কলকাতা : ক্রমেই বাড়ছে ঘনিষ্ঠতা। কিছুদিন আগেই এক পাক মৌলবাদী নেতা হুঙ্কার দিয়েছিলেন, বাংলাদেশের সব প্রয়োজনে তারা আছে, এমনকী পাকিস্তানের নিউক্লিয়ার বোমাও বাংলাদেশের ! এরপর থেকেই পাকিস্তান থেকে চট্টগ্রামে শুরু হয়ে যায় জাহাজে জিনিসপত্র আনা-নেওয়া । এবার তাই নিয়ে বিস্ফোরক দাবি করল শেখ হাসিনার দল। আওয়ামী লিগের দাবি, সম্প্রতি করাচি থেকে জাহাজে করে বিস্ফোরক আনা হয়েছে বাংলাদেশে। আর এখন পড়শি দেশের নয়া নিয়ম অনুসারে বাক্স-প্যাঁটরা না খুলেই তা ছেড়েও দেওয়া হয়েছে। তবে সেই বাক্সের গায়ে যা লেখা, তাতেই দেখা যাচ্ছে পাকিস্তান থেকে এই সব বাক্সে এসেছে এমন বিস্ফোরক যার ক্ষমতা ভয়ঙ্কর।
কী করতে পারে এই সব বিস্ফোরক ?
২১ ডিসেম্বর করাচি থেকে যে জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরে এসেছে, তা নিয়ে বিস্ফোরক দাবি করল শেখ হাসিনার দল। এক্স হ্যান্ডলে আওয়ামী লিগের তরফে বলা হয়েছে, করাচি থেকে বিস্ফোরক বোঝাই জাহাজ ২১ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম বন্দরে এসে পৌঁছয়। তাতে ‘সিসমিক ইমালসন’ নামে বিস্ফোরক আনা হয়েছে। এই বিস্ফোরকগুলি যে কোনও নির্মাণ ধ্বংস করতে সক্ষম এবং হতাহতের সংখ্যাও বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এক্স হ্যান্ডল পোস্টে আওয়ামী লিগের পক্ষ থেকে আরও দাবি করা হয়েছে, গোয়েন্দা সূত্রে খবর, বাংলাদেশের নৌবাহিনী কয়েক ঘণ্টার জন্য কন্টেনারগুলিকে আটকে রাখলেও পরে অজ্ঞাত কারণে ছেড়ে দেওয়া হয়। সুত্রের খবর, জাহাজটি চট্টগ্রামে আসে গত ২১ তারিখ। বিডি ডাইজেস্ট সূত্রে খবর, করাচি থেকে আসা মালবাহী জাহাজটির নাম এমভি ইউয়ান জিয়াং ফা ঝং। বন্দর সূত্রে খবর, এই জাহাজটি সাধারণত, পাকিস্তান ও দুবাই থেকে চিনি, গুড়, কাপড়, ডলোমাইট, লোহার ছাঁট ও যন্ত্রাংশ বিভিন্ন দেশে পৌঁছে দেয়। জাহাজটি যে সব পণ্য পরিবহণ করে, তার তালিকায় বিস্ফোরক নেই। তাই কারা কোথা থেকে এই জাহাজে বিস্ফোরক বোঝাই করেছে, তা নিয়ে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে।
কন্টেনারে লাল রঙের বর্ডারে লেখা ‘বিস্ফোরক’
বিডি ডাইজেস্ট সূত্রে আরও খবর, জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরে আসার পর তা থেকে সংবাদমাধ্যমকে দূরে রাখার চেষ্টা করে বাংলাদেশের নৌসেনা বাহিনী। পরে চট্টগ্রাম বন্দরের এক আধিকারিক কন্টেনারের ছবি প্রকাশ্যে আনেন। এর মধ্যে একটি কন্টেনারে লাল রঙের বর্ডারের মধ্যে লেখা রয়েছে ‘বিস্ফোরক’। যে বিস্ফোরকগুলি তৈরি করেছে কম্বোডিয়ার একটি সংস্থা। তবে কন্টেনারগুলি সরাসরি কম্বোডিয়া থেকে আসেনি। এগুলি এসেছে পাকিস্তান ও দুবাই হয়ে।
এর আগে নভেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে স্বাধীনতার পর প্রথমবার বাংলাদেশে ঢোকে পাকিস্তানের পণ্যবাহী জাহাজ।তখন করাচি থেকে আসা কন্টেনারের সংখ্যা ছিল ২৯৭। ২১ ডিসেম্বর আসা জাহাজে, সেই কন্টেনারের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৬৯৯। একইসঙ্গে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণভাবে মহম্মদ ইউনূসের সরকার ঘোষণা করেছে, এখন থেকে পাকিস্তান থেকে আসা কন্টেনারগুলি তল্লাশি করার কোনও দরকার নেই। অর্থাৎ চালানে যা লেখা থাকবে, সেটাকেই চুড়ান্ত বলে ধরা হবে। এই সুযোগেই কি আদাতে পাকিস্তান থেকে নিরাপদে বিস্ফোরক পাচার হচ্ছে বাংলাদেশে?
একদিকে বাংলাদেশে যখন ক্রমেই ভারত-বিদ্বেষ বাড়ছে, ক্রমেই কাছাকাছি আসছে বাংলাদেশ-পাকিস্তান। কিন্তু, ভারতের আগামী দিনে কী পদক্ষেপ করবে? মোদি সরকার চুপ কেন? পাল্টা প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা।