নয়াদিল্লি: দেশের ৫০তম প্রধানবিচারপতি হিসেবে অবসর নিচ্ছেন CJI ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। ২০২২ সালের নভেম্বর মাস থেকে ২০২৪ সালের নভেম্বর, দু'বছর গুরুদায়িত্ব পালন করে গেলেন তিনি। তাঁর জায়গায় এবার প্রধান বিচারপতি হচ্ছেন বিচারপতি সঞ্জীব খন্না। প্রধান বিচারপতি হিসেবে অবসর নেওয়ার পর CJI চন্দ্রচূড় কী করেন, সেদিকে তাকিয়ে সকলেই। কারণ বাবার দেখানো পথে এগিয়ে প্রধান বিচারপতি হিসেবে যখন দায়িত্ব গ্রহণ করেন তিনি, তাঁকে ঘিরে প্রত্যাশা ছিল তুঙ্গে। কেউ কেউ 'রকস্টার প্রধান বিচারপতি' বলেও উল্লেখ করেন। সবসময় প্রত্যাশা পূরণ হয় না। তাই কার্যকালের শেষ দিকে একাধিক মামলার রায় নিয়ে সমালোচনা শুনতে হয়েছে তাঁকেও। কিন্তু এ তো গেল পেশাদার জীবনের কথা। ব্যক্তিগত জীবনে কেমন CJI চন্দ্রচূড়? এখনও পর্যন্ত যে তথ্য সামনে এসেছে, তাতে আর পাঁচ জনের থেকে তিনি আলাদা বলেই মনে করেন অনেকে। (CJI DY Chandrachud)


CJI চন্দ্রচূড়ের বাবা ছিলেন যশবন্ত বিষ্ণু চন্দ্রচূড়। দেশের ১৬তম প্রধান বিচারপতি ছিলেন তিনি। কার্যকালের মেয়াদ ছিল ১৯৭৮ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৯৮৫ সালের ১১ জুলাই পর্যন্ত। কিন্তু বাবা প্রধান বিচারপতি থাকলেও, নিজের জীববে কম ঝড়-পটা পোহাতে হয়নি CJI চন্দ্রচূড়কে। তাঁর প্রথম স্ত্রী রশ্মি ক্যান্সাসে আক্রান্ত হন। ২০০৭ সালে মারা যান তিনি। এক সাক্ষাৎকারে সেই নিয়ে মুখ খোলেন তিনি। জানান, তিনি নিজেই স্ত্রীর দেখভাল করতেন। আদালতের কাজ সামলে ছুটতেন হাসপাতালে। হাসপাতাল থেকে আদালতে যেতেন, আবার আদালত থেকে হাসপাতালেই ফিরতেন সরাসরি। রশ্মি এবং CJI চন্দ্রচূড়ের দুই পুত্রসন্তান, অভিনব এবং চিন্তন চন্দ্রচূড়। তাঁরাও পেশায় আইনজীবী। অভিনব বম্বে হাইকোর্টে রয়েছেন। চিন্তন বিদেশে থাকেন। (CJI DY Chandrachud Retires)


২০০৮ সালে, ৪৯ বছর বয়সে দ্বিতীয় বার কল্পনা দাসের সঙ্গে বিবাহব বন্ধনে আবদ্ধ হন CJI চন্দ্রচূড়। কল্পনা নিজেও আইনের পেশায় রয়েছেন। একটি সাক্ষাৎকারে CJI চন্দ্রচূড় জানান, কল্পনা এবং তিনি পরস্পরের ভাল বন্ধু। তাঁকে শক্তি জুগিয়েছেন কল্পনাই। কল্পনার সামাজিক মূল্যবোধ তাঁর মধ্যেও পরিবর্তন ঘটায় বলে জানান। কল্পনা এবং তিনি সময় পেলেই বেরিয়ে যান, প্রত্যন্ত এলাকায় পৌঁছে যান কখনও কখনও। কল্পনা কখনও কখনও এমন মন্তব্য করেন, যা মনঃপুত হয় না তাঁর। কিন্তু পরে যখন ভেবে দেখেন, কল্পনার কথার গুরুত্ব বুঝতে পারেন বলে জানান CJI চন্দ্রচূড়। কল্পনা এবং তিনি বেশি কারও সঙ্গে মেশেন না, বরং ছুটির দিন বাড়িতেই কাটে। তাঁরা দু'জনই সম্পর্কে 'স্পেস' থাকার পক্ষপাতী বলে জানিয়েছেন CJI চন্দ্রচূড়। 


CJI চন্দ্রচূড় এবং কল্পনা দুই বিশেষ ভাবে সক্ষম কন্যা, প্রিয়ঙ্কা এবং মাহিকে দত্তক নিয়েছেন। একটি সাক্ষাৎকারে CJI জানান, দুই মেয়ে জীবনে আসার পর অনেক কিছু পাল্টে গিয়েছে। খবরের কাগজে যা পড়েন, চারপাশ থেকে যা কানে আসে, তার বাইরেও যে জীবন আছে, দুই মেয়ের থেকেই শিখিছেন বলে জানান। দুই ছেলে সম্পর্কে CJI চন্দ্রচূড় জানান, ছেলেদের দিল্লিতে সুপ্রিম কোর্টে প্র্যাকটিস করার কথা অনেক বার বলেছেন তিনি। কিন্তু তাঁরা রাজি হননি। বিশেষ করে বাবা প্রধান বিচারপতি থাকাকালীন, সুপ্রিম কোর্টে প্র্যাকটিস করতে আপত্তি তাঁদের।