নয়াদিল্লি: গাড়ি বিস্ফোরণের পর তিন দিন পার। দিল্লিতে এখনও মিলছে নিহতদের দেহাংশ। বিস্ফোরণস্থলের পাশে, জৈন মন্দিরের পিছন থেকে দেহাংশ মিশেছে আগেই। এবার দেহাংশ মিলল বিস্ফোরণস্থল থেকে বেশ কিছুটা দূরে, একটি দোকানের ছাদ থেকেও। বিস্ফোরণের তীব্রতায় ছিন্নভিন্ন হয়ে যাওয়া মানুষের দেহাংশ দূরে ছিটকে পড়ে বলে মনে করা হচ্ছে। এলাকা ঘিরে দেহাংশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। খবর দেওয়া হয় ফরেন্সিক বিভাগকে। (Delhi Blast News)
দিল্লিতে গাড়ি বিস্ফোরণের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১৩ জন মারা গিয়েছেন। আহতদের অনেকে এখনও হাসপাতালে বর্তি। সেই আবহেও দেহাংশ মিলেই চলেছে। বৃহস্পতিবার নিউ লাজপত রাই মার্কেটের একটি দোকানের ছাদ থেকে একটি হাত উদ্ধার করেছে দিল্লি পুলিশ। কনুইয়ের নীচের অংশ থেকে হাতটি শরীর থেকে ছিন্ন হয়ে যায়। বিস্ফোরণস্থল থেকে ওই দোকানটির দূরত্ব ৩০০ মিটার। (Red Fort Blast)
এদিন হাতটি উদ্ধারের পর ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য সেটি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। আরও দেহাংশের খোঁজে চলছে তল্লাশি। তদন্তকারীদের মতে, উচ্চমানের বিস্ফোরক ব্য়বহার করে বিস্ফোরণ ঘটানো হয় লালকেল্লার কাছে। ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরির আধিকারিকরা জানিয়েছেন, বিস্ফোরণস্থল থেকে যে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে, তা অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী।
ফরেন্সিক আধিকারিকরা জানিয়েছেন, বিস্ফোরণস্থল থেকে ৪০টিরও বেশি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে, যার মধ্যে দু'টি কার্তুজ, বিস্ফোরকও রয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে একটি নমুনায় অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট পাওয়া গিয়েছে বলে খবর। ময়নাতদন্তে দেখা গিয়েছে, নিহতদের শরীরের ভিতরের অংশও কার্যত ছিঁডেখুঁড়ে গিয়েছিল। ফুসফুস ফেটে যায় কারও, কারও কানের পর্দা, কারও আবার অন্ত্র ফেটে যায়। অত্যধিক রক্তক্ষরণে মারা যান অনেকে। মৃতের সংখ্যা আরও এক বেড়ে ১৩ হয়েছে। ৩৫ বছর বয়সি বিলাল হাসান মারা গিয়েছেন হাসপাতালে। ভেন্টিলেটরে ছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।
এর আগে, বিস্ফোরণের একদিন পরই বিস্ফোরণের এক দিন পর, চাঁদনি চক এলাকায় একটি জৈন মন্দিরের পিছন থেকে দেহাংশ উদ্ধার হয়। মন্দিরের পুরোহিত সংবাদমাধ্যমে বলেন, “কিছু দেহাংশ মন্দিরের ফটক পর্যন্ত ছিটকে আসে। মানুষজন কাঁদছিলেন। কী করণীয়, বুঝতে পারছিলেন না কেউ।”
দিল্লি বিস্ফোরণে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে। জানা যাচ্ছে, বিস্ফোরণের দিন সকালেই দিল্লি চলে আসে উমর। সকাল ৮টায় বদরপুর সীমানায় দেখা যায় তাকে। টোলপ্লাজার সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে উমরকে। উমরের গাড়ির পিছনের আসনে রাখা ব্যাগ ঘিরে রহস্য। দুপুর ২ নাগাদ উমরের গাড়ি দেখা যায় কনাট প্লেসে। কনাট প্লেসের সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়েছে উমরের গাড়ির ছবি। কনাট প্লেস থেকে সংসদ ভবনের দূরত্ব মাত্র ৩ কিলোমিটার। দিল্লির হাই সিকিওরিটি জোনে গাড়ি নিয়ে অবাধে ঘুরতে দেখা যায় উমরকে। এরপর লালকেল্লার পার্কিং লটে পৌঁছয় উমর। লালকেল্লা পার্কিং লটের বাইরে উমরের ছবি ধরা পড়েছে সিসি ক্যামেরায়। ১০ নভেম্বর দিল্লি বিস্ফোরণকাণ্ড কি হিমশৈলের চূড়া? আগামী ৬ ডিসেম্বর কি বড়মাপের কোনও হামলা চালানোর পরিকল্পনা ছিল জঙ্গিদের? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন গোয়েন্দারা।