রানা দাস, কমলকৃষ্ণ দে ও মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, গলসি : মুকুল রায়ের তৃণমূলে প্রত্যাবর্তনের পর এবার বেসুরো সুনীল মণ্ডল। বিজেপি নেতৃত্বের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগে সরব হলেন বর্ধমান পূর্বের সাংসদ।


তিনি বলেছেন, "যাঁরা তৃণমূল থেকে গেছেন, বিজেপি তাঁদের মানতে পারছে না। ঠিক সহ্য করতে পারছে না। সমঝোতায় গন্ডগোল হচ্ছে। বিজেপি মনে করছে এদের বিশ্বাস করা ঠিক হচ্ছে না। তথাগত যে কথাগুলো বলেছেন, অন্যায় বলেছেন। দিলীপ ঘোষও সেটা বলেছেন। এগুলো রাজনৈতিক কথা নয়। পচা শামুকে পা কাটে। একটা ভোটের অনেক দাম। প্রবাসী যাঁরা এসেছিলেন, তাঁরা বাংলার কী বুঝবেন ? বাংলার সেন্স আছে তাঁদের ? ভোটের আগে এসে তাঁরা বাংলার মানুষের মন জয় করবেন ? এই জায়গাটা আমি ঠিক ভাবিনি।"


একইসঙ্গে শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধেও তোপ দাগেন তিনি। বলেন, "শুভেন্দু সম্বন্ধে আমি একটা কথাও বলব না। শুভেন্দু সর্বপ্রথম আমার বাড়িতে এসেছিল। আমার কাছে যা প্রতিজ্ঞা করেছিল, তার একটাও অক্ষর মানেনি। সেদিন শুভেন্দু বলেছিল, দুই দাদা-ভাই একসঙ্গে সাংগঠনিক নেতৃত্বে আসব।"


বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের রণকৌশল নিয়ে প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধেও ক্ষোভ উগড়ে দেওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, এবার কি তাহলে সুনীলও রাজনৈতিক অবস্থান বদল করতে চলেছেন ? যদিও এনিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন কাটোয়ার তৃণমূল বিধায়ক তথা বর্ষীয়ান রাজনীতিক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, "বিজেপি হেরে যাওয়ায় সুনীল মণ্ডলের মোহ ভেঙেছে। তাই দলে ফিরে আসার ধান্দা করছেন। এইসব মানুষ তৃণমূলে থাকার যোগ্য নন বলে মনে করি।"


প্রসঙ্গত, গত বিধানসভা ভোটের সময় কাটোয়ায় সভা করতে গিয়ে রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়কে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেছিলেন বিজেপি নেতা সুনীল মণ্ডল। তিনি বলেছিলেন, নির্বাচনের পর কাটোয়ায় তৃণমূল প্রার্থী রবি চ্যাটার্জীর বিচার হবে। কাটোয়া ছেড়ে যাতে পালাতে না পারেন, সেজন্য বিজেপি কর্মীরা কাটোয়া শহর ঘুরে রাখুন।


এখন বিজেপির অভ্যন্তরে সুনীলের বেসুরো হওয়া এবং তৃণমূলে ফেরার জল্পনায় রীতিমতো অসন্তুষ্ট কাটোয়ার ৬ বারের বিধায়ক। তৃণমূল বিধায়ক ও কাটোয়ার পুর প্রশাসক বলেন, যেটুকু জানি সুনীল মণ্ডল সম্পর্কে অনেক আগে থেকেই খারাপ ধারনা পোষণ করতেন মুখ্যমন্ত্রী। যার বিরুদ্ধে দলত্যাগ বিরোধী আইনের জন্য লোকসভায় চিঠি দিয়েছে, আমার মনে হয় তাঁকে দলে ফিরিয়ে নেবে না।