কলকাতা:মুখ্যসচিব পদ থেকে অবসর নেওয়ার পরও আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য টানাপোড়েন থামল না। মঙ্গলবার থেকে তিনি মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করতে শুরু করেছেন। কিন্তু, নতুন দায়িত্ব নেওয়ার আগেই বিপর্যয় মোকাবিলা আইন লঙ্ঘনের কারণ দেখিয়ে, সদ্য প্রাক্তন মুখ্যসচিবকে শোকজ করল কেন্দ্রীয় সরকার। তাঁর বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, ৩ দিনের মধ্যে সেই ব্যাখ্যা চাওয়া হল আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। 


রাজ্যের সদ্যপ্রাক্তন মুখ্যসচিব  আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় কেন কলাইকুণ্ডায় ঘূর্ণিঝড় ইয়াস-পরবর্তী ক্ষয়ক্ষতি সংক্রান্ত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পর্যালোচনা  বৈঠক এড়িয়ে গেলেন ? ২৮ মে প্রধানমন্ত্রীর ইয়াস পরবর্তী পর্যালোচনা বৈঠক কেন এড়িয়ে গেলেন ? প্রশ্ন তুলে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে শো-কজ প্রাক্তন মুখ্যসচিবকে। গতকাল কেন্দ্রীয় সরকারে তরফে শো-কজ করা হয় তাঁকে।কেন্দ্রীয় সরকারের আন্ডার সেক্রেটারি একে সিংহ এই শোকজ নোটিশ পাঠিয়েছেন। আগের দিন এই বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী ও মুখ্যসচিব উপস্থিত থাকবেন বলে জানালেও কেন বৈঠকের দিন মুখ্যসচিব থাকলেন না, এই প্রশ্ন করা হয়েছে।


চিঠিতে কেন্দ্রীয় সরকারের আন্ডার সেক্রেটারি  আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে মুখ্যসচিব হিসেবে সম্বোধন করেছেন। কেন্দ্রীয় সরকারের আন্ডার সেক্রেটারি চিঠিতে লিখেছেন, প্রধানমন্ত্রী তথা জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের পর্যালোচনা বৈঠক থেকে মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরত থাকা, কেন্দ্রীয় বিধি অমান্য করার সামিল, অর্থাৎ ২০০৫ সালের বিপর্যয় মোকাবিলা আইনের ৫১ (বি) ধারা লঙ্ঘন। এজন্য পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলা হচ্ছে, তিনদিনের মধ্যে তিনি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকে ব্যাখ্যা দিন, তাঁর বিরুদ্ধে ২০০৫ সালের বিপর্যয় মোকাবিলা আইনের ৫১ নম্বর ধারায় কেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে না?


কারণ ব্যাখ্যা করে উত্তর দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনদিনের মধ্যে লিখিত উত্তর দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।  জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা আইন মোতাবেক এই  নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 


আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঘিরে টানাপোড়েন যে এখানে থামবে না, তা কার্যত স্পষ্ট। কিন্তু, এই শোকজের ভিত্তিতে কি আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কেন্দ্র ব্যবস্থা নিতে পারে? কেন্দ্রীয় সরকার সূত্রে খবর, আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় অবসর নেওয়ায় কর্মিবর্গ প্রশিক্ষণ দফতর আর এই বিষয়টির মধ্যে নেই। পুরো বিষয়টা এখন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক এবং প্রাক্তন মুখ্যসচিবের মধ্যে। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা আইন লঙ্ঘনের জন্য কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক তাঁকে নোটিস দিয়েছে। জবাবের ভিত্তিতে সেই মন্ত্রকই অবসর-পরবর্তী পাওনার বিষয়ে কর্মিবর্গ ও প্রশিক্ষণ দফতরে সুপারিশ করতে পারে।