নয়াদিল্লি: ৩ কৃষি আইনের বিরুদ্ধে এবার সরব হলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিবাল। বিধানসভার বিশেষ অধিবেশনে তিনি কেন্দ্রের ৩ কৃষি আইনের প্রতিলিপি ছিঁড়ে ফেলেন তিনি। শুধু তাই নয়, বিজেপির বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করেছেন কেজরিবাল। তাঁর অভিযোগ, ৩ আইনের মাধ্যমে নির্বাচনের খরচ তুলবে বিজেপি।

এদিন বিধানসভায় কৃষি আইনের প্রতিলিপি ছিঁড়ে ফেলেন অরবিন্দ কেজরিবাল। তিনি বলেন, গত কয়েক বছরে নির্বাচনের খরচ বাড়িয়েছে বিজেপি। এই ৩ আইনের মাধ্যমে নির্বাচনের খরচ তুলবে গেরুয়া শিবির। বিজেপি বলছে কৃষকরা দেশের যে কোনও প্রান্তে ফসল বিক্রি করতে পারবেন। দেশে ধানের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য ১ হাজার ৮৬৮ টাকা। উত্তরপ্রদেশ এবং বিহারে ৯০০ থেকে ১০০০ টাকায় ধান বিক্রি হয়। কৃষকরা কোথায় তাঁদের ফসল বিক্রি কর আয় করবেন? প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, আসলে কৃষকরা সারা দেশে ফসল বিক্রি করতে পারবেন না। কোনও শিল্পপতি এই ফসল কিনে বিপুল দামে বিক্রি করবেন।

ক্ষোভ উগরে দিয়ে অরবিন্দ কেজরিবাল বলেন, আন্দোলনে ২০ জন কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। আমি কেন্দ্রের কাছে জানতে চাই, ঠিক কতজনের মৃত্যু হলে আপনাদের টনক নড়বে? ১৯০৭ সালে ঠিক এইভাবে কৃষি আইনের বিরুদ্ধে পথে নেমেছিল কৃষকরা। প্রায় ৯ মাস আন্দোলন করেছিলেন তাঁরা।  সেই সময় আন্দোলনের চাপে পড়ে কৃষকদের দাবি মেনে নিয়েছিল ব্রিটিশরা। ৩ আইন পুনর্বিবেচনা করেন তাঁরা। এই আন্দোলনে প্রথম সারিতে ছিলেন, ভগৎ সিংহের বাবা কিশোরী সিংহ এবং কাকা অজিত সিংহ।

কেন্দ্রের ৩ কৃষি আইনের বিরোধিতায় নেমে কেজরিবাল বলেছেন, বিজেপি শুধু কৃষকদেরই নয়, দলের কর্মীদেরও বোকা বানাচ্ছে। কেন্দ্র বলছে কৃষকরা কৃষি আইনের সুবিধা বুঝতে পারছেন না। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বলছেন, বড়েলির কৃষকদের জমি কেড়ে নেওয়া হবে না। এটা কি তাঁদের জন্য বাড়তি কোনও সুবিধা? সুপ্রিম কোর্টেও আইনজীবী জানিয়েছেন কৃষকদের আন্দোলন যুক্তিসঙ্গত। তাঁর কথায়, দেশের ভিত কৃষকরা। রাজ্যসভায় ভোটাভুটি ছাড়াই পাশ হয়ে গেল ৩ কৃষি বিল। কৃষকদের তাঁদের সুবিধা নিয়ে সরকারের ছেলেখেলা করা উচিত না।

উল্লেখ্য, গত ২৬ নভেম্বর থেকে ৩ কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে রাস্তায় নেমেছেন কৃষকরা। রাজধানীর কনকনে ঠান্ডায় রাস্তায় বসে আছেন তাঁরা। দফায় দফায় কেন্দ্রের সঙ্গে বৈঠকে মেলেনি সমাধান সূত্র। খোদ অমিত শাহ আসরে নামলেও অনমনীয় কৃষকরা। তাঁদের আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছেন দেশ বিদেশে রাষ্ট্র প্রধানরা। সংহতি জানাচ্ছে বিরেধী দলগুলিও।