নয়াদিল্লি: সমলিঙ্গের বিবাহের পক্ষে রায় দিয়েছেন তিনি। কিন্তু বাকিদের বিরোধিতায় তাতে সিলমোহর পড়েনি। সেই নিয়ে এবার মুখ খুললেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। জানালেন, বিবেক এবং সংবিধানের কাছে দায়বদ্ধ তিনি। সেই নিরিখেই নিজের সিদ্ধান্ত জানান তিনি। ভোটাভুটিতে সংখ্যালঘুর দলে পড়লেও, নিজের অবস্থান থেকে সরে আসার কোনও প্রশ্ন নেই। (CJI DY Chandrachud)


সাম্প্রতিক কালে সুপ্রিম কোর্টের ১৩টি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে সংখ্যালঘুর আওতায় পড়েছেন প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়। বিবাহের সমান অধিকার সংক্রান্ত মামলাতেও সম্প্রতি সমলিঙ্গের বিবাহের পক্ষে সিদ্ধান্ত জানান তিনি। কিন্তু বাকি বিচারপতিরা তাঁর সঙ্গে একমত হননি। ফলে সমলিঙ্গের বিয়েতে সিলমোহর পড়েনি। গত কয়েক দিন ধরেই সেই নিয়ে চর্চা চলছে। (Supreme Court)


সোমবার ওাশিংটন ডিসি-র 'পার্সপেক্টিভস ফ্রম দ্য সুপ্রিম কোর্ট অফ ইন্ডিয়া অ্যান্ড দ্য ইউনাইটেড স্টেটস' শীর্ষক আলোচনা সভায় বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলেন প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়। তিনি বলেন, "আমার বিশ্বাস, কখনও কখনও বিবেক এবং সংবিধানকে মাথায় রেখে ভোট দিতে হয়।  আমি যা বলেছি, সেই অবস্থানেই রয়েছি।" সমলিঙ্গের বিবাহ নিয়ে সাম্প্রতিক রায় নিয়েই এমন মন্তব্য করেন তিনি।


আরও পড়ুন: Parag Desai Demise: বার্ষিক আয় ২০০০ কোটি, পথকুকুরদের আক্রমণে মর্মান্তিক পরিণতি, প্রয়াত চা সংস্থার মালিক


প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় আরও বলেন, "পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ একটি বিষয়ে একমত হয়, তা হল, সমকামিতাকে অপরাধ মুক্ত করা এবং সমলিঙ্গের মানুষদের সমাজের সমান অধিকার প্রদান। এক্ষেত্রে অনেকটাই এগিয়েছি আমরা।  বিবাহের অধিকার আইনপ্রণয়নের আওতায় পড়ে, যা সংসদের এক্তিয়ারের অন্তর্ভুক্ত।"


সমলিঙ্গের বিবাহ নিয়ে সম্প্রতি সিদ্ধান্ত জানাতে গিয়ে শীর্ষ আদালত জানায়, সমলিঙ্গের যুগলদের বিবাহের অধিকার প্রদানের এক্তিয়ার আদালতের নেই। আদালত সিলমোহর দিলে আইনব্যবস্থায় হস্তক্ষেপ করা হয়। সমলিঙ্গের যুগলদের বিবাহের অধিকার এবং সন্তান দত্তক নেওয়ার অধিকার প্রদান নিয়ে মতবিভেদও দেখা দেয় বিচারপতিদের মধ্যে। প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি এসকে কউল সমলিঙ্গের বিবাহের পক্ষে ছিলেন। কিন্তু বাকি তিন বিচারপতি এর বিরুদ্ধে মত দেন। সেই সংক্রান্ত আইন তৈরির নির্দেশ দেওয়ার ক্ষমতা আদালতের নেই বলে জানান তাঁরা। 


ফলে সমলিঙ্গের বিবাহের অধিকারে সিলমোহর পড়েনি। তবে পেনশন, প্রভিডেন্ট ফান্ড এবং সামাজিক সুযোগ সুবিধা থেকে যাতে তাঁরা বঞ্চিত না হন, সেই নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে কেন্দ্রীয় কমিটিকে অনুরোধ জানায় আদালত।  সমলিঙ্গের বিবাহের পক্ষে সওয়াল করতে গিয়ে প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেন, "জীবনসঙ্গী বেছে নেওয়ার অধিকার জীবনের অধিকারের মধ্যেই পড়ে। কারও কারও ক্ষেত্রে জীবনসঙ্গী বেছে নেওয়া জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হিসেবে বিবেচিত হয়। জীবন এবং স্বাধীনতার অধিকারের মধ্যেই জীবনসঙ্গী বেছে নেওয়ার অধিকার পড়ে।"