বসই: স্কুলে ঢুকতে দেরি হওয়ায় ১০০ বার ওঠবোস করানো হয়েছিল। ছোট্ট শরীর সেই ‘চরম শাস্তি’ সহ্য করতে পারেনি বলে অভিযোগ। মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ল ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। আর সেই নিয়ে জোর তরজা শুরু হয়েছে মহারাষ্ট্রে। স্কুলে ঢুকতে দেরি হওয়ার মতো লঘু ‘অপরাধে’ কেন গুরু শাস্তি দেওয়া হল একরত্তি মেয়েকে, উঠছে প্রশ্ন। (School Punishment)

Continues below advertisement

মহারাষ্ট্রের পালঘর জেলার অন্তর্গত বসই থেকে এই ঘটনা সামনে এসেছে। সেখানকার শ্রী হনুমন্ত বিদ্যা মন্দির হাই স্কুলে, ষষ্ঠ শ্রেণিতে পাঠরত ছিল ১২ বছরের অংশিকা গৌড়। গত ৮ নভেম্বর স্কুলে ঢুকতে দেরি হয় তার। নির্ধারিত সময়ের চেয়ে ১০ মিনিট দেরিতে পৌঁছয়। কোনও রকমে ১০০ বার ওঠবোস করলেও, এর পরই অংশিকা অসুস্থ হয়ে পড়ে, কোমরের নীচ থেকে অসহ্য যন্ত্রণা শুরু হয় বলে জানা গিয়েছে। (School Abuse Case)

অংশিকার পরিবার জানিয়েছে, ওই দিন স্কুল থেকে ফেরার পর অবস্থার অবনতি হয়। নালাসোপারার একটি হাসপাতালে ভর্তি করতে হয় তাকে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে স্বাস্থ্যের উন্নতি হওয়ার পরিবর্তে, আরও অবনতি ঘটে। মুম্বইয়ের জেজে হাসাপতালে স্থানান্তরিত করা হয় তাকে। কিন্তু চিকিৎসাধীন থাকাকালীন, শুক্রবার রাতে সেখানে মৃত্যু হয় মেয়েটির। ঘটনাচক্রে, শুক্রবার ছিল শিশুদিবস। 

Continues below advertisement

মেয়ের এমন পরিণতির জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষকেই দুষছে অংশিকার পরিবার। তাদের দাবি, বইয়ের ভারী ব্যাগ পিঠে নিয়েই অংশিকাকে ওঠবোস করান স্কুলের এক শিক্ষিকা। এর পরই স্বাস্থ্যের অবনতি হয় তার। শেষ পর্যন্ত মৃত্যু হয়। গোটা ঘটনায় স্কুলের অন্য অভিভাবকরাও স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। ওই স্কুল এবং যে শিক্ষিকা ওঠবোস করিয়েছেন, তাঁর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের দাবি উঠছে।

বিষয়টি সামনে আসতেই নড়েচড়ে বসেছে স্থানীয় প্রশাসন। মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা জানিয়েছে, অংশিকা এবং আরও চার পড়ুয়াকে ১০০ বার ওঠবোস করানো হয়।  দলের নেতা সচিন মোরে জানিয়েছেন, অংশিকা আগে থেকেই অসুস্থ ছিল। তার পরও ওঠবোস করানো হয় তাকে। যদিও স্কুলের এক শিক্ষিকা দাবি করে, আসলে কতবার ওঠবোস করেছিল অংশিকা, তা কেউ জানে না। তার মৃত্যুর নেপথ্যে অন্য কারণ থাকতে পারে বলে দাবি তাঁর। যদিও অংশিকার মা জানিয়েছেন, ‘অমানবিক শাস্তির’ দরুণই মারা গিয়েছে তাঁর মেয়ে। অংশিকার মায়ের দাবি, গোটা ঘটনা জানতে পেরে স্কুলের ওই শিক্ষিকার মুখোমুখি হন তিনি। কিন্তু তাঁকে বলা হয়, দেরি করে স্কুলের ঢোকার জন্য প্রত্যেককেই শাস্তি দেওয়া হয়। ব্লক এডুকেশন অফিসার পাণ্ডুরং গালাঞ্জে জানিয়েছেন, এই ঘটনায় তদন্ত শুরু হয়েছে। এখনও পর্যন্ত এফআইআর দায়ের হয়নি।