিজের সচিব বা সিস্টেমের মালিক পক্ষকে অনুমতি সাপেক্ষে দেওয়া যেতে পারে। এখানে সিস্টেমের মালিক লোকসভার স্পিকার অথবা NIC. আপনি কার অনুমতি দিয়েছিলেন? অনুমতি না নিয়ে থাকলে, তা জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে ছেলেখেলা করার বিষয়, এর পাশাপাশি দুর্নীতির জন্যও তিন বছরের জেল হয়। ওই সম্পত্তি সংসদের। সাংসদ না থাকলে সব জমা করতে হয়'।


আরও পড়ুন: Jehovah’s Witnesses: খ্রিস্টান হয়েও জিশুকে সৃষ্টিকর্তা বলে মানেন না, কেরলে জেহোবা অনুগামীদের উপরই হামলা


মহুয়াকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষও। তাঁর বক্তব্য, "মহুয়া মৈত্র যে অপরাধ করেছেন, তাতে ভারতীয় গণতন্ত্র, ভারতীয় সংবিধান এবং ভারতীয় সংসদের অপমান হয়েছে। এর জন্য ওঁর সাজা হওয়া উচিত। নিয়ম অনুযায়ী বিষয়টি সংসদের নীতি কমিটিতে গিয়েছে। যাঁকে উনি আইডি, পাসওয়র্ড দিয়েছিলেন, তিনিও স্বীকার করে নিয়েছেন। বিদেশ থেকে ভারতের সংসদে প্রশ্ন আসবে? ভারতীয় গণতন্ত্র এবং জাতীয় নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত ঝুঁকির বিষয়।"



মহুয়া যদিও নিশিকান্তের দাবিকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। তার বক্তব্য, 'টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন বলে প্রথম অভিযোগ করেছিল বিজেপি। কিন্তু মিথ্যা অভিযোগের সপক্ষে প্রমাণ দিতে পারেনি। এখন জাতীয় নিরাপত্তার দোহাই দিচ্ছে, সত্যি!...ওরা আমার মুখ বন্ধ করতে চায়। কিন্তু আমি মুখ বন্ধ করব না। মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে ব্যবসায়ীকে হুমকি দিয়েছে। ওই ব্যবসায়ী নিজেও নগ বা বিল অথবা উপহারের কোনও প্রমাণ দিতে পারেননি। বিজেপি-কে বলব, একজন ভাল চিত্রনাট্যকার নিয়োগ করুন'।