একটা সময় অবধি কলেরা মানেই ছিল আতঙ্ক। গ্রামে একজনের কলেরা হওয়া মানেই মরামারী আতঙ্ক ছড়াত। কারণ এক সময় পর্যন্ত কলেরা মানেই ছিল নিশ্চিত মৃত্যু। সেই ভয়ঙ্করতা এখন নেই। চিকিৎসাবিজ্ঞান এখন অনেকটাই উন্নত। রোগ প্রতিরোধে সতর্ক প্রশাসনও। কিন্তু এরই মধ্যে ফের কলেরার আতঙ্ক ছড়াল একাধিক জেলায় । ওড়িশা রাজ্যের একাধিক জায়গা থেকে কলেরার মতো উপসর্গে ভুগছেন অনেক মানুষ। প্রশাসন সূত্রে খবর, সেই সব মানুষের ১০ শতাংশ নমুনায় মারাত্মক ভিব্রিও কলেরা ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়াও গিয়েছে। মঙ্গলবার ওড়িশা সরকার জলবাহিত এই রোগের বিস্তার রোধে ৩০টি জেলাকে সতর্ক করে দিয়েছে। জলবাহিত এই রোগে এখনও পর্যন্ত ১১ জন মারা গিয়েছেন । সরকারি সূত্রে খবর, উপকূলীয় ওড়িশায় ২০০০ জনেরও বেশি মানুষ কলেরা আক্রান্ত।
৯ জুন ওড়িশার জাজপুর জেলায় ডায়রিয়ার উপসর্গ নিয়ে ছড়িয়ে পড়ে কলেরা। এখনও পর্যন্ত ঢেঙ্কানল, ভদ্রক, কেওনঝাড় এবং কটক সহ অন্যান্য জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে কলেরার দাপট। অন্যান্য কয়েকটি জেলায়ও ডায়রিয়ার বিক্ষিপ্ত ঘটনা ঘটেছে এবং জাজপুর থেকে সংগৃহীত নমুনায় কলেরা ভাইরাস সনাক্ত করা হয়েছে। এনডিটিভি সূত্রে খবর, প্রশাসন সূত্রে খবর, মঙ্গলবার ওড়িশার বিভিন্ন জেলায় প্রায় ৩০০ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। এই রোগের বিস্তারের কারণে রাজ্য সরকার সমস্ত কালেক্টরদের সতর্ক করে দিয়েছে। রোগ প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা শক্তপোক্ত করার নির্দেশ দিয়েছে।
গত বছর বাংলাতেও সমস্যায় ফেলেছিল কলেরা। বর্ষার সময় কলেরার আতঙ্ক ছড়িয়েছিল কলকাতা ও জেলার কিছু এলাকায়। তবে প্রশাসন সতর্ক হয়ে বিষয়টি মোকাবিলা করে। ১৯৭১-এ কলেরা যখন মহামারির আকার নিয়েছিল, সেইসময় Oral Rehydration Solution বা ORS তৈরি করে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন বাঙালি গবেষক-চিকিৎসক দিলীপ মহলানবীশ। সেই ওআরএস আজও এই রোগে আক্রান্তদের সহায়ক। তবে এখনও চিকিত্সকরা মনে করেন, কলেরা রোগটিকে কোনওভাবে একে হালকা করে নিলে প্রাণ সংশয় পর্যন্ত হতে পারে। তাই ওড়িশা প্রশাসনও সতর্ক। চিকিৎসকরাও সতর্ক করছেন, পেটে ব্যথা, পেট খারাপ, বমি, জ্বরের মতো উপসর্গ দেখলেই সতর্ক হতে হবে। কলেরার প্রধান উপসর্গ হল ঘন ঘন, জলের মতো মল হওয়া। এছাড়াও বমি, পেটে ব্যথা এবং জলশূন্যতা হতে পারে। দরকারে রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। নইলে ফল মারাত্মক হতে পারে।