মুম্বই: ধর্ষণের শিকার বালিকাকে গর্ভপাতের অনুমতি দিল বম্বে হাইকোর্ট। ১১ বছরের মেয়েটি কয়েক মাস আগে ধর্ষণের শিকার হয়। বর্তমানে অন্তঃসত্ত্বা মেয়েটি। সেই অবস্থায় ৩০ সপ্তাহ কেটে গিয়েছে। গত কয়েক দিন ধরেই সেই নিয়ে বিচার-বিশ্লেষণ চলছিল। আদালত চিকিৎসকরা জানান, শারীরিক এবং মানসিক ভাবে গর্ভপাতের ধকল সহ্য করতে সক্ষম মেয়েটি। এর পরই গর্ভপাতে অনুমতি দেয় আদালত। (Bombay High Court)
বম্বে হাইকোর্টের বিচারপতি শর্মিলা দেশমুখ এবং বিচারপতি জিতেন্দ্র জৈনর বেঞ্চ মেয়েটিকে গর্ভপাতের অনুমতি দিয়েছে। গর্ভপাতের অনুমতি চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মেয়েটির বাবা। আদালতে তিনি জানান, মেয়ের পেট দিন দিন শক্ত হলেও, তাঁরা ব্যাপারটা আঁচ করতে পারেননি। ভেবেছিলেন পেটে কোনও সংক্রমণ হয়েছে। (Rape Survivor Abortion)
এমনকি ঠাণের একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে, মেয়েটিকে সেই মতো ওষুধও দেওয়া হয়। কিন্তু নিয়ম করে সেই ওষুধ খাওয়ার পরও পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। এর পর মুম্বইয়ের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় মেয়েটিকে। সেখানে মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা বলে ধরা পড়ে। এর পর অজ্ঞাত পরিচয় ধর্ষকের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন মেয়েটির বাবা। অন্তঃসত্ত্বা মেয়েকে নিয়ে এর পর আদালতে যান তিনি।
ধর্ষণ, যৌন নির্যাতনের ঘটনায় ২০ সপ্তাহ কেটে যাওয়ার পর গর্ভপাতের ক্ষেত্রে আদালতের অনুমতি লাগে। সেই মতোই আদালতের দ্বারস্থ হন মেয়েটির বাবা। তিনি নিজেও পেশায় চিকিৎসক বলে জানা গিয়েছে। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার অনুচ্ছেদ ৬৫ (২) (১২ বছরের কময় বয়সি মেয়েকে ধর্ষণে শাস্তি), POCSO আইনের অনুচ্ছেদ ৪ (সঙ্গমের মাধ্যমে যৌন নির্যাতন)-এর আওতায় মামলা দায়ের হয়েছিল।
মেয়েটির গর্ভপাতে অনুমতি দিলেও, আদালত জানিয়েছে, রক্ত এবং টিস্যুর নমুনা সংরক্ষণ করতে হবে, যাতে পরবর্তীতে DNA পরীক্ষায় সুবিধা হয়। অপরাধ মামলার তদন্তে তা কাজে লাগবে বলে জানিয়েছে আদালত। আদালত আরও জানিয়েছে, মেয়েটির গর্ভে থাকা সন্তান যদি জীবিত থাকে এবং পরিবার যদি তার দায়িত্ব নিয়ে ইচ্ছুক না হয় অথবা অসমর্থ হয়, সেক্ষেত্রে রাজ্য সরকারকে দায়িত্ব নিতে হবে।
আদালত পরিষ্কার জানিয়েছে, মেয়েটির গর্ভস্থ সন্তান যদি জীবিত থাকে, সেক্ষেত্রে পরবর্তী দায়-দায়িত্ব সরকারের কাঁধেই বর্তাবে। চিকিৎসা সংক্রান্ত যাবতীয় খরচ-খরচা রাজ্য সরকারকেই চালাতে হবে। শিশুটির জীবন বাঁচানোর জন্য যা যা করণীয় করতে হবে সরকারকে। আদালত জানিয়েছে, মেয়েটির জীবনের প্রশ্ন জড়িয়ে রয়েছে বলেই গর্ভপাতে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। গত ২৮ অক্টোবর আদালতের দ্বারস্থ হয় মেয়েটি, বাবার মাধ্যমে আবেদন জানায়। বিশেষ পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই মেয়েটিকে গর্ভপাতে অনুমতি দিয়েছে আদালত।