কলকাতা : প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা আইপ্যাক-এর ২৩ জন কর্মীকে ত্রিপুরা পুলিশ হোটেলে আটকে রেখেছে বলে গতকালই অভিযোগ তুলেছিল তৃণমূল। সেই ঘটনার ৪৮ ঘণ্টা কাটতে না কাটতে সামগ্রিক পরিস্থিতির খবর নিতে কাল ত্রিপুরায় যাচ্ছে তৃণমূলের একটি প্রতিনিধিদল। সেই দলে থাকছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা ব্রাত্য বসু, আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক ও তৃণমূল নেতা ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়।


পশ্চিমবঙ্গে তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার পরেই দিল্লি দখলের প্রস্তুতি শুরু করেছে তৃণমূল। রাজ্যের শাসক দলের তরফে বলা হয়েছে, রাজ্য ছাড়িয়ে এবার জাতীয় স্তরে জয়ই লক্ষ্য দলের। সম্প্রতি সেই জয়ের লক্ষ্যে শুরু হয়েছে রাজনীতির সলতে পাকানো। দলের ভোট কৌশলী পিকে-কে নিয়ে পরিকল্পনা শুরু করেছেন তৃণমূল নেত্রী। ২০২৪ সালে লোকসভা নির্বাচনের আগে ধাপে ধাপে এগোতে চাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্প্রতি সেই পরিকল্পনামাফিক ত্রিপুরায় গিয়েছে টিম আইপ্যাক-এর সদস্যরা।


কিন্তু তৃণমূলের অভিযোগ, প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা আইপ্যাক-এর ২৩ জন কর্মীকে হোটেলে আটকে রেখেছে পুলিশ। ২০২৩ সালে বিধানসভা নির্বাচন হতে চলেছে বিজেপি শাসিত ত্রিপুরায়। তার আগে প্রতিবেশী রাজ্যে 'পলিটিক্যাল রেকি' করতে গিয়েছে পিকে-র টিম।


যদিও আইপ্যাক-এর কর্মীদের হোটেলে আটকে রাখার অভিযোগ নিয়ে সাফাই দিয়েছেন পশ্চিম ত্রিপুরার পুলিশ মৈনাক দাস। সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে তিনি বলেছেন, ‘করোনা পরিস্থিতিতে বহিরাগত ২৩ জন রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। রাজ্যে এখন করোনার বিধিনিষেধ চলেছ। তাই তাদের এখানে আসার ও থাকার কারণ সম্পর্কে জানার চেষ্টা চলছে। সোমবারই তাঁদের করোনা পরীক্ষা হয়েছে। এখনও তাঁদের রিপোর্ট আসা বাকি।’ উল্লেখ্য, আজ তাঁদের করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। 




এই ঘটনার প্রসঙ্গে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "লোকসভা তো এখন দেরি আছে, কিন্তু প্ল্যানিং তো এখন থেকেই করতে হয়। ত্রিপুরায় আমাদের ছেলেদের হাউস অ্যারেস্ট করেছে। এটা ঠিক নয়।"



অন্যদিকে ঘটনা প্রসঙ্গে ব্রাত্য বসু বলেন, "আইপ্যাকের ছেলেদের যেভাবে সরকার আটকে রেখেছে, সেই অবস্থা ভাল নয়। অবস্থা অগ্নিগর্ভ। যেভাবে গণতন্ত্র লুঠ হচ্ছে, সেটা দেখার জন্য আমরা কাল যাচ্ছি।"


এদিকে ঘটনা নিয়ে সুর চড়িয়েছেন ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারও। তিনি বলেন, "যে ঘটনা ঘটেছে সেটা শুধু অরাজকতা না, জঙ্গলের শাসনকেও ছাড়িয়ে গেছে। একটা ভীতি তৈরি হয়েছে। কারণ, জনগণ আর সরকারের পাশে থাকছে না। পায়ের তলার মাটি সরে যাচ্ছে।"