নয়াদিল্লি: দেশের প্রধান বিচারপতির পদ থেকে অবসর নিলেন CJI সঞ্জীব খন্না। মঙ্গলবার সকালে সুপ্রিম কোর্টে সকলকে বিদায় জানালেন তিনি। এদিন উত্তরসূরি  বিচারপতি বিআর গাভাইয়ের হাতে ব্যাটন তুলে দেওয়ার পাশাপাশি, গুরুত্বপূর্ণ বার্তাও দেন CJI  খন্না। তিনি জানান, মানুষের কাছ থেকে আস্থা আদায় করা যায় না,তা অর্জন করে নিতে হয়। (CJI Sanjiv Khanna)

প্রধান বিচারপতি হিসেবে মাত্র ছ’মাসের কার্যকাল সামলেছেন CJI খন্না। কিন্তু এই কয়েক মাসেই বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ রায় দেন তিনি। এদিন সহকর্মীদের বিদায় জানাতে গিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে যান কার্যত। তিনি বলেন, “আমি ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না। বহু স্মৃতি নিয়ে যাচ্ছি। একবার আইনজীবী হয়ে গেলে, চিরকাল আইনজীবীই থেকে যেতে হয়। বিচারবিভাগের উপর মানুষের আস্থা আদায় করে নেওযা যায় না, তা অর্জন করতে হয়। বিচারবিভাগ এমন একটি শব্দবন্ধ, যা Bar এবং Bench, উভয়েরই প্রতিনিধি। Bar হল বিবেকের রক্ষক।” (Supreme Court)

বিচারপতিরা সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি থেকে উঠে আসেন। ভারতের এই বৈচিত্র্যই সিদ্ধান্ত গ্রহণের পথ প্রশস্ত করে বলেও মন্তব্য করেন CJI খন্না। উত্তরসূরি, বিচারপতি বিআর গাভাইকে নিয়ে বলেন, “উনি আমার সবচেয়ে বড় ভরসার জায়গা ছিলেন। ওঁর মধ্যে মহান বিচারপতিকে পাবেন আপনারা। উনি মৌলিক অধিকার এবং স্বাধীনতাকে রক্ষা করবেন।” আত্মীয় এইচ আর খন্না, যিনি ১৯৭১-’৭৭ পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের বিচারক ছিলেন, তাঁর সঙ্গে যদিও নিজের তুলনা করতে চাননি CJI খন্না। 

তবে এদিন CJI খন্না পরিষ্কার জানান যে, অবসরের পর কোনও সরকারি পদে অধিষ্ঠিত হবেন না তিনি। বলেন, "অবসর পরবর্তী কোনও পদ গ্রহণ করব না আমি। তবে আইন নিয়ে কিছু করতে পারি।" দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতির বাড়ি থেকে কোটি কোটি টাকা উদ্ধার এবং তার পর বিচারপতিদের সম্পত্তির খতিয়ান তুলে ধরার রীতি শুরু হয়েছে CJI খন্নার হাত ধরেই। তিনি বলেন, "বৈচারিক ভাবনা অবশ্যই নির্ণায়ক হতে হবে। সুবিধা-অসুবিধা দেখে, যুক্তিসঙ্গত ভাবে সমাধানসূত্র বের করি আমরা। আপনি ঠিক ছিলেন না ভুল, তা ভবিষ্যৎই বলে দেবে।"

২০০৫ সালে প্রথম বার দিল্লি হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি নিযুক্ত হন CJI খন্না। পরের বছর স্থায়ী বিচারপতি হন। গত ২০ বছর বিচারপতি পদেই আসীন ছিলেন তিনি। ২০১৯ সালে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি নিযুক্ত হওয়ার পর, গত বছর নভেম্বর মাসে প্রধান বিচারপতি হন। গত ছ’বছরে একাধিক ঐতিহাসিক রায়ে যুক্ত ছিলেন CJI খন্না, অনুচ্ছেদ ৩৭০ থেকে পরকীয়ার অপরাধমুক্তকরণ, নির্বাচনী বন্ড থেকে EVM-VVPAT মামলা। তাঁর জায়গায় এবার অধিষ্ঠিত হতে চলেছেন ৫২তম প্রধান বিচারপতি বিআর গাভাই।