প্রয়াগরাজ, উত্তরপ্রদেশ: কুম্ভমেলা শুরু হয়ে গিয়েছে, আর প্রয়াগরাজে এই মহাকুম্ভে যোগ দিয়েছেন হাজার হাজার নাগা সন্ন্যাসী। নিজেদের শিবিরে (Maha Kumbh 2025) ধুনো জ্বেলে জপ, তপ, ধ্যানে নিমগ্ন অনেকেই। এমনকী অনেককে ধূমপান করতেও দেখা যাচ্ছে। আর সকলের মধ্যে এই বছরের মহাকুম্ভের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছেন গঙ্গাপুরী মহারাজ, ওরফে ছোটু বাবা (Chhotu Baba)। তাঁকে দেখে কেউ ছবি তুলতে চাইছেন, কেউ থমকে দাঁড়িয়ে পড়ছেন খানিকক্ষণ। তাঁকে দেখলেই অসংখ্য মানুষের ভিড় ঘিরে ধরছে আর তাই বেশিরভাগ সময় তিনি নিজের তাঁবুতে লুকিয়ে থাকছেন অথবা গঙ্গার তীরে নির্জনে সাধনা করছেন।
জুনা আখড়ার নাগা সাধক এই গঙ্গাপুরী মহারাজ নাগা সন্ন্যাসীদের মধ্যে সবথেকে গৌরবময় অসমের কামাখ্যা পীঠের সঙ্গে যুক্ত। সকলেই এই কুম্ভমেলায় পুণ্যার্জনের জন্য গঙ্গায় স্নান করত আসছেন, কিন্তু গঙ্গাপুরী মহারাজ এখানেও স্নান করবেন না। চেহারায় পাঁচ-ছয় বছরের শিশুর মত দেখতে গঙ্গাপুরী মহারাজ দীর্ঘ ৩২ বছর ধরে স্নান করেননি। তাঁর উচ্চতা মাত্র ৩ ফুট ৮ ইঞ্চি, অর্থাৎ ৪ ফুটের কাছাকাছি। কিন্তু তাঁর বয়স সাতান্ন বছর। তাঁর এই কম উচ্চতার কারণে তাঁকে অনেকেই 'ছোটু বাবা' বলে ডাকেন। এই গঙ্গাপুরী মহারাজ নিজেই জানিয়েছেন তাঁর এই কম উচ্চতা তাঁর দুর্বলতা নয়, বরং শক্তি। এই কারণেই তাঁকে দেখতে দূর দূরান্ত থেকে মানুষ ভিড় করেন।
৩২ বছর ধরে স্নান করেননি
গঙ্গাপুরী মহারাজের উচ্চতা ছাড়াও আরও একটি আকর্ষণের বিষয় হল তিনি বিগত ৩২ বছর ধরে স্নান করেননি। একটি সংকল্পের কারণে তিনি এই কাজ করেছেন। যদিও তা ৩২ বছরেও পূর্ণ হয়নি। কিন্তু কী সেই সংকল্প, তা কাউকেই প্রকাশ করেননি তিনি। গঙ্গাপুরী মহারাজ জানান যে তাঁর সংকল্প পূর্ণ হলে প্রথমেই তিনি শিপ্রা নদীতে স্নান করবেন। তাঁর কথায়, শরীরের থেকে অন্তরের মনকে পবিত্র রাখা গুরুত্বপূর্ণ। অন্যান্য নাগা সন্ন্যাসীদের থেকে দূরে নির্জনে তন্ত্র সাধনা করেন তিনি, অনেক সময় শ্মশানেও ধ্যান করেন ছোটুবাবা।
প্রথমবার মহাকুম্ভে এসেছেন তিনি
গঙ্গাপুরী মহারাজ এই প্রথমবার মহাকুম্ভে এসেছেন, তাই তাঁর জন্য পৃথক কোনো শিবির এখনও বরাদ্দ করা হয়নি। অন্য সাধুদের শিবিরেই এখন ঘুরে ঘুরে থাকছেন তিনি। তবে তাঁর আশা উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শীঘ্রই তাঁর জন্য তাঁবুর বন্দোবস্ত করবেন।