নয়াদিল্লি: চর্চার কেন্দ্রে বয়েজ লকার রুম। মূলত টিন-এজার ছেলেদের তৈরি এই ইনস্টাগ্রাম গ্রুপের আলোচ্য বিষয় ছিল গণধর্ষণ! মেয়েদের কীভাবে ধর্ষণ করা যায়, তাই নিয়ে দিনভর আলোচনা-পরিকল্পনা চলত গ্রুপে। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই নড়েচড়ে বসেছিল সারা দেশ। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করে। ইনস্টাগ্রামকে চিঠি লিখে ঘটনাটি খতিয়ে দেখার আর্জি জানায় দিল্লির মহিলা কমিশন।
গ্রুপের এক সদস্য গ্রুপের বাইরে একজনকে একটি অশ্লীল মন্তব্যের স্ক্রিনশট শেয়ার করার পরই এটি প্রকাশ্যে চলে আসে। গ্রুপে রয়েছে একাধিক পর্নোগ্রাফিক তত্ত্বও।
অবশেষে বুধবার পুলিশের জালে গ্রুপের অ্যাডমিন। মাত্র ১৮ বছর বয়স তার। দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র।
তাঁর কথার সূত্র ধরে গ্রুপের বিভিন্ন সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এঁদের বেশিরভাগেরই বয়স ১৮র কম। তাই বাড়িতেই বাবা-মায়ের সামনে এনজিও-র সদস্যরা তাদের প্রশ্ন করবেন।
এই গ্রুপের প্রাক্তন সদস্য হরিশ খান, যে এই গ্রুপের কীর্তি প্রকাশ্যে আনতেও সাহায্য করে মুখ খুলেছে সংবাদমাধ্যমের কাছে। সে জানিয়েছে, গ্রুপে আছে ২০ জনেরও বেশি ছেলে। একদিন ওই গ্রুপের এক সদস্য চ্যাটে একটি মেয়ের বিকৃত ছবি দেখে। সেই ছবির স্ক্রিন শট সে মেয়েটিকে ও হরিশকে পাঠায়।
হরিশের দাবি, তখন তার মনে হয় ওই গ্রুপের সমস্ত খবর সেইসব মেয়েদের জানা দরকার, যাদের ছবি বিকৃত করা হয়েছে বা যাদের নিয়ে ওই গ্রুপে আপত্তিকর আলোচনা হয়।
হরিশের কথায়, 'আমার তখন মনে হল, সেইসব মেয়েদেরও বিষয়টি জানা দরকার, যে তাদের ছবি নিয়ে গ্রুপে কী কী ঘটছে। তখন আমি অন্য একটা গ্রুপ তৈরি করি। সেখানে আইডি দেখে দেখে ওই মেয়েদেরও যুক্ত করি, যাদের ছবি বিকৃত করে ওই গ্রুপে দেওয়া হয়েছে। ১০ জন মেয়েকে আমি যোগাযোগ করতে পারি ও বিষয়টি জানাই। তারা তখন এত ভয় পেয়ে যায় যে, বলে, আর কোনও ছবি কখনও আপলোড করবে না।'
' ওই গ্রুপে মেয়েদের বিকৃত ছবি দেখে শতাধিক অশ্লীল কমেন্ট আসত।...গ্রুপের ছেলেরা একে অপরকে চিনত না। সকলেই মোটামুটি অপ্রাপ্তবয়ষ্ক। ', জানায় হরিশ।
সেইসঙ্গে তার মত, কোনও খারাপ উদ্দেশ্য নিয়ে প্রথমে গ্রুপটি তৈরি হয়নি। বরং 'মজা করার জন্য' গ্রুপ তৈরি হয়। সে আরও জানায়, তার কাজ শেষ হতেই গ্রুপ ছেড়ে দেয় সে। কিন্তু কী করে পুলিশের খাতায় তার নাম এল, সে জানে না।