নয়াদিল্লি: লালকেল্লার কাছে গাড়ি বিস্ফোরণে নাম জড়িয়েছে একাধিক চিকিৎসকের। শিক্ষিত যুবকদের সন্ত্রাসের রাস্তা কে দেখাল, সেই নিয়ে কাটাছেঁড়া চলছেই। আর সেই আবহেই পাকিস্তানের রাজনীতিক তথা, পাক অধিকৃত কাশ্মীরের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা রাজনীতিকের মন্তব্যে জলঘোলা শুরু হয়েছে। লালকেল্লা থেকে কাশ্মীরের জঙ্গল, সন্ত্রাসের হাত থেকে ভারতের রক্ষা নেই বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। তবে যে মন্তব্য করেছেন তিনি, তাকে একরকম ‘স্বীকারোক্তি’ হিসেবেই দেখছেন অনেকে। (Chaudhry Anwarul Haq)

Continues below advertisement

পাকিস্তানের রাজনীতিক তথা পাক অধিকৃত কাশ্মীরের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী চৌধরি আনওয়ারুল হকের একটি বক্তৃতা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। এবিপি আনন্দ ওই ভিডিও-র সত্যতা যাচাই করেনি। তবে ওই ভিডিও-য় আনওয়ারুলের বক্তৃতায় কাশ্মীরের জঙ্গি হামলা থেকে লালকেল্লার গাড়ি বিস্ফোরণের প্রসঙ্গ উঠে এসেছে বলেই মনে করা হচ্ছে। তাঁকে বলতে শোনা যায়, “আগেই বলেছিলাম, বালুচিস্তানকে রক্তাক্ত করলে লালকেল্লা থেকে কাশ্মীরের জঙ্গল, আমরাও ভারতকে মারব। আল্লাহ্-র অসীম কৃপায় আমরা করে দেখিয়েছি। এখনও দেহ গুনে শেষ করতে পারছে না ওরা।” আনওয়ারুল পাক অধিকৃত কাশ্মীরের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। ক্ষমতায় ছিলেন ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৫ সালের নভেম্বর পর্যন্ত। (Red Fort Blast)

চলতি বছরের শুরুতে জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে নিরীহ পর্যটকদের হত্যা করে জঙ্গিরা। পাকিস্তান মদতপুষ্ট জঙ্গিরাই সেই হত্যাকাণ্ড ঘটায় বলে জানা যায়। সেই নিয়ে সম্মুখ সমরে অবতীর্ণ হয়ে দুই দেশ। পহেলগাঁওয়ের জবাবে ‘অপারেশন সিঁদুর’ চালায় ভারত। এর পর দুই দেশ পরস্পরকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে। তার কয়েক মাস পরই সম্প্রতি বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে ভারতের রাজধানী দিল্লি। একেবারে লালকেল্লার কাছে তীব্র গাড়ি বিস্ফোরণ ঘটে, যাতে এখনও পর্যন্ত ১৫ জন মারা গিয়েছেন। 

লালকেল্লার কাছে গাড়ি বিস্ফোরণের ঘটনায় একাধিক লোকজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ, যাদের বেশিরভাগই চিকিৎসক। মগজধোলাই করেই তাদের সন্ত্রাসের পথে চালিত করা হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে অনুমান। বেশ কয়েক জনের সঙ্গে পাক জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদের সংযোগ উঠে এলেও, সরকারি ভাবে ভারতের তরফে পাকিস্তানকে বিস্ফোরণের জন্য দায়ী করা হয়নি। 

কিন্তু আনওয়ারুল যেখানে নিজে লালকেল্লার প্রসঙ্গ টানছেন, সেক্ষেত্রে তাঁর মন্তব্যকে লঘু করে দেখতে নারাজ অনেকেই। কারণ আনওয়ারুলকে স্পষ্ট বলতে শোনা যায়, “কিছু দিন পরই সশস্ত্র লোকজন ঢুকে হামলা চালিয়েছে (অন্দর ঘুসকে মারা)। এমন মেরেছে যে, এখনও বোধহয় দেহ গুনে উঠতে পারেনি ওরা।” আনওয়ারুল যেভাবে বালুচিস্তানের প্রসঙ্গ টেনেছেন, তাও উড়িয়ে দেওয়ার মতো বিষয় নয়। কারণ সাম্প্রতিক কালে বালুচিস্তানে বিচ্ছিন্নতাকামীরা পর পর হামলা চালিয়েছে, যার জন্য ভারতের দিকেই আঙুল তুলেছে শেহবাজ শরিফের সরকার। ভারত যদিও সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাহলে কি বালুচিস্তানকে সামনে রেখে কাশ্মীর ও লালকেল্লার হামলা নিয়ে স্বীকারোক্তি শোনা গেল আনওয়ারুলের মুখে, উঠছে প্রশ্ন। দিল্লির তরফে এখনও পর্যন্ত এ নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।

আনওয়ারুলের আগের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, যেখানে তাঁকে বলতে শোনা যায়, "রক্ত দিয়ে মূল্য চোকাতে রাজি। বালুচিস্তানে তোমরা পাকিস্তানিদের রক্ত নিয়ে হোলি খেলবে...তার মাশুল দিল্লি থেকে কাশ্মীর পর্যন্ত দিতে হবে তোমাদের।" তাঁর সেই বক্তব্যও ভাইরাল হয়ে গিয়েছিল, যা X (সাবেক ট্যুইটার)-এ রয়েছে, https://x.com/PracticalSpy/status/1915308566212206697 .