নয়াদিল্লি: বয়সের তুলনায় চেহারায় এখনও তারুণ্য রয়েছে। দেশের প্রধান বিচারপতির হিসেবে আসীন হলেও, তেমন গম্ভীর বলে মনে হয় না দেখে। বিদায়লসগ্নে তাঁর সম্পর্কে এমন মন্তব্য করেছিলেন সহকর্মীরা। বৃহস্পতিবারই প্রধান বিচারপতি হিসেবে অবসর নিচ্ছেন CJI ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। অবসরের পর কী করবেন, তা খোলসা করলেন নিজেই। জানালেন যে ভূমিকাই পালন করুন না কেন আগামী দিনে, তাতে এতদিন যে দায়িত্ব সামলেছেন, সেই মর্যাদা ধরে রাখবেন। (CJI DY Chandrachud)
অবসর জীবন কী ভাবে কাটাতে চান, তা নিয়ে সংবাদমাধ্যমে মুখ খোলেন CJI চন্দ্রচূড়। তিনি জানান, বিচারপতির পদ থেকে অবসর নিলেও, সাধারণ মানুষেকর চোখে সমীহ, সম্ভ্রম থেকে যায়। তাই পদ ছাড়লেও, ব্যক্তিগত জীবনে দায়িত্বজ্ঞান থেকে যায়। তাঁর কথায়, "পদের নিরিখে মানুষের কিছু প্রত্যাসা থাকে। নিজের ব্যাপারে একটা কথাই বলতে পারি, যে দায়িত্বে ছিলাম আমি, অবসর পরবর্তী জীবনে যা-ই করি না কেন, তার রেশ থেকে যাবে।" (CJI DY Chandrachud Retires)
বিচারপতির পদ থেকে অবসরগ্রহণের পর কেউ গ্রিন ট্রাইবিনাল, কেউ ক্রেচা সুরক্ষা কমিশন, কেউ আবার টেলিকম ট্রাইবুনালে যোগ দেন, যা পরিচালনা করে কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রক। CJI চন্দ্রচূড়ও কি সেই পথে হাঁটবেন? তিনি জানান, ট্রাইবুনালে যে মামলা ওঠে, সেগুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেই দায়িত্বে আসেন হতে সততা এবং অভিজ্ঞতার প্রয়োজন পড়ে। তাই প্রাক্তন বিচারপতিরা, বিশেষ করে সর্বোচ্চ আদালত এবং হাইকোর্টের বিচারপতিরা অবসরের পর ট্রাইবুনালের দায়িত্বে আসীন হন।
তবে ট্রাইবুনালের দায়িত্বে আসীন হওয়ার কিছু নেতিবাচক দিকও রয়েছে বলে মত CJI চন্দ্রচূড়। তিনি জানিয়েছেন, অবসরপ্রাপ্ত কোনও বিচারপতি যখন কোনও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন, তারে 'কুইড প্রো কুয়ো' হিসেবে দেখা হয়, অর্থাৎ কিছুর বিনিময়ে কাউকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়া। সেই কারণেও অনেকে ট্রাইবুনাল থেকে দূরে থাকেন, যা দুর্ভাগ্যজনক বলে মনে করেন CJI চন্দ্রচূড়। কিন্তু অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিরাই ট্রাইবুনাল থেকে নিরপেক্ষ রায় দিতে পারেন বলে মত তাঁর।
৮ নভেম্বর, শুক্রবার প্রধান বিচারপতি হিসেবে শেষ দিন কাজ করেন CJI চন্দ্রচূড়। বিদায়ী ভাষণে ক্ষমাপ্রার্থনা করেন তিনি। জানান, কাউকে আঘাত করে থাকলে তাঁকে যেন ক্ষনা করে দেওয়া হয়। ২০১৬ সালের মে মাসে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি নিযুক্ত হন তিনি। ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব পান CJI চন্দ্রচূড়।