মানবতা-বিরোধী অপরাধের মামলায় বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্য়ুনাল। মৃত্য়ুদণ্ডের সাজা শোনানোর সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে ফেরত চেয়ে ভারতকে চিঠিও দিয়েছে বাংলাদেশ। এটা ঢাকার 'অভ্যন্তরীণ বিষয়' বলে উল্লেখ করে কোনও প্রতিক্রিয়া দিল না চিন। এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে চিনের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র মাও নিং বলেন, "এটা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। চিন বাংলাদেশের মানুষের প্রতি সু-প্রতিবেশীসুলভ আচরণ এবং বন্ধুত্বের নীতিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা আন্তরিকভাবে আশা করি যে বাংলাদেশ সংহতি, স্থিতিশীলতা এবং উন্নয়ন অর্জন করবে।"

Continues below advertisement

একদিনে জোড়া চাল দিলেন মহম্মদ ইউনূস। গত বছর জুলাই মাসে গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্য়ুত হওয়ার পর ক্ষমতায় বসেছিলেন তিনি। এখনও বাংলাদেশে নির্বাচন হয়নি। অনির্বাচিত সরকারের প্রধান হিসাবেই যাবতীয় চাল চালছেন ইউনূস। এই প্রেক্ষাপটেই এবার, মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দিল বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্য়ুনাল। যা নামে আন্তর্জাতিক হলেও, আসলে বাংলাদেশের আদালত। সেই আদালতই এই রায় দিল। তাও আবার শেখ হাসিনাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের কোনও সুযোগ না দিয়েই। আর এরপরই ফের চাল চাললেন ইউনূস। বাংলাদেশের আদালত শেখ হাসিনাকে মৃত্য়ুদণ্ডের সাজা শোনানোর সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে ফেরত চেয়ে ভারতকে চিঠি দিল বাংলাদেশ।

বঙ্গবনধু কন্য়ার পাশাপাশি, বাংলাদেশের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালেরও মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। উস্কানিমূলক বক্তব্য, হেলিকপ্টার, ড্রোন ও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের হত্য়ার নির্দেশ, রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্য়ালয়ের ছাত্র আবু সাঈদকে হত্যার আদেশ, রাজধানী চানখাঁরপুল এলাকায় আন্দোলনরত ৬ জনকে গুলি করে হত্য়ার নির্দেশ ও আশুলিয়ায় ৬ জনকে পুড়িয়ে খুন- এই ৫ অভিযোগের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সাজা শুনিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদার, বিচারপতি মহম্মদ শফিউল আলম মামুদ ও বিচারক মহম্মদ মোহিতুল হক এনাম চৌধুরীর বেঞ্চ।

Continues below advertisement

রাজসাক্ষী হওয়ায় শেখ হাসিনার আমলে পুলিশের আইজি চৌধুরী আবদুল্লা আল মামুনের ৫ বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল। শেখ হাসিনা ও প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। 

এদিকে রায় ঘোষণা হতেই তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন মুজিব-কন্য়া শেখ হাসিনা। বিবৃতিতে তিনি লিখেছেন, নির্বাচনহীন সরকারের নিয়োজিত পক্ষপাতদুষ্ট, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ট্রাইব্যুনাল আমার বিরুদ্ধে এই রায় দিয়েছে। এই রায় পক্ষপাতমূলক ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। মৃত্য়ুদণ্ডের এই কুৎসিত সাজায়, অন্তর্বর্তী সরকারের মধ্য়ে থাকা চরমপন্থীদের নির্লজ্জ, খুনি মানসিকতা সামনে চলে এসেছে। তাদের উদ্দেশ্য় বাংলাদেশের শেষ নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীকে সরিয়ে দেওয়া এবং রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে আওয়ামী লিগকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া।