বেজিং: চিন ‘সুখ-দুঃখের বন্ধু’ পাকিস্তানকে পঙ্গপালের উপদ্রব থেকে বাঁচাতে এক লাখ হংস-সৈন্য পাঠাবে বলে খবর সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোড়ন ফেলেছে। খবরটা বেরিয়েছিল 'নিংবো ইভনিং নিউজ'-এ। গত দুদশকে নাকি এর আগে কখনও এখনকার মতো পঙ্গপালের দল আগ্রাসন চালায়নি পাকিস্তানে। তাই চিনের হংস-বাহিনীর পাঠানোর সিদ্ধান্তের খবর বেরতেই ভাইরাল হয়। চিনের ওয়েইবো সোশ্যাল মিডিয়ায় ৫২০ মিলিয়ন লোক দেখে ফেলে। কমেন্টসে ছেয়ে যায় প্ল্য়াটফর্ম।
দু দশক আগে চিনে পাকিস্তানের মতো হানা দিয়েছিল ঝাঁকে ঝাঁকে পঙ্গপাল, উত্তর পশ্চিমের জিনজিয়াং অঞ্চলে। তখন নাকি হাঁস নামিয়েই পঙ্গপাল দমন করেছিল চিন। কারণ, পঙ্গপাল সমেত হরেক পোকামাকড় খেয়েই ওই হাঁস বাহিনী পেট ভরায়।
কিন্তু যা চিনে চলতে পারে, তা কি পাকিস্তানেও চলবে, পাকিস্তানের আবহাওয়া কি হংস-বাহিনীর পক্ষে উপযুক্ত? এমনই ইঙ্গিত চিনের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ঝাং লংয়ের কথায়। ঝাংয়ের যুক্তি, হাঁসেরা জলের ওপর নির্ভরশীল, কিন্তু পাকিস্তানের মরু অঞ্চলে তাপমাত্রা খুবই বেশি। পাকিস্তানের এমন আবহাওয়ায় হাঁস-বাহিনী টিঁকতে পারবে কি, এমনই সংশয় তাঁর যুক্তিতে।
পাকিস্তানকে পঙ্গপাল মোকাবিলায় সাহায্য করতে পাঠানো চিনা বিশেষজ্ঞদের দলের সদস্য ছিলেন ঝাং। ফলে তাঁর বক্তব্য ফেলে দেওয়ার নয়। তিনি হাঁস না পাঠিয়ে বরং রাসায়নিক বা জৈব কীটনাশক ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছেন।
পূর্ব আফ্রিকা, ভারতে বিধ্বংসী ভূমিকায় নেমেছে পঙ্গপাল বাহিনী। ওরা বাতাসের শক্তিতে দিনে ৯০ মাইল পর্যন্ত উড়তে পারে, দিনে ৩৫ হাজার মানুষের সমান খাবার খায়।
‘নিংবো ইভনিং নিউজ’ চিনেরই ঝেজিয়াং প্রাদেশিক কৃষি প্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের গবেষক লু লিঝিকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছিল, কীটনাশকের তুলনায় পরিবেশের কম ক্ষতি হতে পারে হাঁসের ব্যবহারে, খরচও কম। তাঁর যুক্তি ছিল, হাঁস বাহিনী দল বেঁধে থাকে। তাই মুরগির চেয়ে ওদের সামলানো সহজ। তাছাড়া একটা মুরগি দিনে মাত্র ৭০টা পঙ্গপাল খায়, সেখানে দিনে ২০০-র বেশি পঙ্গপাল খেয়ে নেয় একটা হাঁসই।
শেষ পর্যন্ত কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসরের কথা মেনে হংস-বাহিনী পাঠানোর প্রস্তাব থেকে চিন পিছু হঠে কি না, সেটাই দেখার।