বেজিং: প্যাঙ্গোলিনের থেকেই সম্ভবত মানব শরীরে ছড়িয়েছে করোনাভাইরাস। এই আশঙ্কা প্রকাশ্যে আসার পরই চিন প্রশাসন প্যাঙ্গোলিনকে লুপ্তপ্রায় প্রাণী জায়ান্ট পান্ডার স্তরের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিল।

প্যাঙ্গোলিনের মাংস চিনে দারুণ জনপ্রিয়। তার আঁশ দিয়ে তৈরি হয় ঐতিহ্যময় চিনা ওষুধপত্র। চিনাদের বিশ্বাস, এর ফলে নপুংসকতা সেরে যায়, সদ্য মায়েদের স্তনদুগ্ধ বাড়ে। ফলে প্যাঙ্গোলিন যথেচ্ছ শিকার হয় এ দেশে। গত দশ বছরে ১০ লাখের মত প্যাঙ্গোলিন মারা হয়েছে বলে মনে করা হয়, প্রতি বছর অন্যান্য দেশে চোরাচালান করা হয় ২০ টন প্যাঙ্গোলিন ও তাদের দেহাংশ। যদিও শুধু চিনে নয়, গোটা বিশ্বেই সব থেকে বেশি চোরাশিকার হয় এই প্যাঙ্গোলিন। চিনা বিজ্ঞানীরা প্রথমে মনে করছিলেন, সাপ আর বাদুড় থেকে করোনা ছড়িয়েছে। কিন্তু এখন তাঁরা মনে করছেন, প্যাঙ্গোলিনই এই বিপত্তির কারণ।

এরপরই চিন ঘোষণা করেছে, প্যাঙ্গোলিনের সমস্ত প্রজাতিকে দ্বিতীয় শ্রেণির বদলে প্রথম শ্রেণির সুরক্ষা পাওয়া প্রাণীদের তালিকায় উন্নীত করা হবে। যথেচ্ছ শিকারের জেরে তাদের সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে কমে যাওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। অন্যান্য প্রথম শ্রেণির সুরক্ষিত জীবজন্তু হল জায়ান্ট পান্ডা, তিব্বতী হরিণ ও লাল ঝুঁটির সারস। চিনের বন্য প্রামী সংরক্ষণ সংস্থা জানিয়েছে, প্যাঙ্গোলিনদের বাঁচাতে উদ্যোগী হবে তারা, চোরাশিকার ও চোরাচালানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে, তাদের জন্য তৈরি হবে প্রটেকশন রিসার্চ সেন্টার ও জিন ব্যাঙ্ক।

ইয়াংসি নদীর দক্ষিণে ১৭ প্রদেশে প্যাঙ্গোলিনের বাস। কিন্তু ২০০৩-এর একটি জাতীয় সমীক্ষা বলছে, প্যাঙ্গোলিনের সংখ্যা কমে ৬৪,০০০-এর মত দাঁড়িয়েছে, তাদের বাসভূমি ১৭-র বদলে কমে দাঁড়িয়েছে ১১টি প্রদেশ। ২০০৭-এ চিনে প্যাঙ্গোলিন শিকার নিষিদ্ধ হয়, ২০১৮-য় বন্ধ হয় বাণিজ্যিক কারণে প্যাঙ্গোলিন ও প্যাঙ্গোলিন জাত জিনিসপত্রের আমদানি। কিন্তু এরপরেও প্যাঙ্গোলিনের সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে কমেই চলেছে। তার মূল কার তাদের বাসস্থান ধ্বংস ও খাওয়ার জ্নয় প্যাঙ্গোলিন শিকারে যথেষ্ট শাস্তির ব্যবস্থা না থাকা, জানিয়েছে চিনের সরকারি সংবাদপত্র।