নয়াদিল্লি: বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধন বিল অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে নরেন্দ্র মোদী সরকারকে আবেদন জানিয়ে বিবৃতিতে স্বাক্ষর করলেন হাজারের বেশি বিজ্ঞানী, বিদগ্ধ মানুষজন। বিলের মাধ্যমে প্রস্তাবিত আইনে ভারতের সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর বিপরীত পথে হেঁটে ধর্মীয় পরিচয়কে ভারতীয় নাগরিকত্ব নির্ধারণের আইনি মাপকাঠি করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন তাঁরা। সোমবার বিকালে প্রকাশিত বিবৃতিতে বিজ্ঞানীরা ভারতের নাগরিকত্ব নির্ধারণে ধর্মকে বৈধ মাপকাঠি হিসাবে ধরার উদ্যোগে তাঁরা গভীর ভাবে উদ্বিগ্ন বলে জানিয়েছেন।
তাঁরা বলেছেন, আমরা বুঝতে পারছি, বিলের উদ্দেশ্য আফগানিস্তান, পাকিস্তান, বাংলাদেশ থেকে আসা হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি, খ্রিস্টানদের নাগরিকত্ব প্রদান। প্রতিবেশী দেশগুলির নির্যাতিত সংখ্যালঘুদের আশ্রয় দেওয়া বিলের ঘোষিত উদ্দেশ্য। আমরা এই প্রশংসনীয় উদ্যোগকে সমর্থন জানাই, কিন্তু এটা আমাদের বিচলিত করছে যে, ধর্মকে ভারতীয় নাগরিকত্ব নির্ধারণের বৈধ মাপকাঠি হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে এই বিলে। ভারত নামক ধারণার সৃষ্টিই স্বাধীনতা আন্দোলন থেকে। সংবিধানেও বলা হয়েছে, আমরা এমন এক দেশ যেখানে সব ধর্মবিশ্বাসকে সমান চোখে দেখা হবে। কিন্তু বিলে নাগরিকত্ব দেওয়ার আইনি মাপকাঠি হিসাবে ধর্মের ব্যবহার এই ইতিহাস থেকে মৌলিক বিচ্যুতি ঘটাবে, সংবিধানের মূল কাঠামোর সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হবে না।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ভারতীয় সংবিধানের ১৪ নম্বর অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রকে ‘ভারতীয় ভূখণ্ডের পরিধির ভিতরে আইনের চোখে কাউকে সমানাধিকার, সমান সুরক্ষা থেকে’ বঞ্চিত করা থেকে বিরত রাখা হয়েছে। আমাদের ভয়, বিশেষ করে, নির্দিষ্ট ভাবেই মুসলিমদের বিলের পরিধির বাইরে রাখার ফলে দেশের বহুমুখী চরিত্রে বিরাট ধাক্কা লাগবে। এইসব উপরোক্ত কারণেই আমরা বিলটি এখনই প্রত্যাহার ও তার জায়গায় যথাযথ একটি আইন চালুর আবেদন করছি, যা কোনওরকম বৈষম্য না করে শরণার্থী ও সংখ্যালঘুদের উদ্বেগ, আশঙ্কার নিরসন করবে।
.