কলকাতা ও নয়াদিল্লি: কে ডি সিংকে গ্রেফতারের পর এবার ইডি-র নজরে নারদকাণ্ডে ম্যাথ্যু স্যামুয়েলের বয়ান।


ইডি সূত্রে খবর, এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরের কলকাতা দফতর ও সিবিআইয়ের কাছে নারদকাণ্ডে কে ডি সিং সংক্রান্ত ম্যাথ্যু স্যামুয়েলের বয়ানের বিস্তারিত তথ্য রিপোর্ট আকারে দিল্লিতে ইডি-র দফতরে পাঠাতে বলা হয়েছে।


সূত্রের খবর, নারদকাণ্ডে স্টিং অপারেশনে কত টাকা দেওয়া হয়েছিল, সেই টাকা কে, কীভাবে দিয়েছিল, তা জানতে চায় ইডি। এর আগে ইডি দাবি করে, জিজ্ঞাসাবাদে ম্যাথ্যু স্যামুয়েল জানান, কে ডি সিংয়ের সংস্থাই নারদকাণ্ডে স্টিং অপারেশনে টাকা দিয়েছিল।


ইডি সূত্রের খবর, তার সেই প্রেক্ষিতেই ম্যাথ্যু স্যামুয়েলের বয়ানকে সামনে রেখে এবার কে ডি সিংকে জেরা করতে চায় তারা।


বেআইনি লেনদেনের অভিযোগে প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ কেডি সিংকে সোমবার গ্রেফতার করে ইডি। শনিবার পর্যন্ত তাঁকে হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয় আদালত।


অ্যালকেমিস্টের আধিকারিক এবং রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদের বিরুদ্ধে দেড়শো থেকে দু’শো কোটি টাকার বেআইনি লেনদেনের অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে বিপুল পরিমাণ টাকা তিনি বিদেশে পাচার করেছেন বলেও অভিযোগ।


ইডি সূত্রে দাবি, মঙ্গলবার কে ডি সিংকে পাঁচ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। বুধবার তাঁকে ফের একবার ডেকে পাঠিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। গোয়েন্দা সূত্রে দাবি, প্রাক্তন সাংসদ অনেক তথ্য গোপন করছেন।


বেশ কিছু প্রশ্নের সঠিক উত্তর তিনি দেননি। সেই কারণেই তাঁকে গ্রেফতারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আদালত কে ডি সিংকে ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত হেফাজতে পাঠিয়েছে।


কেন্দ্রীয় সংস্থা ইডি সূত্রে দাবি, কে ডি সিং যে সংস্থার মালিক সেই অ্যালকেমিস্টের একটি সংস্থা বিভিন্ন বেআইনি স্কিম দেখিয়ে বাজার থেকে প্রায় ১৯০০ কোটি টাকা তুলেছে।


এর মধ্যে দেড়শো থেকে দু’শো কোটি টাকার হিসেব মেলেনি। এই টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে বলে গোয়েন্দাদের সন্দেহ।


এছাড়া অ্যালকেমিস্টের আরও বিভিন্ন সংস্থা বাজার থেকে প্রচুর টাকা তুলেছে। ইডি সূত্রে দাবি, এই মোট পরিমাণ প্রায় দশ হাজার কোটি টাকা।


এর আগে ২০১৯ সালে কে ডি সিংয়ের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে বিপুল পরিমাণ বিদেশি মুদ্রা এবং ভারতীয় মূল্যে নগদ টাকা বাজেয়াপ্ত করেন গোয়েন্দারা।


গোয়েন্দা সূত্রে দাবি, সেই সংক্রান্ত কোনও নথি বা হিসেব কে ডি সিং দিতে পারেননি। ইডি সূত্রে দাবি, ইতিমধ্যে অ্যালকেমিস্টের ২৩৯ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।


সংস্থার আর কোথায় কত সম্পত্তি আছে? তার সবক’টির কি হিসেব আছে? কে ডি সিংকে জেরা করে তা জানতে চাইছেন ইডি-র অফিসাররা।


কে ডি সিংয়ের বিরুদ্ধে প্রথমে রাঁচির থানায় একটি এফআইআর হয়। তার ভিত্তিতেই তদন্ত শুরু করে কেন্দ্রীয় সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট।


ইডি সূত্রে দাবি, তদন্তে নেমে দেখা যায়, দুর্নীতির জাল অনেকদূর ছড়িয়ে। এরপরই রাঁচির থানা থেকে বিষয়টি দিল্লিতে ফরওয়ার্ড করা হয়।


তারপর আর্থিক তছরুপের মামলা রুজু করে, জোরকদমে তদন্তে নামেন ইডি অফিসাররা।