নয়া দিল্লি: পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পর আজ প্রথমবার কাশ্মীরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বিশ্বের সর্বোচ্চ আর্চ রেলসেতু- চেনাব সেতু উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি এদিনই তাঁর হাত ধরে উদ্বোধন হয় দেশের প্রথম কেবল রেলসেতু অঞ্জী ব্রিজেরও। আজ উপত্যকায় নতুন দু’টি বন্দে ভারত ট্রেনেরও সূচনাও হতে চলেছে তাঁর হাত ধরে। এর সঙ্গেই কাশ্মীরে মোট ৪৬ হাজার কোটি টাকার উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন করার কথা রয়েছে মোদির। 

রেলপথের এই সেতুটি বিশ্বের সর্বোচ্চ আর্চ সেতুও। চেনাব নদীর সেতুটি উধমপুর - শ্রীনগর - বারামুল্লা রেল সংযোগ প্রকল্পের একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ তৈরি করে, যা কাশ্মীরকে দেশের বাকি অংশের সঙ্গে রেলপথের মাধ্যমে যুক্ত করে। বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেনগুলি বিশ্বমানের চেনাব সেতুর উপর দিয়ে চলবে, যা শুরুতে কাটরাকে শ্রীনগরের সঙ্গে সংযুক্ত করবে। 

কী বিশেষত্ব এই চেনাব সেতুর? 

চন্দ্রভাগা নদীর ৩৫৯ মিটার উঁচুতে তৈরি এই আর্চ রেলসেতু। যার দৈর্ঘ্য ১ হাজার ৩১৫ মিটার। জম্মু ও শ্রীনগরের সংযোগকারী হিসেবে কাজ করবে এটি। নির্মাতাদের দাবি, ভূমিকম্প টলাতে পারবে না চেনাব সেতুকে। এর ফলে ৩ ঘণ্টাতেই পৌঁছনো যাবে কাটরা থেকে শ্রীনগর।  চেনাব সেতু ফেল টাওয়ার এবং কুতুব মিনারের চেয়েও লম্বা। 

চেনাব সেতু রিখটার স্কেলে ৮ মাত্রার ভূমিকম্পেও টলাতে পারবে না চেনাব সেতুকে। তীব্র বিস্ফোরণেও টুকরো হবে না সেতু। দাবি নির্মাতাদের। এমনকী ১০ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার তারতম্যও সহ্য করতে পারবে এমনভাবেই ডিজাইন এবং স্ট্রাকচারাল স্টিলের ব্যবহার করা হয়েছে।  

ইঞ্জিনিয়ারদের মতে, এই অংশে সারাবছর তাপমাত্রা মারাত্মক ওঠানামা করে। যাতে ব্রিজের স্থায়ীত্ব ও কাঠামো ঠিক থাকে সেই কারনে উন্নত 'টেকলা' প্ল্যাটফর্মও ব্যবহার করা হয়েছে। এর উপর দিয়ে ট্রেনগুলি সর্বোচ্চ ১০০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা চলবে। তবে এই ব্রিজের উপর দিয়ে সর্বোচ্চ ২৬০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায় ট্রেন চলতে পারবে , এমনটাই মত। 

বিশ্বমানের এই সেতুটি প্রায় ১,৪৮৬ কোটি ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে।  এই ইঞ্জিনিয়ারদের মতে এই প্রকল্পটি শেষ করতে একাধিক বাধার মুখে পড়তে হয়েছে। হিমালয়ের প্রকৃতি, মাটির ধারণ ক্ষমতা, প্রতিকূল আবহাওয়া এইসবই এই সেতু তৈরির সময় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছিল।