নয়াদিল্লি: রাতারাতি সীমান্ত রক্ষী বাহিনীতে (BSF) বড় পরিবর্তন। BSF-এর ডিরেক্টর জেনারেল নিতিন আগরওয়াল এবং তাঁর ডেপুটি, স্পেশ্যাল ডিজি (ওয়েস্ট) ওয়াই বি খুরানাকে পদ থেকে সরানো হল। অবিলম্বে তাঁদের রাজ্য ক্যাডারে ফিরে যেতে বলা হয়েছে। রাতারাতি কেন এমন নির্দেশ দেওয়া হল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে বিষয়টি নিয়ে জলঘোলা শুরু হয়েছে। (Border Security Force)
নিতিন ১৯৮৯ সালের কেরল ক্যাডারের অফিসার। খুরানা ১৯৯০ সালের ওড়িশা ক্যাডারের। ২০২৩ সালের জুন মাস থেকে BSF প্রধান হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন নিতিন। পাকিস্তান সীমান্ত বরাবর নিরাপত্তা, বাহিনী মোতায়েনের দায়িত্বে ছিলেন খুরানা। হঠাৎ কেন দু'জনকেই সরানো হল, সেই নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। তবে কেন্দ্রের তরফে বিশদে কিছু জানানো হয়নি এখনও পর্যন্ত। (BSF News)
BSF প্রধান এবং তাঁর ডেপুটিকে সরাতে গতকালেই নির্দেশিকা জারি হয়। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার নিয়োগ কমিটির তরফে মেয়াদ শেষের আগেই, অবিলম্বে দু'জনকে পদ থেকে সরাতে বলা হয় তাতে। তবে কেন্দ্র কিছু খোলসা না করলেও, আন্তর্জাতিক সীমান্ত দিয়ে যেভাবে অনুপ্রবেশের ঘটনা লাগাতার বেড়ে চলেছে, তা মাথায় রেখেই দু'জনকে পদ থেকে সরানো হয়েছে বলে গুঞ্জন দিল্লিতে।
দিল্লি সূত্রে জানা গিয়েছে, BSF প্রধান এবং তাঁর ডেপুটির বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ জমা পড়ে। দেশের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে বাকিদের সঙ্গে তাঁরা সমন্বয় বজায় রাখছিলেন না বলেও অভিযোগ সামনে আসে। অন্য নিরাপত্তা সংস্থাগুলিকে যথা সময়ে প্রয়োজনীয় তথ্য না দেওয়ার অভিযোগও ছিল। শুধু তাই নয়, বাহিনীর অন্দরে তাঁদের নিয়ন্ত্রণ কতটা, সেই নিয়েও প্রশ্ন উঠছিল।
রাতারাতি এভাবে দুই অফিসারকে সরিয়ে কেন্দ্র বাহিনীকে কড়া বার্তা দিল বলেও মনে করছেন নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, আন্তর্জাতিক সীমান্তের নিরাপত্তা BSF-এর হাতে। অথচ লাগাতার অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটে চলেছে। একের পর এক নাশকতামূলক ঘটনা ঘটছে জম্মু ও কাশ্মীরে। ঘটে চলেছে প্রাণহানি। বাংলাদেশ থেকে বেআইনি অনুপ্রবেশ নিয়ে সংসদে সরব হয়েছেন খোদ বিজেপি সাংসদরাই। তাই এমন সিদ্ধান্ত বলে মত তাঁদের। কিন্তু অভিযোগ যখন ছিল, সেক্ষেত্রে এত দেরিতে কেন সিদ্ধান্ত নেওয়া হল, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
দিল্লি সূত্রে যা খবর, সেই অনুযায়ী, সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় এই প্রথম কোনও বাহিনীর প্রধানকে পদ থেকে সরানো হল। ২০১৯ সালে পুলওয়ামা হামলার পরও এমন পদক্ষেপ করা হয়নি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সেবার দায় চাপায়নি কোনও আধিকারিকের উপরই। এই মুহূর্তে এই BSF-এ ২ লক্ষ ৬৫ হাজার কর্মী রয়েছেন। ভারত-পাকিস্তান এবং ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত পাহারা দেয় BSF-ই।
গত দু'মাসে জম্মু ও কাশ্মীরে পর পর জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটেছে, যাতে বহু মানুষ এবং জওয়ান প্রাণ হারিয়েছেন। নিহত জঙ্গিদের কাছ থেকে অত্যাধুনিক বিদেশি অস্ত্রশস্ত্র পাওয়া গিয়েছে। সীমান্তে আঁটোসাটো নিরাপত্তা থাকা সত্ত্বেও, কী করে জঙ্গিরা অনুপ্রবেশ ঘটাচ্ছে, সেই নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে কেন্দ্রকে। সেই আবহেই BSF প্রধান এবং তাঁর ডেপুটিকে সরিয়ে দেওয়া হল।