কমলকৃষ্ণ দে, বর্ধমান : বর্ধমান পুরসভার উপ প্রশাসকের অপসারণের দাবিতে তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরেই বিক্ষোভ অব্যাহত। শনিবার শহরের বিভিন্ন জায়গায় অবরোধ করে শাসক দলের একাংশ। আর এনিয়ে কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছে বিজেপি। যদিও এই ঘটনায় গোষ্ঠী দ্বন্দ্বের তত্ত্ব মানতে নারাজ জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।


অবিলম্বে সরাতে হবে সদ্য নিযুক্ত উপ পুর প্রশাসক আইনুল হককে। এই দাবিতে তৃণমূলের অন্দরেই বিক্ষোভ ক্রমশ জোরাল হচ্ছে। শনিবারও বর্ধমান শহরের একাধিক এলাকায় চলে অবরোধ-বিক্ষোভ। ওই দিন বিকেলে কার্জন গেট, পার্কাস রোড মোড়, পুরসভার সামনে, বিবেকানন্দ কলেজ মোড়-সহ একাধিক জায়গায় পথ অবরোধ করে তৃণমূলের বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠী। রথতলায় ২ নম্বর জাতীয় সড়কেও টায়ার জ্বালিয়ে চলে বিক্ষোভ। তবে কোনও ক্ষেত্রেই ছিল না দলের পতাকা।


১৭ অগাস্ট বর্ধমান পুরসভার দায়িত্ব নেয় ৫ সদস্যের প্রশাসকমণ্ডলী। উপ পুর প্রশাসক হন তৃণমূল নেতা আইনুল হক। আর সেদিন থেকেই তাঁর বিরোধিতায় নামে দলেরই একাংশ। দাবি তোলা হয়, একদা সিপিএমের দাপুটে নেতাকে পদ থেকে অপসারিত করতে হবে। যদিও, তাঁর বিরুদ্ধে চলা বিক্ষোভকে আমল দিচ্ছেন না উপ পুর প্রশাসক। তিনি বলেন, দলের সর্বোচ্চ নেত্রী আমাকে এই দায়িত্ব দিয়েছেন। তাই এবিষয়ে বলার কিছু নেই, অবরোধ করা তো মুখ্যমন্ত্রীরই বারণ আছে, দল বুঝবে।


এনিয়ে অবশ্য কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। গেরুয়া শিবিরের তরফে বর্ধমান দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের আহ্বায়ক কল্লোল নন্দন বলেন, কার্জন গেট সহ শহরের বিভিন্ন জায়গায় অবরোধ করে মানুষের ভোগান্তি বাড়ানো হল। যে প্রশাক এতদিন ধরে বিজেপির ৪০ জনের মিটিং হলে আটকে দিয়েছে, সেখানে এতজনের বিশৃঙ্খলা প্রশাসন নিশ্চুপ হয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখল। যেখানে তৃণমূলে দ্বন্দ্ব সেখানে মানুষ কীভাবে পরিষেবা পাবে ?


যদিও পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস এই দাবি উড়িয়ে বলেন, এব্যাপারে প্রশাসনের কর্তারাই উত্তর দিতে পারবেন। আমরা উত্তর দিতে পারব না। অবরোধকারীরা তৃণমূলের নন। দলীয় পতাকাও ছিল না। সুতরাং, এটা তৃণমূলের দ্বন্দ্ব বলে বিজেপি যেটা চালিয়ে দিতে চাইছে, সেটা নয়। মানুষ পরিষেবা পাচ্ছে, বিজেপি ঘরে বসে অভিযোগ করছে।


এনিয়ে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মানতে না চাইলেও, এই ইস্যুতে অসন্তোষ ক্রমেই মাথাচাড়া দিচ্ছে।