কেন্দ্রাপাড়া, ওড়িশা: বুধবার সন্ধে ৬টা বেজে ৪ মিনিট। সারা ভারতের উৎকণ্ঠা কমিয়ে চাঁদের দক্ষিণ মেরুর অগম্য এলাকা জয় করল চন্দ্রযান ৩। নিখুঁত অঙ্ক মেনে হল সফট ল্যান্ডিং। তার কিছু পরপরই ওড়িশার কেন্দ্রাপাড়ার জেলা হাসপাতালে (Kendrapara district hospital) শোনা গেল নবজাতকের কান্না। চন্দ্রযান ৩ যখন চাঁদের বুক ছুঁল, ঠিক তার পরপরই ওই হাসপাতালে জন্ম নিল অন্তত ৪ শিশু। এমন তো হতেই পারে। কিন্তু, একটি বিশেষ ঘটনা মিলিয়ে দিয়েছে চন্দ্রযান (Chandrayaan 3) এবং ওই চার শিশুকে। কী কারণ?


ওই চার শিশুর অভিভাবকই তাঁদের সদ্য়োজাত সন্তানের নাম রাখতে চান ইসরোর এই চন্দ্র অভিযানের অনুকরণেই, এমনটাই খবর সংবাদ সংস্থা পিটিআই (PTI) সূত্রে। ওই চার শিশুর মধ্য়ে ৩জন ছেলে, একজন মেয়ে। তাদের সবার বাবা-মা চাইছে যাতে তাঁদের সন্তানের নামের সঙ্গে জুড়ে থাকে চন্দ্রযান।


আরিপদ (Aripada Village) গ্রামের বাসিন্দা প্রভাত মল্লিকের স্ত্রী রানু মল্লিক পুত্র সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। ওই সদ্যোজাতের বাবা প্রভাত মল্লিক বলেন, এটা একসঙ্গে জোড়া খুশি। চাঁদের বুকে চন্দ্রযান ৩ নামল, তার কয়েক মিনিট পরেই আমার সন্তান ভূমিষ্ঠ হল। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি এই চন্দ্র অভিযানের অনুকরণে আমাদের সন্তানের নামকরণ করব।'


ওই এলাকায় একটি প্রথা রয়েছে। কোনও শিশু জন্মানোর ২১ দিন পরে একটি পুজো করা হয়। তারপরেই সেই শিশুর নামকরণ করা হয়। রানু মল্লিক জানান, ওই পুজোর পরে বয়োজ্যেষ্ঠরা নামকরণ করেন। তাঁদের বলা হবে যেন ইসরোর (ISRO) চন্দ্রযানের (Lunar Mission) অনুকরণেই তাঁর সন্তানের নামকরণ করা হয়। তিনি বলেন, 'চন্দ্রযান তো আসলে চাঁদে যাওয়ার গাড়ি। তাই সন্তানের নাম চন্দ্র রাখা যেতে পারে। যদিও চন্দ্রযান বেশ চটকদার নাম। ২১ দিনের পুজোর পরেই আমরা ফাইনাল সিদ্ধান্ত নেব।'


তালাছুয়া গ্রামের বাসিন্দা দুর্গা মন্ডল, নীলকণ্ঠপুরের জ্যোৎস্নারানি বল, আঙ্গুলেই গ্রামের বেবিনা শেঠি ওই একই দিনের প্রায় একই সময়ে সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। দুর্গা এক শিশুকন্যার জন্ম দিয়েছেন, বাকিদের পুত্র হয়েছে।


কেন্দ্রাপাড়া সরকারি হাসপাতালের হেড নার্স অঞ্জনা সাহু বলেন, 'সদ্য মায়েরা সকলেই চন্দ্রযানের আদলে নিজের সন্তানের নাম রাখতে চাইছেন।' এমন ঝোঁক কিন্তু নতুন নয়। ওড়িশায় বারবারই আঘাত হেনেছে ঘূর্ণিঝড় (Cyclone)। অঞ্জনা দেবী জানাচ্ছেন, এর আগে ওড়িশার এই উপকূলবর্তী জেলায় আঘাত হেনেছিল ঘূর্ণিঝড়, সেই ঝড়ের নামেও নাম রাখা হয়েছিল সদ্যোজাতদের। 


অ্যাডিশনাল ডিস্ট্রিক্ট মেডিক্যাল অফিসার ড. পি কে প্রহরাজের মতে, কোনও বিশেষ ঘটনার সময় সন্তানের জন্ম হলে পিতা-মাতারা গর্ব অনুভব করেন, তাঁর মতে, 'ভারতের চন্দ্র অভিযানে (Moon Mission) সাফল্যে উদযাপন করতেই সন্তানের এমন নামকরণের কথা তাঁরা ভাবছেন।'


আরও পড়ুন: প্রথম চেষ্টায় সুযোগ ISRO-তে, চন্দ্রযান ৩-এর টিমে হাওড়ার ইনশা