সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগনা: উমার বিদায়বেলায় ইছামতীর পাড়ে দুই বাংলার মিলন (Durga Puja 2023)। উত্তর ২৪ পরগনার টাকিতে প্রতিমা বিসর্জনকে কেন্দ্র করে উৎসবের মেজাজ।এপারে বসিরহাটের টাকি, ওপারে বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলা। মাঝখানে বয়ে চলেছে ইছামতী। দশমীর সকালে ইছামতীতে শুরু হয় দুই বাংলার প্রতিমা বিসর্জন। টাকি রাজবাড়ি ঘাটে প্রতিমা নিরঞ্জন ( Durga Idol Immersion) হয়।
বেজে গিয়েছে বিসর্জনের বাজনা
আজ বিচ্ছেদের দশমী। বেজে গিয়েছে বিসর্জনের বাজনা। ছেলেমেয়ে নিয়ে বাপের বাড়ি থেকে কৈলাসে পাড়ি দেবেন উমা। আনন্দে উচ্ছ্বাসে মিশেছে বিষণ্ণতার সুর। সকাল থেকে মণ্ডপে মণ্ডপে দেবী-বরণের প্রস্তুতি। সকালে হবে ঘট বিসর্জন। এরপর সিঁদুরখেলা। তারপর গঙ্গার ঘাটে মা-কে বিদায় জানানোর পালা। কোলাকুলিতে হবে শুভেচ্ছা বিনিময়, মিষ্টিমুখ। হাসি মুখে মাকে বিদায় জানিয়ে আরও একটা বছরের অপেক্ষা। বিসর্জনের জন্য গঙ্গার ঘাটে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখন শুধু দু’চোখ ভরে মাকে দেখে নেওয়া আর ঢাকের তালে বলে ওঠা, আসছে বছর আবার এসো মা।
ইছামতীতে প্রতিমা বিসর্জন ঘিরে উত্তেজনা
শেষ অবধি পাওয়া খবরে, ইছামতীতে প্রতিমা বিসর্জন ঘিরে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। টাকি পুবের রাজবাড়ির মহিলাদের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি, দুর্ব্যবহারের অভিযোগ। অভিযুক্ত হাসনাবাদ থানার সেকেন্ড অফিসার তিলক সান্যাল। প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন রাজবাড়ির সদস্যরা। পরে হাসনাবাদ থানার ওসি-র হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত পুলিশ অফিসার। অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারকে ঘাটের ডিউটি থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
কড়া নিরাপত্তা বিসর্জন ঘিরে
দশমীর সকালে গঙ্গার একাধিক ঘাটে বিসর্জন চলছে। কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। জলে-স্থলে রয়েছে পুলিশের নজরদারি। প্রস্তুত রাখা হয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে। গঙ্গাবক্ষে টহল দিচ্ছে রিভার ট্রাফিক পুলিশ। প্রথমে বাড়ির ঠাকুর বিসর্জন চলছে। এরপর একে একে বারোয়ারি পুজোর প্রতিমা বিসর্জনের পালা। বাবুঘাট, জাজেস ঘাট, বাগবাজার ঘাট, আহিরীটোলা ঘাট-সহ গঙ্গার একাধিক ঘাটে চলবে বিসর্জন।
আরও পড়ুন, 'রাম, BJP-র একার নয়', পুজো প্যান্ডেলের ইস্যুতে শমীকের পাল্টা ফিরহাদ
নীলকণ্ঠ পাখিকে বেলুনে বেঁধে ওড়ানো হবে গঙ্গার ঘাটে
প্রসঙ্গত, ২৬৭ বছরের শোভাবাজার রাজবাড়ির দুর্গাপুজো। সাবেকিয়ানা আর বনেদিয়ানার মেলবন্ধনের এই পুজোর বিসর্জনের শোভাযাত্রা শুরু হয়েছে। সকালেই পুজোর পর হয়েছে দর্পণে বিসর্জন। এরপর প্রতিমাকে বরণ করে, কনকাঞ্জলি দিয়ে বিদায় জানানো হয়েছে মহামায়াকে। শোলা দিয়ে তৈরি নীলকণ্ঠ পাখিকে বেলুনে বেঁধে ওড়ানো হবে গঙ্গার ঘাটে। বাহকের কাঁধে চাপিয়ে, শোভাবাজার রাজবাড়ি থেকে শোভাযাত্রা করে বাগবাজার ঘাটে গিয়ে গঙ্গায় প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হবে।