নয়াদিল্লি : গত বছর জুলাইয়ে দায়িত্ব গ্রহণের পর এই প্রথম ভারত সফর। পরের সপ্তাহেই দুই দিনের সফরে ভারত আসছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মার। আগামী ৮ ও ৯ অক্টোবর সফর করবেন তিনি। উভয় দেশের মধ্যে মজবুত পার্টনারশিপ গড়ার লক্ষ্যে যা একপ্রকার "মূল্যবান সুযোগ" বলে বর্ণনা করছে ভারতের বিদেশমন্ত্রক। অক্টোবরের ৯ তারিখে মুম্বইয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বিস্তৃত আলোচনা করবেন স্টার্মার।
গত জুলাই মাসে ব্রিটেনের সঙ্গে ৯৯ শতাংশ শুল্কমুক্ত বাণিজ্যচুক্তি স্বাক্ষর করেছে ভারত। সবমিলিয়ে ২০০ কোটি পাউন্ডের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে দুই দেশের মধ্যে। এই চুক্তির ফলে কোনও রকম শুল্ক ছাড়া ব্রিটেনের বাজারে ভারতের ৯৯ শতাংশ রফতানি যোগ্য পণ্য পৌঁছানোর সিদ্ধান্ত হয়। এতে ভারতের কৃষক, ছোট ব্যবসায়ীরা যেমন উপকৃত হবেন, তেমনই ব্রিটেনে কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়বে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মারের সাক্ষাতের পর দুই দেশের মধ্যে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তির ফলে উপকৃত হবেন পশ্চিমবঙ্গের কৃষক, শিল্পী এবং ব্যবসায়ীরাও।
ভারত-ব্রিটেন ৯৯ শতাংশ শুল্কমুক্ত বাণিজ্যচুক্তির আওতায় দেশের বিভিন্ন রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল থেকে ব্রিটেনে পণ্য যাওয়ার কথা ঠিক হয়। পশ্চিমবঙ্গ থেকে ব্রিটেনে রফতানি করার জন্য বাছা হয় বালুচরী শাড়ি, দার্জিলিংয়ের চা, বঙ্গীয় ঘরানার নতুনগ্রামের কাঠের পুতুল এবং শান্তিকেতনের চামড়া। তামিলনাড়ু থেকে কাঞ্জিভরম শাড়ি, ত্রিপুরের উলের বস্ত্র, হলুদ, তাঞ্জভুরের পুতুল, ভেলোরের চপ্পল এবং তথ্য ও প্রযুক্তি সামগ্রী বাছা হয়। কেরল থেকে প্রাকৃতিক ও প্রসেসড রবার, হলুদ। জম্মু ও কাশ্মীর থেকে রয়েছে পশমিনা শল, বাসমতি চাল, কাশ্মীরের কেশর, কাশ্মীরে কাঠের তৈরি ব্যাট।
বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে যে, দুই প্রধানমন্ত্রী তাঁদের আলোচনায় 'ভিসন ২০৩৫'-এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ভারত-ব্রিটেন কৌশলগত পার্টনারশিপের বিভিন্ন দিকের উন্নতি পর্যালোচনা করবেন, যা ১০ বছরের রোডম্যাপ। এই রোডম্যাপের মূল স্তম্ভগুলি হল- বাণিজ্য, বিনিয়োগ, প্রযুক্তি, প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা, জলবায়ু, বিদ্যুৎ, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক।
আঞ্চলিক ও বিশ্বের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়েও দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে কথা হবে বলে জানিয়েছে বিদেশ মন্ত্রক। মুম্বইয়ে Global Fintech Fest-এর ষষ্ঠ সংস্করণে যোগ দেবেন মোদি ও স্টার্মার। এর পাশাপাশি দুই রাষ্ট্রনেতা শিল্প বিশেষজ্ঞ, নীতিনির্ধারক এবং উদ্ভাবকদের সঙ্গেও আলোচনা করবেন।