আমদাবাদ: গুজরাতে বাবাসাহেব অম্বেডকরের মূর্তি ভাঙা হল। সোমবার আমদগাবাদে অম্বেডকরের মূর্তি ভাঙচুর করা হয়। সেই নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। এই ঘটনায় অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে দুষ্কৃতীদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। (Ambedkar Statue Vandalised)
সোমবার সকালে আমদাবাদের কোখরা এলাকায়, শ্রী কেকে শাস্ত্রী কলেজের সামনে বসানো অম্বেডকরের মূর্তিটি ভাঙচুর করা হয়। সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মূর্তি ভাঙার খবর জানিয়েছেন পুলিশ ইনস্পেক্টর এনকে রাবাড়ি। তিনি জানিয়েছেন, অম্বেডকরের মূর্তির নাক ভেঙে দেওয়া হয়েছে। ভেঙে দেওয়া হয়েছে চশমাও। (BR Ambedkar)
গোটা ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে এলাকায়। অম্বেডকরের মূর্তি ভাঙার প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছেন স্থানীয়রা। দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন। সম্প্রতি মহারাষ্ট্রের পরভণীতে কাচের বাক্সে রাখা সংসদের প্রতিলিপি ধ্বংস করে দুষ্কৃতীরা। সেই নিয়ে ধুন্ধুমার বাধে সেখানে। কমপক্ষে ৫০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে হিংসার ঘটনায়। এর মধ্যে বুকের যন্ত্রণায় সোমনাথ সূর্যবংশী নামের একজন মারাও যান। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট বলছে, আঘাত থেকেই মৃত্যু হয় সোমনাথের। সোমবার তাঁর পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গাঁধী। সোমনাথ দলিত ছিলেন, হেফাজতে তাঁকে খুন করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
সেই আবহেই এবার গুজরাতে অম্বেডকরের মূর্তিতে ভাঙচুর চালানো হল। এই ঘটনায় ভারতীয় ন্যায় সংহিতার একাধিক ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে। মামলা দায়ের হয়েছে ১৯৬ (জাতি, ধর্মের নিরিখে বিবিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে শত্রুতায় ইন্ধন), ২৯৮ (শ্রেণির আবেগে আঘাত হানা) ধারাতেও। অম্বেডকরের মূর্তি ভাঙচুরের ঘটনায় সরব হয়েছে বিরোধীরাও। তৃণমূলের বক্তব্য, 'কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সংসদে দাঁড়িয়ে বাবাসাহেব অম্বেডকরকে অপমান করেছেন। অনুশোচনার পরিবর্তে সাফাই দিতে ব্যস্ত থেকেছেন অমিত শাহ। আর এবার মোদি-শাহর রাজ্যে অম্বেডকরের মূর্তি ভাঙা হল'। এর পাল্টা বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেন, কংগ্রেস এবং তৃণমূলই সবচেয়ে বেশি অপমান করেছেন অম্বেডকরকে।
কংগ্রেস বিধায়ক জিগনেশ মেবানি বলেন, "কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বাবাসাহেব অম্বেডকরকে নিয়ে সংসদে যে মন্তব্য করেছেন, তার পর গুজরাত-সহ দেশ জুড়ে দলিতদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ বেড়েছে। হাতুড়ি দিয়ে অম্বেডকরের মূর্তি পুরোপুরি ভেঙে ফেলার চেষ্টা হয়। যদিও নাক আর চশমাই ভাঙা হয়েছে। ইচ্ছাকৃত ভাবেই গোটা ঘটনা ঘটানো হয়েছে। বিজেপি-র সংবিধান বিরোধী মানসিকতাই এই ধরনের ঘটনায় উস্কানি জোগাচ্ছে।" সম্প্রতি সংসদে অম্বেডকরকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেন অমিত শাহ। তার পর থেকেই এমন ঘটনা ঘটে চলেছে বলে দাবি বিরোধীদের।