ইনদওর: বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়র বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করল মধ্যপ্রদেশ পুলিশ। ১৪৪ ধারা জারি থাকা সত্ত্বেও ইনদওরে ডিভিশনাল কমিশনারের বাড়ির বাইরে বিক্ষোভ দেখানোর কারণে কৈলাস বিজয়বর্গীয় সহ সাড়ে ৩০০ জনের নামে মামলা দায়ের করল পুলিশ।
মাফিয়াদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর নামে মধ্যপ্রদেশে বিজেপি নেতাদের হেনস্থার অভিযোগ তোলেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়। অতিরিক্ত জেলাশাসককে শহর জ্বালিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন তিনি। বলেন, সঙ্ঘের পদাধিকারিরা রয়েছে। না হলে আজই ইনদৌরে আগুন জ্বালিয়ে দিতাম।
সম্প্রতি কংগ্রেসশাসিত মধ্যপ্রদেশ সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিহিংসার রাজনীতির অভিযোগ তোলে বিজেপি। তাদের অভিযোগ, পুলিশ বেছে বেছে বিজেপি সমর্থকদের হেনস্থা করছে। এরপর ইনদৌরের পুলিশকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করতে চেয়ে চিঠি দেয় বিজেপি। কিন্তু শুক্রবারের সেই বৈঠকে পদস্থ কোনও পুলিশ কর্তা উপস্থিত না হওয়াতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন কৈলাস বিজয়বর্গীয়।
বিজেপি সাধারণ সম্পাদক বলেন, অফিসারদের নাম বলেছে। এরা কেউ নেই কেন? আমরা চিঠি দিয়েছিলাম। কী ভেবেছেন আমরা চুরি পড়ে বসে রয়েছি? আমরা সব জানি। আমরাও সরকার চালিয়েছি। আপনারা সরকারের চাকরি করছেন না কমল নাথের? শুক্রবারের এই ভিডিও ভাইরাল হতেই শুরু হয়েছে প্রবল সমালোচনা। শনিবার মধ্যপ্রদেশের ডিজিপির সঙ্গে দেখা করে কৈলাস বিজয়বর্গীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা রুজু করার আবেদন জানায় কংগ্রেস।

বিজেপিকে আক্রমণ করে প্রদেশ কংগ্রেসের তরফে ট্যুইট করে লেখা হয়, ছেলে ব্যাটসম্যান, বাবা ফায়ারম্যান! ইনদওরে মাফিয়াদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ায় বিজেপির সাধারণ সম্পাদক রেগে গিয়ে ইনদৌর শহরে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছেন। ট্যুইটে আরও বলা হয়, পশ্চিমবঙ্গে ধাক্কা খেয়ে এখানে ফুঁসছেন? কৈলাসজি এটা মোঘল যুগ নয়, এটা শিবরাজ জমানার সার্কাসও নয়। এটা কমল নাথের সরকার।
শনিবার অভিনব প্রতিবাদ দেখায় কংগ্রেস। ইনদৌরের বিভিন্ন জায়গায় কৈলাস বিজয়বর্গীয়র ছবি দেওয়া দেশলাই বাক্স বিলি করেন কংগ্রেস সমর্থকরা। দলের রাজ্যসভার সাংসদ দিগ্বিজয় সিংহ বলেন, কৈলাশ একজন হতাশ ও বিভ্রান্ত নেতা। ছোটবেলা থেকে তাঁকে হিংসা ও ঘৃণার রাস্তা দেখানো হয়েছিল। সেই পথেই তিনি রাজনীতি করেন।
কৈলাস বিজয়বর্গীয় পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা। তাঁর এহেন আচরণ সামনে আসতেই আক্রমণ করতে পিছপা হয়নি তৃণমূলও। মেয়র তথা পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, আগুন জ্বালানো মারধর করা এগুলো ওদের ফল। বৃক্ষের ফল দেখেই পরিচয় পাওয়া যায়। বিজেপি হচ্ছে তাই। গুজরাত থেকে মধ্যপ্রদেশ এটাই ওরা করতে চায়। এটা বর্গী দেশে আশার মতো অবস্থা। আমরা আতঙ্কে থাকি, কখন আবার এরাজ্যে আগুন জ্বালাবে।
ছেলে আকাশ বর্গীয় ব্যাট দিয়ে পেটানোর ছবি সামনে আসার পর প্রধানমন্ত্রী সমালোচনা করে বলেছিলেন, এ ধরনের ঘটনা কখনই বরদাস্ত করা হবে না।  কার ছেলে তা না ভেবেই এ ধরনের নেতাদের দল থেকে তাড়িয়ে দেওয়া উচিত।
যদিও, পরে তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এবার বাবা কৈলাসের এহেন হুমকি সামনে আসার পর, এখনও বিজেপির সর্বোচ্চ নেতৃত্বের প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।