নয়াদিল্লি: ভারতের বিরুদ্ধে বাংলাদেশকে কি ব্যবহার করছে পাকিস্তান? গত কয়েক মাসে দেশের অন্দরে বার বার এই প্রশ্ন ঘুরে ফিরে উঠে এসেছে। কিন্তু এবার কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে বিদেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে এই দাবি করলেন বিজেপি-র রাজ্যসভা সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য। সর্বদলীয় প্রতিনিধি দলের অংশ হিসেবে এই মুহূর্তে প্যারিসে রয়েছেন তিনি। আর সেখানেই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুলেছেন শমীক। (Samik Bhattacharya)
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘাতের আবহে, দিল্লির বার্তা নিয়ে বিদেশে গিয়েছেন শমীক। সেখানে প্রবাসী ভারতীয়দের সামনে সন্ত্রাসদমনে দেশের অবস্থান বোঝাতে গিয়ে বলেন, "কোন পরিস্থিতিতে Operation Sindoor চালাতে হয়, তা আপনারা সকলে জানেন। পাকিস্তান যে কোনও দিন পাল্টাবে না, তা ভাল করেই জানেন।" (India-Pakistan Conflict)
সেখানে উপস্থিত প্রবাসী বাঙালিদের উদ্দেশে শমীক বলেন, "কিছু বাঙালি রয়েছেন দেখছি। আমি নিজেও পশ্চিমবঙ্গ থেকে এসেছি। ২২০০ কিলোমিটারের বেশি দীর্ঘ আন্তর্জাতিক সীমান্ত রয়েছে আমাদের। এখন মরিয়া হয়ে পাকিস্তান বাংলাদেশকে লঞ্চপ্যাড হিসেবে ব্য়বহার করার চেষ্টা করছে, যাতে সন্ত্রাসী কাজকর্ম চালানো যায়, সন্ত্রাসী হামলা চালানো যায়। কোনও ধর্ম মানুষ খুনের কথা বলে না। আমরা বিভাজনের নীতি মেনে চলি না। গোটা দেশ এককাট্টা হয়ে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই করছে।"
পহেলগাঁওয়ে নিরীহ পর্টকদের ধর্ম জেনে খুন করার নেপথ্যে ভারতে বিভাজন ঘটানোই লক্ষ্য ছিল বলেও দাবি করেন শমীক। তাঁর বক্তব্য, "ধর্মপরিচয় জেনে খুন করার উদ্দেশ্য একটাই, ভারতে হিন্দু-মুসলিম বিভাজন ঘটানো, ভারতে দাঙ্গা বাঁধানো। কিন্তু সচেতন ভারতীয় নাগরিকরা সেই প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়েছেন। আমরা বহুত্ববাদী দেশের মানুষ। ভারতে অন্নকেও ব্রহ্মা বলা হয়। শঙ্করাচার্য বলেছেন, অবাঙ্মনসগোচর।"
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘাত নিয়ে কথা বলতে গিয়ে দেশভাগের প্রসঙ্গও টানেন শমীক। বলেন, "পাকিস্তান দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে তৈরি হয়েছিল। সেই দাবি প্রত্যাখ্য়ান করলে গৃহযুদ্ধ হতো। ভারত শান্তি চায়, ভািয়ের রক্তে হাত রাঙাতে চায় না। কিন্তু পাকিস্তান পাল্টাবে না। আজ এখানে এসেছি আমরা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জানিয়ে দিয়েছেন, সন্ত্রাসী হামলার জবাব মিলবেই। সিঁদুরের মূল্য দিতে হয়েছে পাকিস্তানকে। যতই জঙ্গিদের ঠেলে পাঠাক না কেন, ভারতের মানুষ ঐক্যবদ্ধ, ভিন্ন মতাদর্শ সত্ত্বেও সমস্ত রাজনৈতিক দল আজ এখানে এসেছি একসঙ্গে।"
আন্তর্জাতিক মহলে পাকিস্তানকে একঘরে করার বার্তা দেন শমীক। তিনি বলেন, "একটাই কথা আমাদের, পাকিস্তানকে কূটনৈতিক ভাবে একঘরে করতে হবে এবং পাকিস্তানকে জঙ্গি দেশ ঘোষণা করতে হবে। পাকিস্তান নামের কোনও রাষ্ট্র নেই, সেটি একটি সেনাশাসিত অঞ্চল। বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা ভাবলে সন্ত্রাসকে নির্মূল করতে হবে ওদের। অনেক সহ্য করেছে ভারত। উরি, পুলওয়ামার মতো কিছু ঘটনা সামনে এসেছে। কিন্তু প্রায় রোজ কোনও না কোনও ভারতীয় জওয়ান প্রাণ হারান। এর জবাব কে দেবে? শুধু ভারতই নয়, গোটা দেশ আজ সন্ত্রাসের শিকারষ মুক্তির রাস্তা একটাই। সন্ত্রাসের আঁতুড় যে দেশ, যারা সন্ত্রাসের ব্যবসা করে, বিদেশি অনুদানের টাকায় যারা সেনা ও গুপ্তচরের শক্তিবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে জঙ্গিদের আশ্রয় ও প্রশিক্ষণ দেয়। এর বিরুদ্ধে একজোট হতে হবে আমাদের। পাকিস্তানের মুখোশ খুলে দিতে হবে আমাদের।"