কলকাতা: রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের লেখা দুটি চিঠির জবাবে এবার ১৩ পাতার চিঠি লিখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যপাল তাঁর চিঠিতে ২০টি অভিযোগ করেন, তার জবাব দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, সরকারের কাজে সহমত না হলে সাংবিধানিক নীতি মেনে তা আমাকে জানান, কেন সব কিছু প্রকাশ্যে আনছেন? রাজ্যের নির্বাচিত প্রধানের প্রতি তিনি যে ভাষা ব্যবহার করছেন তা অপমানজনক, নজিরবিহীন বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। জবাবে ফের টুইট করেছেন রাজ্যপাল। লিখেছেন, চিঠির জবাব দেবেন তিনি।


মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, স্বাধীন ভারতের কোনও রাজ্যপাল মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে এমন অপমানজনক ভাষা ব্যবহার করেননি। দেশের সাংবিধানিক ও রাজনৈতিক ইতিহাসে এমন আচরণ নজিরবিহীন। সুপ্রিম কোর্টের বিভিন্ন রায় উল্লেখ করে, রাজ্যপালের সীমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, রাজ্যপালের পদে বসার পর থেকে আপত্তিকর শব্দ প্রয়োগ করে চলেছেন। নিয়মিত নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে সরকার তৈরি হয়, সরকারের কাজে সহমত না হলে আমাকে জানান সাংবিধানিক নীতি মেনে, কেন তা প্রকাশ্যে আনছেন। পছন্দ না হলেও সরকারের সিদ্ধান্ত মানতে আপনি বাধ্য, সেটাই সাংবিধানিক নীতি। তা না হলে আপনাকে আমার চেয়ারে বসতে হবে।

জবাবে রাজ্যপাল ফের টুইট করে বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রীর বয়ানে কোনও সারবত্তা নেই, তবে রাজ্য সরকারের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করার যে অনুরোধ তিনি করেছেন, তা প্রশংসনীয়। মাথার ওপর ছাদ ভেঙে পড়ার পরিস্থিতি, আমি প্রথম থেকে এক সঙ্গে কাজ করার কথা বলে আসছি। আশা করি, তিনি তা শুনবেন। চিঠির জবাব দেওয়া হবে বলেও তিনি জানিয়েছেন।


আজ সকালে করোনা সংক্রান্ত তথ্য গোপনের অভিযোগ তুলে ফের রাজ্য সরকারকে খোঁচা  দেন রাজ্যপাল। টুইটারে ধনকড় লেখেন, করোনা সংক্রান্ত তথ্য গোপন করা বন্ধ করুন। স্বচ্ছতা বজায় রাখুন। ৩০ এপ্রিলের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বুলেটিনে বলা হল, রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ৫৭২। ১ মে কোনও বুলেটিন প্রকাশ করা হল না!! আবার কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পাঠানো তথ্য অনুযায়ী, সংখ্যাটা ৯৩১। যদি কারও মৃত্যু হয় বা কেউ সুস্থ হয়ে ওঠেন, তাহলেও ৫৭২ আর ৯৩১, এই দুটো সংখ্যা কখনই মেলার নয়। সাধারণ মানুষ অবর্ণনীয় যন্ত্রণার মধ্যে রয়েছেন, এই অবস্থায় সমন্বয়ের অভাব ভয়ঙ্কর। রাজনৈতিক দলগুলো শকুনের মতো মৃতদেহের অপেক্ষায় রয়েছে, এই মন্তব্য প্রত্যাহার করুন। সকলকে একজোট করে কাজ করুন।