কলকাতা: করোনাভাইরাস রুখতে লকডাউনের বিকল্প এখনও খুঁজে বার করতে পারেনি পৃথিবী। ফেসবুক প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জুকেরবার্গ লকডাউনের প্রশংসা করায় রীতিমত খাপ্পা টেসলার এলন মাস্ক। লকডাউন গণতন্ত্র বিরোধী হিসেবে দাবি করেছেন তিনি।


বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য যথেষ্ট পরিচিত মাস্ক টেসলা ইনকর্পোরেটেড নিয়ে বলতে গিয়ে বলেন, লোকে বাড়ি থেকে বার হতে পারবে না বলা ফ্যাসিবাদের সামিল। তাঁর মতে, না এটা গণতন্ত্র, না স্বাধীনতা। মানুষকে তাদের স্বাধীনভাবে বাঁচার অধিকারটুকু তো ফিরিয়ে দেওয়া হোক।  উল্টোদিকে জুকেরবার্গও চিন্তিত লকডাউনের জেরে বিশ্বের আর্থিক কর্মকাণ্ড বন্ধ হয়ে যাওয়া নিয়ে। তাঁর আশঙ্কা, মানুষ যা ভাবছে, আর্থিক সঙ্কট তার থেকে আরও বেশি দিন স্থায়ী হবে।  কিন্তু তা বলে লকডাউন এখনই শিথিল করার পক্ষপাতী নন তিনি। তাঁর বক্তব্য, সংক্রমণ কমার আগেই যেভাবে কিছু কিছু জায়গা ফের খুলে দেওয়া হচ্ছে তাতে নিশ্চিত, যে অসুখ ফের ছড়িয়ে পড়বে। স্বাস্থ্য ও অর্থনীতি- দুই-ই আরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে এতে।

ফেসবুক আর টেসলা- দুই সংস্থাই গড়ে উঠেছে সান ফ্রান্সিসকো বে এলাকায়। টেসলা তৈরি করে ইলেকট্রনিক গাড়ি আর ফেসবুক সোশ্যাল মিডিয়ায় এক নম্বর। বে এরিয়া লকডাউনের সময় ক্যালিফোর্নিয়া প্রশাসন তাদের কারখানা বন্ধের চেষ্টা করলে টেসলা কর্তৃপক্ষ প্রাথমিকভাবে বাধা দেয়। শেষমেষ ১৯ মার্চ রাজি হয় উৎপাদন বন্ধ রাখতে।  তা সত্ত্বেও টানা লাভের মুখ দেখেছে তারা। লকডাউনে স্বাভাবিকভাবেই চাহিদা বেড়েছে ফেসবুকের। যদিও বিজ্ঞাপন থেকে আসা আয় কমেছে।

করোনায় সারা বিশ্বে মৃত্যুর হার সর্বাধিক আমেরিকায়। কিন্তু মাস্কের এখনও বক্তব্য, লকডাউন বাড়ানো মানে মানুষকে জোর করে তাদের বাড়িতে বন্দি করে রাখা। এটা তাদের সাংবিধানিক অধিকারের পরিপন্থী। এভাবে স্বাধীনতা খর্ব করা ভয়ঙ্কর ভুল ব্যাপার, এ জন্য লোকে আমেরিকায় এসে এই দেশ গড়ে তোলেনি। এর ফলে শুধু টেসলার নয়, যে কোনও কোম্পানির ক্ষতি হবে। টেসলা তো ক্ষতি সামলে উঠবে, ডুবে যাবে ছোট সংস্থাগুলি। তিনি বলেছেন।

জুকেরবার্গ-মাস্কের মতানৈক্য নতুন কিছু নয়। ২০১৭-য় দুজনের মধ্যে প্রকাশ্যেই ঝগড়া হয় রোবটের বুদ্ধিমত্তা নিয়ে। রোবটের কখনও এমন বুদ্ধি হবে কিনা যাতে তারা তাদের সৃষ্টিকর্তা মানুষকেই শেষ করে দিতে পারে- এ নিয়ে একমত হননি তাঁরা। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্স নিয়ে মাস্কের উদ্বেগে কান দেননি জুকেরবার্গ। তাই মাস্ক বলেছিলেন, এ ব্যাপারে জুকেরবার্গ বিশেষ বোঝেসোঝে না।